প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
কঠোর অবস্থানে ছিলো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ॥ আটক ১০
চাঁদপুরে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ২০
তরপুরচণ্ডীতে অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ
গতকাল ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়নি। বাকী ৭টিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হলেও কোথাও চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কোনো ধরনের গোলযোগ বা ঝামেলা হয়নি।
|আরো খবর
সংঘর্ষ, গোলোযোগ, বিশৃঙ্খলা যা করেছে মেম্বার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা করেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৭নং তরপুরচণ্ডী ইউনিয়ন, ২নং আশিকাটি ইউনিয়ন, ৫নং রামপুর ইউনিয়ন ও বালিয়া ইউনিয়নে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
৭নং তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের দু’টি কেন্দ্রে অর্থাৎ ২টি ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হঠাৎ করেই এই বিশৃঙ্খলায় মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। এতে ৪ মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে ঘটনার সাথে সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর ভূমিকার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। যেখানেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির খবর পেয়েছে সেখানেই তাৎক্ষণিক আর্মড পুলিশ, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেটগণ ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের ৯নং ও ৫নং ওয়ার্ডের ফুটবল প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী মোস্তফা মাল এবং তালা প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী মোরশেদ আলম কবিরের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে হট্টগোল সৃষ্টি হয়ে মহড়া শুরু হয়। এ সময় ভোটাররা ছোটাছুটি করতে গিয়ে অনেক ভোটার কম-বেশি আহত হয়। তবে মেম্বার প্রার্থী মোস্তফা মালের কর্মীদের অভিযোগ, তালা প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী মোরশেদ আলম কবিরের কর্মীরা তাদেরকে মারধর করে ভোটারদের ভোট দিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেলা সাড়ে ১১টায় একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ ৬৫নং তরপুরচণ্ডী সরকারি (বাঁশিস্কুল) প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোরগ প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী মজিবুর রহমান গাজীর লোকজন হঠাৎ করেই বিভিন্ন লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে ফুটবল প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মারুফুর রহমান সাইমুনের কর্মী-সমর্থকরা তাদেরকে উল্টো ধাওয়া দেয়। এ সময় বেশ ক’টি ককটেল বিস্ফোরিত হলে উল্লেখিত ২ মেম্বার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন কমবেশি আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একই সাথে ভাংচুর করা হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর্মড পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এ সময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনে উপস্থিত ভোটাররা ভোট না দিয়েই কেন্দ্র ত্যাগ করে। তবে সরজমিনে দেখা গেছে, ওই ইউনিয়নের যে সকল কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে তাৎক্ষণিক প্রশাসনের লোকজন ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে।
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় আহতদের মধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যারা এসেছেন তারা হলেন- মেম্বার প্রার্থী মোস্তফা মাল, সিয়াম, ইবাদত খান (সকদী পাঁচগাও), শরীফ হোসেন (বালিয়া), রাকিব গাজী (কামরাঙ্গা), রাকিব মিজি (তরপুরচণ্ডী), শাহীন শেখ (বালিয়া)সহ আরো বেশ ক’জন।
এদিকে নির্বাচনী সহিংসতা ও নির্বাচনকালীন বিভিন্ন কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ১০জনকে আটক করেছে বলে একটি সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রশীদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আটকের সংখ্যাটি নির্ধারিত করে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। যেহেতু এখনো পরিপূর্ণভাবে সকল ইউনিয়নের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তাই সঙ্গত কারণেই আমি বাইরে থাকায় সঠিক তথ্য দিতে পারছি না। ১০জন আটকের বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে আটক করা হয়েছে, সংখ্যাটি কম-বেশি হতে পারে।