প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবীর
খুব শীঘ্রই চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ চালু হচ্ছে
গতকাল ১৬ আগস্ট সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মোঃ হাসান শাহরিয়ার কবীর আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। প্রথমে তিনি চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে স্বল্পসময় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহসহ ক’জন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করেন। এরপর তিনি হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। এ সময় হাসপাতালের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ হাবিব-উল-করীম, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাহমুদুন নবী মাসুম এবং হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেলসহ অন্য ডাক্তাররা তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর তিনি লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট ও জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। পরে তিনি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও চিকিৎসকদের সাথে মহামারি করোনা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে সভা করেন। সবশেষে তিনি চাঁদপুর সফর বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
|আরো খবর
এ সময় তিনি বলেন, আমি চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে চিকিৎসাসেবার বিষয়ে অনেক সন্তুষ্ট। এখানকার কর্মরত চিকিৎসক এবং নার্সরা রোগীদের নিয়মিত ভালো চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে লোকবল সঙ্কট এবং চিকিৎসাসেবার বিভিন্ন মেশিনপত্র না থাকাতে তারা চাহিদামতো পরিপূর্ণ সেবা দিতে পারছেন না। পাশাপাশি এ হাসপাতালটিতে গত কয়েক বছর ধরে রেডিওলজিস্ট চিকিৎসক না থাকায় আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটিও বন্ধ রয়েছে। লোকবল এবং মেশিনপত্রসহ এতো সঙ্কটের মধ্য দিয়েও সরকারি এ হাসপাতালটির চিকিৎসক এবং নার্সরা অনেক ভালো কাজ করছেন।
আইসিইউ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাঁদপুর জেলার এ হাসপাতালটিতে যদি আমরা আইসিইউ সুবিধা দিই তাহলে সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। বিরতিহীনভাবে পর্যায়ক্রমে ডিউটির জন্যে চিকিৎসক নার্স প্রয়োজন আছে। তবে এখন যে তিন বেড আছে, সে অবস্থায় চালুর জন্যে আপাতত একজন ডাক্তার, দু’জন নার্স ট্রেনিংয়ের জন্যে ঢাকা পাঠাতে হবে। পরে আরো ২টি বেডসহ একটি আইসিইউ স্থায়ীভাবে স্থাপনের ব্যবস্থা করবো। আজ আমি যেহেতু পরিদর্শন করে হাসপাতালের অনেক সঙ্কটের বিষয়ে অবগত হয়েছি, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আমি তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত জানিয়ে অচিরেই তা সমাধানের চেষ্টা করবো।
তিনি আরও বলেন, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম বর্তমানে হাসপাতারে ৪র্থ তলায় চলছে। যার কারণে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে বেড এবং কক্ষের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সেই মেডিকেল কলেজ স্থাপন করতে ব্যাপক জমির প্রয়োজন রয়েছে। জমি নির্ধারিত হলেই আশা করি খুব সহসাই চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিজস্ব ভবনে তার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাঁদপুরবাসীর চাঁদের কপাল। কারণ, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি মহোদয় জেলাবাসীর চিকিৎসাসেবার উন্নয়ন করার জন্যে প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। আমি চাঁদপুরে আসার পূর্বে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজের বিষয়ে স্থান নির্ধারণ প্রক্রিয়া চলমান। আশা করছি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এটি চূড়ান্ত হবে।
সর্বোপরি তিনি চাঁদপুরের চিকিৎসাসেবার প্রশংসা করে জেলাবাসীকে চলমান মহামারি করোনা থেকে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলার আহ্বান জানান।
উপস্থিত ছিলেন আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ হাবিব-উল-করিম, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডাঃ অলিউর রহমান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ও বিএমএ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ মোঃ নূরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাহমুদুন্নবী মাসুম, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা পলিন, হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ ঈছারুল্লাহ, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (এনেস্থেসিয়া) আবু সাদত মোঃ সায়েম, কনসালটেন্ট (অর্থ সার্জারী) ডাঃ ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ পীযূষ সাহাসহ হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকবৃন্দ।