বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুরে তিন জেলার সিএনজি অটোরিকশা চলছে অবৈধভাবে

চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥
চাঁদপুরে তিন জেলার সিএনজি অটোরিকশা চলছে অবৈধভাবে

প্রথম দিকে শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ির মতো ব্যবহার হতো সিএনজি অটোরিকশা। এরপর শহরে অতিমাত্রায় সিএনজি অটোরিকশা বেড়ে যাওয়ায় শহর ছাড়িয়ে গ্রামীণ জনপদের প্রত্যন্ত এলাকাতেও জনপ্রিয় হতে লাগলো এই তিন চাকার যানটি। সময় বাঁচাতে অল্প দিনেই বাস আর রিকশাকে হার মানিয়ে দিলো সিএনজিচালিত অটোরিকশা। মফস্বলেও বাড়তে শুরু হলো সিএনজি। বাসের জন্যে বসে না থেকে সিএনজি ভাড়া করে পথচলা শুরু হলো মহাসড়কে।

দেশের বিভিন্ন সড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কের মতো চাঁদপুর, মতলব, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তিসহ অন্যান্য সড়কেও ব্যতিক্রম হয়নি সিএনজি অটোরিকশার দাপুটে চলাচলের।

চাঁদপুরে সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া কী পরিমাণ রয়েছে এর কোনো সঠিক তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিত বহু অটোরিকশা চাঁদপুর জেলার কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় অহরহ চলছে। যার ফলে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক সময় অবৈধ অটোরিকশা করে নানা অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত হচ্ছে।

অনুসন্ধানে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলায় অনেক সময় চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব কাজে জেলার বাইরের অটোরিকশা ব্যবহার হয়। এছাড়া শাহরাস্তির কালিয়াপাড়া ও দোয়াভাঙ্গা এলাকায় বাইরের জেলার বহু সংখ্যক অটোরিকশা যাত্রী পরিবহন করছে। অবৈধ ও বাইরের জেলার অটোরিকশা চলাচল করার সুযোগ করে দিচ্ছে শাহরাস্তির আবুল নামে শ্রমিক নেতা। তিনি এর বিনিময়ে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা উঠানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

কালিয়াপাড়ার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন জানান, কালিয়াপাড়া থেকে কচুয়া পর্যন্ত তিনি অটোরিকশা চালান। তার অটোরিকশা কুমিল্লা জেলায় নিবন্ধিত। এর জন্যে তাকে মাসিক দিতে হয় এবং প্রতিদিন পৌরসভাকে টোল দিতে হয় ৪০ টাকা।

দোয়াভাঙ্গা ও কালিয়াপাড়া থেকে অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহণ করেন চালক রবিউল। তিনি বলেন, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিত বহু গাড়ি চলে। তাদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কিছুই বলে না।

দোয়াভাঙ্গার একাধিক অটোরিকশা চালক জানান, যখন চাঁদপুরে নিবন্ধন বন্ধ ছিল তখন অনেকেই কুমিল্লা থেকে অটোরিকশার নিবন্ধন নিয়েছেন। ওইসব অটোরিকশা এখানে চলে।

অটোরিকশার শ্রমিক নেতা আবুল মুঠোফোনে বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চললে ক্ষতি কী? বড় গাড়িই চলে। সেগুলোর বিষয়ে কেউ কথা বলে না। অন্য জেলার গাড়ি চাঁদপুরে চলে কেন এটার উত্তর দিবে পুলিশ সুপার। পৌরসভাগুলোতে কমপক্ষে ৩০ হাজার অটোরিকশা চলে। সেখানে টাকা উত্তোলন হলেও মেয়রদের সাথে কেউ কথা বলে না। অবৈধ যানবাহন থেকে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা উঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ১০ লাখ না ১০ কোটি টাকা উঠালে আপনার সমস্যা কী?

বিআরটিএ চাঁদপুরের মোটরযান পরিদর্শক মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, এসব বিষয়ে সংবাদ করে কী লাভ হবে? সংবাদ করে বিরক্ত হবেন। কারণ সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া ভাল চলে। সব জেলায় যেতে পারে। এক সময় নিবন্ধনের জন্যে আমাদের কাছে তারা এসেছে। নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর তারা আসে না।

বিআরটিএ চাঁদপুর জেলার সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চাঁদপুর জেলায় শুরু থেকে নিবন্ধন হওয়া অটোরিকশার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ১০১টি। পরে পুনরায় নিবন্ধন হওয়ার পর সর্বশেষ নিবন্ধন সংখ্যা হচ্ছে ৮হাজার ২২৭। অবৈধ অটোরিকশা কী পরিমাণ তার সঠিক তথ্য নেই। তবে কয়েক হাজার হবে। আর সীমান্তবর্তী উপজেলায় মাঝে মাঝে প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। এটি অব্যাহত আছে।

শাহরাস্তির টিআই কামরুল হাসান বলেন, সীমান্ত উপজেলায় আমি একা দায়িত্ব পালন করছি। অন্য জেলার গাড়ি অনেক সময় রোগী নিয়ে মতলব ডায়রিয়া হাসপাতালে যায়। এছাড়া যাত্রী পরিবহণ করে--তাও সঠিক। এসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিতে হলে কচুয়া ও শাহরাস্তি থানায় যেতে হয়।

অন্য জেলার অটোরিকশা চাঁদপুরের কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় যাত্রী পরিবহণ করে। বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে জানানো হয়। তিনি বলেন, ট্রাফিকে আমাদের লোকবল কম। এরপর যে পরিমাণ আছে তারা শহরকেন্দ্রিক দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শহরেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আপাতত উপজেলাগুলোতে লোকবল দেয়া কিংবা কাজ করা যাচ্ছে না। ট্রাফিকে লোকবল বাড়লে তখন কাজ করতে পারবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়