প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
মাটি কাটার ভেক্যুর দৌরাত্ম্যে ফসলি জমির সর্বনাশ
মাটি কাটার ভেক্যুর দৌরাত্ম্যে ফসলি জমির সর্বনাশ হচ্ছে। এখন থেকে ১০-১২ বছর পূর্বেও শাহরাস্তি উপজেলার ভাসমান সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর দক্ষিণে ইরি-বোরো মৌসুমে যে পরিমাণ ধান হতো তা দিয়ে শাহরাস্তি উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র বিক্রি হতো। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে বর্ষা মৌসুমে ড্রেজার আর শুষ্ক মৌসুমে ভেক্যুর দ্বারা মাটি কাটায় ফসলি জমি প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে।
কোনো মাঠে ৩০ শতক জমিতে ভেক্যুর দ্বারা ২-৩ ফুট গর্ত করে মাটি উঠিয়ে নিলে পার্শ্ববর্তী ১২০ শতক জমি ধান চাষে হুমকির সম্মুখীন হয়। কারণ, গর্তময় জমির কারণে পার্শ্ববর্তী জমিতে সেচের পানি দেয়া যায় না। ফলে বিপদে পড়ে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকরা। ফসলি জমির সমতা আনার জন্যে তাদেরকে বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করতে হয়। ফলে শত শত হেক্টর জমি অনাবাদী হয়ে পড়ে এবং উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দেয়।
ফসলি জমির উপর প্রতিনিয়ত যে ধরনের দখল হয়, এতে করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা একটু জমিও যেনো অনাবাদী না থাকে তা আর পূরণ হচ্ছে না। ফসলি জমির ওপর ড্রেজার ও মাটি কাটার দৌরাত্ম্য কমাতে প্রশাসনের আন্তরিকতা তেমন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এভাবে ফসলি জমি প্রতিনিয়ত কমতে থাকলে কয়েক বছর পর আর ফসলি জমি থাকবে না।
শাহরাস্তি উপজেলার ছোট এলাকায় প্রায় ২০-২৫টি ব্রিক ফিল্ড রয়েছে। প্রতিটি ব্রিক ফিল্ড লক্ষ লক্ষ টন মাটি দ্বারা ইট তৈরি করছে। ব্রিক ফিল্ড বন্ধেরও সরকারি কোনো চেষ্টা নেই। ব্রিক ফিল্ডের ধোঁয়ার কারণে ফসলাদি নষ্ট হয়, গাছের ফল ঝরে পড়ে যায়। আম, জাম, কাঁঠালসহ সব ফল গাছ ফল দিতে সক্ষমতা হারাচ্ছে। তাছাড়া মাটির উপরিভাগের উর্বর অংশ কেটে নিয়ে গেলে ঐ জমিতে ফসল হয় না। যার কারণে কৃষকরা ধান চাষ করে নিজেদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়েছে।
প্রতিটি উপজেলায় কৃষি অধিদপ্তর আছে, কৃষি অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পেলে ব্রিক ফিল্ড হতে পারে না। এ ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও ভেক্যু, ড্রেজার বন্ধ করার জন্য সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা ছাড়া বিকল্প কিছু দিয়েই ফসলি জমি নষ্ট রোধ করা সম্ভব হবে না বলে বিজ্ঞ জনেরা মনে করেন।