প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
হাজীগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহত ৭
হাজীগঞ্জে দ্রুতগতির মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ইমাম হোসেন (৩০) ও পানিতে ডুবে ইফফা (২) নামের এক শিশু মারা গেছে। মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় অপর ৬ জন মারাত্মক আহত হয়েছে। আহত সবাইকে কুমিল্লা পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল দুটিকে পুলিশ জব্দ করেছে। দুর্ঘটনাটি ঘটে রোববার বিকেলে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের বলাখাল বকাউল বাড়ির সামনে। মোটর সাইকেল চালক নিহত ইমাম হোসেন শাহরাস্তি উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের বলশিদ আবুল হাশেমের ছেলে ও ইফফা হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের মজুমদার বাড়ির ইমাম হোসেনের মেয়ে।
|আরো খবর
মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতরা হলেন শাহরাস্তি উপজেলার বলশিদ গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে মোঃ ইউনুস হোসেন (২৩) ও একই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে মোঃ রাছেল হোসেন (৩৫) এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলার শোল্লা গ্রামের বশির উল্যাহর ছেলে মোঃ মাকসুদ হোসেন (২৬)। অপর গুরুতর আহতরা হচ্ছেন হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের সহিদ উল্যাহর ছেলে ইমরান শাহ (২১) ও একই গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে নজরুল ইসলাম (২১) এবং পথচারী হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন বলাখাল গ্রামের শামসুল হকের ছেলে আবু তাহের (৬৫)। আহতদের সবাইকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে বলাখাল গ্রামের বকাউল বাড়ির বৃদ্ধ আবু তাহের বলাখাল চৌধুরী বাড়ি অভিমুখী সড়কে যেতে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অন্যমনস্ক হয়ে পার হচ্ছিলেন। এ সময় হাজীগঞ্জগামী একটি মোটরসাইকেল তাকে বাঁচাতে গিয়ে হার্ডব্রেক করে। এতে গাড়ির চালক পথচারীকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে মারাত্মক আহত হন। এ সময় দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলের পিছনে থাকা দ্রুতগতির আরেকটি মোটরসাইকেল সামনে এসে হার্ডব্রেক করলে এটিও সড়কের উপর ছিটকে পড়ে। এতে করে পথচারী মিলিয়ে দুই মোটর সাইকেলের ৬ আরোহীসহ মোট ৭ জন মারাত্মক আহত হন। আহত সবাইকে তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে ইমাম হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাকিদের অবস্থা গুরুতর বিধায় সবাইকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দুঘর্ঘটনার পর পর বলাখাল এলাকায় সড়কে বেশ কিছু যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং সড়ক থেকে দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল দুটি সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। এরপর নিহত ব্যক্তি, মোটরসাইকেল দুটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে খবর পেয়ে নিহত ইমাম হোসেন এবং আহতের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ সময় তাদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। নিহত ইমাম হোসেনের চাচা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার ভাতিজার ৩ বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। এছাড়াও তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা। অপর দিকে গুরুতর আহত মোঃ রাছেল মৃত্যু শয্যায়। তার বাবা জানান, তার দুই বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।
অপরদিকে একই দিন বিকেলে হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের মজুমদার বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে ইফফা মারা যায়। সে ওই বাড়ির মোঃ ইমাম হোসেনের একমাত্র মেয়ে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এদিন বিকেলে ইফফা নিজ ঘরেই খেলাধুলা করছিল। কিছুক্ষণ পর তাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খুঁজতে বের হন। পরে তাকে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখে পরিবারের লোকজন দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এসএম শোয়েব আহমেদ চিশতী জানান, দুর্ঘটনায় নিহত মোঃ ইমাম হোসনে ও পানিতে ডুবে নিহত ইফফাকে আমরা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। এছাড়াও দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ৬জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানান, খবর পেয়ে দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল দুটি জব্দ এবং নিহত মোটরসাইকেল আরোহী ইমাম হোসেন ও পানিতে ডুবে নিহত ইফফার মরদেহ থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।