সারাদেশে কঠোর লকডাউনের কারণে ২২ দিন বন্ধ থাকার পর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী লঞ্চ, বাস ও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথমদিনেই ঢাকা-চট্টগ্রামগামী গণপরিবহনে যাত্রী সাধারণের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

গতকাল ১৫ জুলাই ভোরে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ভোর হওয়ার আগেই ঘাটে ঢাকা যাবার জন্যে যাত্রীস্রোতে। এমভি রফরফ-৭ ভোর ৬টায় চাঁদপুর ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে যাবার কথা থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের ভিড় সামাল দিতে লঞ্চটি নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে অর্থাৎ ৫টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। সরজমিনে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এরপর সিডিউল অনুযায়ী দিনের অন্যান্য লঞ্চ চলাচল করেছে এবং ঢাকা থেকেও লঞ্চ চাঁদপুর ঘাটে পৌঁছায়।

দীর্ঘদিন পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা দেয়ায় চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের মাঝে এবং নৌশ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। লঞ্চঘাটে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের দাপট শুরু হয়ে গেছে। দোকানপাট, মার্কেট, বিপণীবিতান খুলেছে। রাস্তায় মানুষের অবাধে চলাচলও বেড়ে গেছে।

চাঁদপুর পৌর বাসস্ট্যান্ড সূত্রে জানা গেছে, সূর্য উঠার আগেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর রূটের সারি সারি বাস টার্মিনাল ও আশপাশের রাস্তায় অবস্থান নেয়। যাত্রী নিয়ে গাড়িগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ঠেকাতে এর আগেও প্রায় দেড় মাস সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও লঞ্চ, বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিলো।

এদিকে চাঁদপুর রেলওয়ে বড়স্টেশন মাস্টার সোয়াইবুল শিকদার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার সময় প্রথমে সাগরিকা ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসে এবং দুপুর আড়াইটায় এখান থেকে ছেড়ে যায়। অপরদিকে মেঘনা ট্রেন চট্টগ্রাম হতে বিকেলে ছেড়ে আসে এবং আজ শুক্রবার ভোর পাঁচটায় চাঁদপুর থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাবে। এরপর যথারীতি সিডিউল অনুযায়ী এ দুটি ট্রেন চলাচল করবে।

চাঁদপুর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মোঃ জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, লকডাউনের সময় যেসব গাড়ি জব্দ করা হয়েছিলো লকডাউন শিথিল ঘোষণায় আমরা সেই গাড়িগুলো ছেড়ে দিয়েছি। চাঁদপুর স্টেডিয়াম থেকে বুধবার রাতে জব্দকৃত গাড়িগুলো চালক ও মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সবদিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লকডাউন শিথিল করায় চাঁদপুর শহর, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশনের সেই পুরানো চেহারা ফুটে উঠেছে। এখন দেখার অপেক্ষা করোনার এই মহামারিতে কতটুক স্বাস্থ্যবিধি নানা হবে। পরিস্থিতি কি আরও অবনতির দিকে যাবে এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।