প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২১, ১২:০২
জেলা শিশুশ্রম পরিবীক্ষণ কমিটির সভা
সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই নতুন প্রজন্মকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নেয়া সম্ভব : জেলা প্রশাসক
গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা শিশুশ্রম পরিবীক্ষণ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। সভায় জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০ বাস্তবায়নসহ শিশুশ্রম নিরোধকল্পে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণসহ শিশুশ্রমের বাস্তব নানা দিক তুলে ধরে আলোচনা করা হয়। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, দারিদ্র্য, অসচেতনতা এবং পরিবারের পরিকল্পনাহীনতা শিশুর অধিকার নিশ্চিত করায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পুরোপুরি আইন প্রয়োগ করে আমরা শিশুশ্রমকে বন্ধ করতে পারছি না। এর জন্যে বরং প্রথমে আমাদের যেটি দরকার তা হচ্ছে সচেতন করা। সেজন্যে সকল শিশুকে তার শিক্ষা নিশ্চিত করে তাকে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সরকারও সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। শিশুদের লেখাপড়ায় তার পরিবারের যেনো আর্থিক ক্ষতি না হয়, সেজন্যে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। স্কুল ড্রেসসহ নানা সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
|আরো খবর
জেলা প্রশাসক বলেন, এখন আর সেই সামন্তবাদী বা জমিদারি প্রথা নেই। আমাদের সমাজ বা রাষ্ট্রের মানুষ শিশু বা যে কোনো মানুষের শ্রমকে তাচ্ছিল্যে দেখে তাকে ঠকানো হয়। দিন বদলেছে এবং আরও বদলাবে। এখন অনেক শিশুই তার শ্রম না বিকিয়ে বিদ্যালয়গামী হচ্ছে। শিশুকে সঠিকভাবে লালনপালন করলে, শিক্ষা দিলে তার শ্রম বিকানো থেকে রক্ষা পাবেই।
জেলা প্রশাসক বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমাদের নতুন প্রজন্মকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। তিনি এই কমিটিতে চাঁদপুরে শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা বা তালিকা না থাকায় সংশ্লিষ্ট শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তার উদ্দেশ্য বলেন, এটি খুব বেশি প্রয়োজন ছিলো আজ। তা নিয়ে আলোচনা করতে পারতাম, একটা চিত্র আমরা দেখতাম। তাই আগামী মিটিংগুলোতে এ ধরনের তালিকা উপস্থাপনের জন্যে তিনি নির্দেশ দেন।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। তাকে ঘিরেই আগামীর স্বপ্ন। অতএব, তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং সে লক্ষ্যে আমাদের সরকার সবসময়ই কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, শিশুকে কাজে না লাগানোয় নিরুৎসাহিত করতে হবে। সেজন্যে পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, এ সভায় শ্রমিক সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, চাঁদপুরে শিশু অধিদপ্তরের যে কার্যালয় রয়েছে, শিশুশ্রম রোধে তাদের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। তারা শিশু শ্রমিকদের উপর কোনো নজর রাখছে বলে মনে হয় না। এ ব্যাপারে তারা মিডিয়াতেও কোনো তথ্য প্রচার করে না। ফলে চাঁদপুর একটি বন্দর বা ব্যবসা কেন্দ্র হয়েও নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করা শ্রমিকদের সংখ্যা বা তাদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র মিডিয়ায় তুলে আনা যায় না। তিনি জেলা প্রশাসককে এ ব্যাপারে তাদের সজাগ করার অনুরোধ জানান।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, এটাই জেলা পর্যায়ে প্রথম সভা। তবে এখন এ সভা নিয়মিত হবে। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক রজত শুভ্র, জেলা তথ্য অফিসার, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা কাউছার আহমেদ, শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হযরত আলী, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনির আহমেদ, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি প্রমুখ।