রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

উদ্যোগটি চাঁদপুরে প্রথম ও প্রশংসনীয়

উদ্যোগটি চাঁদপুরে প্রথম ও প্রশংসনীয়
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ গুণীজনকে সংবর্ধনা প্রদানে এখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের ঔদার্য দীর্ঘদিন ধরে প্রশংসনীয়ভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক সময় প্রতিবছর চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জেলার গুণীজনদেরকে খুঁজে খুঁজে বের করে সংবর্ধনা দেয়া হতো। এ মহৎ কাজটি চতুরঙ্গ, অনন্যা, রোটারী ক্লাব, কচি-কাঁচার মেলা সহ অনেকেই করেছে এবং করছে। তবে কিছু সংগঠন সেটি করছিলো না। তার মধ্যে ইনার হুইল ক্লাব নামক নারীদের আন্তর্জাতিক সংগঠনটি ছিলো পিছিয়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইনার হুইল ক্লাব অব চাঁদপুর সেন্ট্রাল নামক সংগঠনটি গুণী নারী শিক্ষকদের সংবর্ধনা দিয়ে সেই পিছিয়ে পড়ে থাকার বদনাম ঘুচিয়েছে। গত ৭ জুলাই স্বীয় বৃত্ত থেকে বেরিয়ে তারা একজন মেধাবী ও গুণী পুরুষকে সংবর্ধিত করে কম-বেশি তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সেই পুরুষটি হচ্ছেন ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, যাঁকে সব্যসাচী লেখক হিসেবে এই সংগঠনটি সংবর্ধিত করেছে। এই সংবর্ধনার স্থান হিসেবে তারা বেছে নিয়েছে চাঁদপুরের লেখকদের আবেগের জায়গা সাহিত্য একাডেমীকে।

চাঁদপুরের অনেক সংগঠন/ প্রতিষ্ঠান স্থানীয়-অস্থানীয় লেখকদেরকে সংবর্ধনা/ সম্মাননা দিয়েছে সাহিত্যের কোনো একটি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ। কিন্তু সাহিত্যের অনেক ক্ষেত্রে কিংবা সাহিত্যের প্রায় সকল ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সব্যসাচী লেখক হিসেবে স্বীকৃতি বা সংবর্ধনা প্রদানের উদ্যোগ নেয়নি। অবশেষে সাহিত্য সংগঠন না হয়েও ইনার হুইল ক্লাব অব চাঁদপুর সেন্ট্রাল সে উদ্যোগ নিয়েছে। তারা চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী এবং বর্তমানে পেশাগত কারণে চাঁদপুরে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে সব্যসাচী লেখক হিসেবে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেছে। কথা হলো, তারা কি সঠিক কাজটি করেছে?

আমাদের মতে, ইনার হুইল ক্লাব অব চাঁদপুর সেন্ট্রাল ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে সব্যসাচী লেখক হিসেবে সংবর্ধিত করে সঠিক, সময়োচিত, সাহসী ও প্রশংসনীয় কাজই করেনি, তারা চাঁদপুরে সর্বপ্রথম এই কাজটি করেছে। এটার অর্থমূল্য না থাকলেও ডাঃ পীযূষকে সব্যসাচী লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক অনেক উদ্দীপ্ত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এটা অবশ্যই বলতে হবে যে, চাঁদপুরের ব্র্যান্ডিং বুক 'ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর' সারাদেশের জেলাগুলোর ব্র্যান্ডিং বুকের মধ্যে ব্যতিক্রম হয়েছে ডাঃ পীযূষের সুখপাঠ্য ছড়ার কারণে এবং নিবন্ধগুলোর মানসম্মত ইংরেজি অনুবাদে সহযোগিতার কারণে। তিনি শুধু বাংলা নয়, ইংরেজিতে বলা ও লিখায় সাবলীল এবং পারদর্শী। তিনি ছড়াকার হিসেবে যেমন খ্যাত, কবিতা, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, গান সহ সাহিত্যের বাকি ক্ষেত্রগুলোতেও পারদর্শী। তিনি একজন খ্যাতিমান বিতার্কিক, বিতর্ক বিষয়ক লেখক ও গ্রন্থকার, বিতর্ক সংগঠক ও অনলবর্ষী বক্তা। এবারের নজরুল জয়ন্তীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আলোচনা সভায় তিনি চাঁদপুরে থেকেও প্রধান বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছেন এবং বিদগ্ধ শ্রোতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। গণহত্যা বিষয়ক চাঁদপুরের নাটক 'মধ্যরাতের মোলহেডে'র অন্যতম রচয়িতা হিসেবে তিনি দর্শকদের কাঁদানোর মতো যে সংলাপ ও বিবরণ তুলে ধরেছেন, তা এককথায় অসাধারণ। তিনি একজন গবেষক। তাঁর গবেষণামূলক নিবন্ধ ও গ্রন্থপাঠের মুগ্ধতা অনেক বেশি। তাঁর ব্যতিক্রম পর্যবেক্ষণ ও উদ্ভাবনী চিন্তায় সুস্পষ্ট হয় তাঁর মনীষা। কবিতা নিয়ে তাঁর যে পরীক্ষামূলক মুনশিয়ানা, সেটাও কম কিসে। বর্তমানে তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা ২২টি। এই সম্পাদকীয় নিবন্ধের কলেবর বিবেচনায় ডাঃ পীযূষের সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ না থাকলেও আমরা এটা অকপটে বলতে পারি যে, চাঁদপুরে তো বটেই, চট্টগ্রাম বিভাগে ডাঃ পীযূষের সমান্তরালে সব্যসাচী লেখকের সংখ্যা তৈরি করা কষ্টকর। এই বিদগ্ধ লেখকের বয়স পঞ্চাশ পূর্ণ হবে আগামী ১০ অক্টোবর। তাঁর কাছ থেকে সাহিত্যের ক্ষেত্রে চাঁদপুরসহ চট্টগ্রাম বিভাগ এবং পুরো দেশবাসী আরো অনেক কিছু পাওয়ার আশা রাখে। সেজন্যে সৃষ্টিকর্তার কাছে সুস্থতার সাথে তাঁর দীর্ঘজীবন প্রত্যাশা করছি। তিনি দীর্ঘজীবী হলে ও সুস্থ থাকলে তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা অর্ধশতাধিক হওয়াটা অস্বাভাবিক হবে না এবং তাঁর বক্তৃতা/ কথামালায় ঋদ্ধ হবে আমাদের দেশ ও সমাজ। আর অনেক বড় ধরনের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতিতে তিনি অবশ্যই উজ্জ্বল প্রতিভাসে নিজেকে ইতিহাসের পাতায় করবেন স্মরণীয় ও বরণীয়-এমনটি বললে অত্যুক্তি হবে না এবং আত্যন্তিক প্রত্যাশা করা হবে বলেও আমরা মনে করি না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়