প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫০
চাঁদপুর সদর উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন
সুখী, সমৃদ্ধ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাইলে জামায়াতে ইসলামির সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : নায়েবে আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি চাঁদপুর সদর উপজেলা শাখার বিরাট কর্মী সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর ২০২৪) চাঁদপুর শহরের পুরাতন বাসসট্যান্ডে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের নায়েবে আমীর, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া ও সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন, চাঁদপুর শহর আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান, শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সহ-সভাপতি মো. শাহ আলম প্রমুখ। সম্মেলন বিকেল ২টায় শুরু হলেও দুপুর থেকেই নেতা-কর্মীরা মিছিল ও মুহুর্মুহু স্লোগান নিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করে। চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করে। তাদের হাতে শোভা পায় জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। জামায়াতের প্রয়াত নেতাদের বাণী সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার এবং জুলাই বিপ্লব সম্বলিত ব্যানারে ছেয়ে যায় সম্মেলনের চারপাশ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, ১৭ বছর জালেম সরকারের অত্যাচারে মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলো। আওয়ামী লীগ ভেবেছিলো ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু তাদেরকে আল্লাহ অপমানিত করে দেশ থেকে বের করে দিয়েছেন। দেশে ভালো কাজ চালু করে মানুষকে শান্তি দিতে হলে, খারাপ কাজ বন্ধ করে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হলে শুধু দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলে চলবে না। বরং আল্লাহর দল তৈরি করেই এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। ঐক্যই হচ্ছে শক্তি। প্রত্যেক মুসলমান ঐক্যবদ্ধ হলেই বাংলাদেশ ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত হবে। এর জন্যে জামায়াতে ইসলামি যে কোনো ইসলামি দলের সাথে ঐক্য করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ছিলো ন্যায়ের পথের অভ্যুত্থান, কোরআন-সুন্নাহর পক্ষের অভ্যুত্থান, কোনো নাস্তিকদের অভ্যুত্থান না। ১৯৭১- এ দেশবাসী বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলো ভোটের অধিকারের জন্যে, ভাতের অধিকারের জন্যে আন্দোলন করেছিলো, কিন্তু ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে এদেশের মানুষ তাদের অধিকার বঞ্চিত হয়েছে। ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষে বহু মানুষ মারা গেছে, একজন বমি করলে আরেকজন খেয়েছে, মুজিব গণতন্ত্র ধ্বংস করে বাকশাল কায়েম করেছে। মিডিয়ার স্বাধীনতা বন্ধ করেছে। সর্বশেষ তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দিনের ভোট রাতে করেছে, একজনের ভোট আরেকজনকে দিয়েছে। নির্বাচনে শিক্ষকদের বাধ্য করে ভোটের হার ৪% কে ৪১% করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে কবর দিয়েছে। অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, ইসলাম কায়েম হলে কোনো বৈষম্য থাকবে না। ইসলাম না থাকলেই যাবতীয় বৈষম্য দেখা দিবে। আগামী দিনে যদি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চান তাহলে ইসলাম রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে হবে। এজন্যে জামায়াতে ইসলামির সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, ভালো, নিরপেক্ষ নির্বাচন চাইলে সংস্কারের জন্যে একটু অপেক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। সম্মেলনে চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে জামায়াতে ইসলামির এমপি প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়াকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। চাঁদপুর সদর উপজেলা শাখার আমির মাওলানা আফসার উদ্দিন মিয়াজীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. যুবায়ের হোসাইনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত নেতা আব্দুল হাই লাভলু, আইনজীবী ওয়ার্ড-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট মামুন মিয়াজী, চাঁদপুর জজকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের খান, চাঁদপুর শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম সবুজ, সদর উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদ, চাঁদপুর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি এস এম মিজানুর রহমান, ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি জাকারিয়া মহিউদ্দিন, জামায়াতে ইসলামি চাঁদপুর শহর সেক্রেটারি শেখ বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির চাঁদপুর জেলা সভাপতি, চাঁদপুর শহর সভাপতি ফারুক হোসাইন, চাঁদপুর সদর উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর নাছির উদ্দিন, জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য মাও. মীর হোসাইন সহ অন্যরা।