প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে মারাত্মক জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে ১ হাজার ১শ’ ১৯ হেক্টর ফসলী জমি। কদিনের অব্যাহত প্রবল বর্ষণে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ফসলি জমিতে আউশ ধান ২ হাজার ৬শ’ ৩৫ হেক্টর, বোনা আমন ৪শ’ ৮০ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ২শ’ ৮০ হেক্টর, রোপা আমন ২ হাজার ৫০ হেক্টর, সবজি ৪শ’ হেক্টর ও অন্যান্য ১০ হেক্টর। জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলি জমি হচ্ছে আউশ ধান ৩শ’ ৯০ হেক্টর, বোনা আমন ২শ’ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১শ’ ১০ হেক্টর, রোপা আমন ৩শ’ ১৬ হেক্টর, সবজি ১শ’ হেক্টর ও অন্যান্য ৩ হেক্টর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মোঃ জালাল উদ্দিন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সরেজমিনে দেখেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলি জমি পরিমাণ যা ধরা হয়েছে বাস্তবে পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পাবে। ময়লা-আবর্জনায় ও জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না। যার কারণে এ মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, বাড়ি, রাস্তা ও মৎস্য খামার।
কৃষকরা জানান, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পর থেকে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ বিষয় নিয়ে প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পত্রিকা ও চ্যানেলগুলোতে নিউজ প্রকাশিত হলেও পাউবো কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রতি বছর সেচ প্রকল্পের ভেতর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন বলেন, জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। আমরা বিভিন্নভাবে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছি। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পানি নিষ্কাশন করা হলে নির্ণয় করা যাবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা না নিলে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে সেচ প্রকল্পের ভেতরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। ফসলি জমি, মৎস্য খামার, রাস্তা, বাড়ি তলিয়ে আছে। নিষ্কাশন খালগুলোতে বিভিন্ন স্থান দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও সংস্কার না করায় বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না।
তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধতায় কৃষকরা সব চেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাদের আবাদী ফসল এখন পানির নিচে। জলাবদ্ধতা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে হবে। এজন্যে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে দ্রুত জলাবদ্ধতা দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে খালগুলোর তালিকা তৈরি করে সেগুলো দখলমুক্ত করার বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলেছি। পাউবোর কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশন খালগুলো দখল মুক্ত ও সংস্কারের যাতে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন । বর্তমানে পাম্পের মাধ্যমে পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন।