মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

রেল কি নিরাপদ স্বীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে?

রেল কি নিরাপদ স্বীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে?
অনলাইন ডেস্ক

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) হচ্ছে রেলওয়ের যাবতীয় সম্পত্তির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত একটি নিরস্ত্র বাহিনী। এ বাহিনী সাধারণত বড় বড় সেটশন (যেমন : চাঁদপুর, লাকসাম, ফেণী, কুমিল্লা ইত্যাদি) এলাকায় কর্মরত থাকে। এর পূর্ববর্তী নাম হচ্ছে ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড’। ১৯৭৬ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এটি আরএনবিতে রূপান্তরিত হয়। ২০১৬ সালে ১৯৭৬ সালের রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী অধ্যাদেশ বাতিল হয় এবং সেখানে হালনাগাদকৃত অধ্যাদেশ প্রতিস্থাপন হয়। আরএনবি কাজ করে জিআরপি (গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ)-এর সাথে। জিআরপির অধিক্ষেত্র একেবারে সীমিত। এই অধিক্ষেত্র হচ্ছে রেললাইন, খোলা রেল লাইনের উভয় পাশে ১০ ফুট দূরত্ব এবং রেল লাইন সংলগ্ন বদ্ধ এলাকা। সেজন্যে জিআরপিকে স্টেশন প্লাটফর্ম ও ট্রেনে দায়িত্ব পালন, যাত্রীদের আগমন-নির্গমন নির্বিঘ্ন করা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে ট্রেনের ছাদে ও ইঞ্জিনে ভ্রমণ নিবৃত্ত করা, নির্দিষ্ট অধিক্ষেত্রে সংঘটিত অপরাধের তদন্ত করা ইত্যাদি কাজ করতে হয়। জিআরপির অধিক্ষেত্রের বাইরে রেলওয়ের যাবতীয় সম্পদ রক্ষায় প্রহরা, রক্ষণাবেক্ষণ বা পর্যবেক্ষণের কাজটিই মূলত করে আরএনবি। কিন্তু জনবল সঙ্কটে এই আরএনবি সঠিক দায়িত্ব পালনে হিমশিম খায়। অগত্যা কোথাও কোথাও অপরাধী চক্রের সাথে যোগসাজশে রেল সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ বাদ দিয়ে পরিত্যক্ত লৌহজাত সামগ্রী, ইলেকট্রিকসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি বা চুরিতে সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

চাঁদপুরে রেলওয়ের শত শত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের দরজা, জানালা, ইলেকট্রিক সামগ্রী, স্যানিটারী সামগ্রী, পানির পাইপ, চালের টিন, কাঠ, দেয়ালের ইটসহ অন্যান্য সামগ্রী, পরিত্যক্ত রেল লাইনের রেল, ফিশ প্লেট, স্লিপারসহ বিভিন্ন লৌহজাত সামগ্রী চুরি হয়ে আসছে বছরের পর বছর। সত্যি কথা বলতে কি, রেলওয়ের বিশাল এলাকার সম্পদ রক্ষায় যে পরিমাণ আরএনবি কর্মকর্তা ও সদস্য প্রয়োজন, সেটা না থাকায় এ চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। কিন্তু গাড়ির বগি ধোয়া ও হাল্কা মেরামতের জন্যে যে ওয়াশপিট, সেটিতেও যদি চুরি ঠেকানো না যায়, তাহলে আরএনবির জনবল সঙ্কটকে ছাপিয়ে তাদের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এ প্রশ্নের সমাধান করতে গিয়ে আরএনবি সদস্যরা সক্রিয় হয় এবং চাঁদপুর শহরের নূতনবাজারস্থ মকবুলের ভাঙ্গারি দোকানে গিয়ে ওয়াশপিটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি হওয়া ফিশ প্লেট ও রেলওয়ের অন্যান্য লৌহজাত সামগ্রী দেখতে পায়। দোকানি থেকে বিক্রেতার সন্ধান পেয়ে ২ জনকে আটক ও ফিশপ্লেট উদ্ধার করে। আটককৃতরা এ চুরির পেছনে জনৈক রেল কর্মচারীর সহায়তা করার বিষয়টি জানায়। আর রেলওয়ের চোরাই লৌহজাত সামগ্রীর ক্রেতা মকবুলের পরিচয় খুঁজে পান চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিবেদক। তিনি জানান, মকবুল হচ্ছেন আরএনবির চাঁদপুরস্থ ইনচার্জ খোরশেদ আলমের ভায়রা ভাই।

মকবুলের পরিচয় জানার পর এমন কথা ওঠাই স্বাভাবিক, রেল কি নিরাপদ স্বীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে? আরএনবি চাঁদপুর-এর ইনচার্জের নিকটাত্মীয় যদি তার দোকানে রেলওয়ের চোরাই মাল কিনেন, তাহলে বিক্রেতা কি আর কোনো চোরের হওয়া লাগে? সর্ষের ভেতরে যদি ভূত থাকে, তাহলে সেই সর্ষে দিয়ে কি আর ভূত তাড়ানো যায়? ঘরের শত্রু যদি বিভীষণ হয়, তাহলে তারচে’ বড় শত্রু কি আর খোঁজা লাগে? আমরা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চাঁদপুরে একের পর এক রেল সামগ্রীর চুরির ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়