প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৭
পুরাণবাজারবাসী ফয়েজ আহমদ মন্টুকে অবশ্যই মনে করবে
চাঁদপুর শহরে প্রগতিশীল মনের একজন মানুষ, অনেকেরই পরিচিতজন, পুরাণবাজারের ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ফয়েজ আহমদ মন্টু আর বেঁচে নেই। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর ২০২৪) মাগরিব নামাজের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হবার পর চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি, ভাই-বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাক্সক্ষী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবরে সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি ছিলেন পুরাণবাজার ডাকঘরের প্রাক্তন পোস্ট মাস্টার মরহুম মিছির আলী ভূঁইয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান।
ফয়েজ আহমদ মন্টুর মৃত্যুতে চাঁদপুর লেখক পরিষদ ও জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তাৎক্ষণিক শোক বার্তা দিয়েছে। তাতে ফয়েজ আহমদ মন্টুকে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার একুশ উদযাপন পরিষদের সভাপতি, নদী ভাঙ্গন সংগ্রাম কমিটির নেতা, সমাজসেবক ও সংগঠক হিসেবে আখ্যায়িত করে চাঁদপুর লেখক পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র মজুমদার এবং জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদ রানা গভীর শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ফয়েজ আহমদ মন্টু ছিলেন একজন সমাজহিতৈষী। মেঘনার ভাঙ্গন থেকে চাঁদপুর-হাইমচর রক্ষার জন্যে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। পুরাণবাজারের ব্যবসায়ীদের জন্যে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে পন্টুন নির্মাণ সংগ্রামের ছিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা। তিনি পুরাণবাজারের ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এবং পুরাণবাজারের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড উজ্জীবিত করতে বিভিন্ন সময় ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। পুরাণবাজারের শহিদ মিনার নির্মাণের আন্দোলনও গড়ে তোলেন তিনি। নেতৃবৃন্দ বলেন, ফয়েজ আহমদ মন্টুর মৃত্যুতে চাঁদপুরবাসী একজন প্রগতিশীল এবং নিবেদিতপ্রাণ মানুষ হারালো। তাঁর মৃত্যুতে চাঁদপুরবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো।
আমরা চাঁদপুর লেখক পরিষদ ও জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দের অভিব্যক্তির সাথে একমত পোষণ করছি। আমাদের জানা মতে, ফয়েজ আহমদ মন্টু পুরাণবাজারের অনেক পুরানো বাসিন্দা নন। নদী ভাঙ্গনের কারণে বাড়ি স্থানান্তর এবং পিতার সরকারি চাকুরির সুবাদে তিনি ও তাঁর অন্য ভাইয়েরা পুরাণবাজার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান এবং সেখানেই পেশাগত জীবন পরিচালনা করেন। তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পুরাণবাজার-অন্তঃপ্রাণ মানুষ হিসেবে নিজেকে পুরোপুরি তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে তাঁর কোনো খাদ খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারেন, কিন্তু কোনো দলের নেতা-কর্মী ছিলেন না। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ভাবমূর্তি নিয়ে তিনি পুরাণবাজারবাসীর কাছে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। তিনি পড়ুয়া ও বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক জানাশোনা একজন মানুষ ছিলেন। সাধারণভাবে চলাফেরা করলেও তাঁকে নিভৃতচারী অসাধারণ মানুষ বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। তাঁর কথা পুরো চাঁদপুরবাসী হয়তো মনে করবে না, তবে পুরাণবাজারবাসী অবশ্যই মনে করবে তাদের মুখপাত্র হিসেবে শক্তিশালী ও নিরাপোষ ভূমিকা পালন করার জন্যে। আমরা তাঁর মৃত্যুতে চাঁদপুর কণ্ঠের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি, তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।