প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
চেতনা ও সামাজিক বিপ্লবের প্রতীক মীনা
মোঃ কায়ছার আলী
“আমি বাবা মায়ের শত আদরের মেয়ে, আমি বড় হই সকলের ভালোবাসা নিয়ে। আমার দু’চোখে অনেক স্বপ্ন থাকে, আমি পড়ালেখা শিখতে চাই। যদি চার দেয়ালের মাঝে কাটে সারা জীবন, তাহলে থাকব শুধু বোঝা হয়ে। শিক্ষা আমায় মুক্তি দেবে, মুক্তি দেবে। আমি তো কালকের খুশি আর আশা। আমারও তো সাধ আছে, আছে অভিলাষ। ঘরে বেঁধে রেখ না, নিয়ে যাও এগিয়ে.......।” আমার হৃদয়ের সমস্ত আকুতি ও মিনতি ভরা গানটির (আবেদনের) পর সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে ৯ম শ্রেণীতে পড়াকালীন ঝালকাঠি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী (সাহসী নারী) শারমিন আক্তার সমাজের ক্ষতিকর প্রথা বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক অসম বিয়ে ঠেকিয়ে ২৯ মার্চ ২০১৭ ওয়াশিংটন ডিন এচেসন মিলনায়তনে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া টাম্পের হাত থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড ২০১৭’ পদক পাওয়ায় তাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রং লাল-সবুজ শাড়ি পরে পুরষ্কার গ্রহণ করায়।
|আরো খবর
আমার নাম মীনা। আমার গ্রামের নাম কালনা। আশে-পাশে রয়েছে কামঠানা চরকরফা, তেঁতুলিয়া, আমডাঙ্গা। আমাদের গ্রামে অধিকাংশ মানুষই অশিক্ষিত। তারা সভ্যতার আলো থেকে অনেক দূরে। বিদ্যুৎ নেই, ব্যাটারী দিয়ে দু’-এক বাড়িতে টেলিভিশন চলে। প্রয়োজনের তুলনায় স্কুল ও কলেজ খুবই কম। গ্রামের দু’-একজন শিক্ষিত লোকের চেষ্টায় আজ গ্রামের অনেকেই স্কুলে যায়। সন্ধ্যা হলে আগে যেখানে হই-হুল্লোড় শোনা যেত আজ সেখানে কেউ কেউ সুর ধরে কবিতা আবৃত্তি করে। ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে এই গ্রামে। এখন আমার সাথে মেয়েরাও স্কুলে যায়। এই গ্রামে মাটির সোঁদা গন্ধ, জোছনা রাত, আকাশের পূর্ণিমার চাঁদ, পাখির ডানা মেলে উড়ে যাওয়া, শরৎকালে নদীর বুকে ফুটে থাকা কাশফুল, ফাগুনের কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, পলাশ থোকায় থোকায় ফুটে থাকা, মৃদুমন্দ বাতাস, নদীর কূলকূল শব্দ, ঢেউয়ে ঢেউয়ে পাল তুলে ভেসে যাওয়া নৌকা, মাঝির মুখে ভাটিয়ালী গান, এসব কিছু ছেড়ে আমার ওই যান্ত্রিক সভ্যতার শহরে যেতে ইচ্ছে করে না।
আমি শুনেছি শহরের মানুষেরা নাকি ভালো না। চোখের পলকে মানুষ খুন করে, নিজেকে নিয়েই সবাই ব্যস্ত থাকে, কেউ বিপদে পড়লে বা ছিনতাইকারীর কবলে পড়লে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসে না, নেই খোলা মাঠ, নেই গাছপালা, আছে শুধু বাতাসে গাড়ির ধোঁয়ার গন্ধ, বড়লোকের ফেলে দেয়া খাবার গরীবেরা নাকি কুড়িয়ে খায় এবং রাস্তার উপর নাকি মানুষ ঘুমোয়। মানুষ আর মানুষ নাকি গিজগিজ করে। তাদের চলাফেরা বা জীবন বৃত্তের মধ্যে আবদ্ধ। আমার ভালোলাগে গ্রামের মেঠোপথ, রাস্তার দু’ধারে নাম না জানা বনফুলের সমারোহ। মন ভালো হয়ে যায় মাতাল করা বনফুলের ঘ্রাণে। দেখতে ভাললাগে ভোরবেলায় পাতার ওপরে পরা চকচক করা শিশির। শুনতে ভালো লাগে পাখির কলকাকলি। গ্রামের আর দশটা মেয়ের মত আমিও খুব সাধারণ একটি মেয়ে। মা, বাবা (ওমর আলী), দাদী, ছোট ভাই রাজু এবং ছোট বোন রাণীকে নিয়েই সাদামাটা আমাদের একটি পরিবার। আর আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু টিয়া পাখি মিঠু। আমি তোমাদের মত হাসি, কাঁদি, খেলি আর অন্যের দুঃখে দুঃখি হই। তোমাদের মত চোখে স্বপ্ন আর আমার বুকে আশা বাসা বাঁধে। নিরাশার দ্বন্দ্বে আমারও হৃদয় দোলে। আমি একটু ব্যতিক্রম এইজন্য যে, আমি আমাদের চারপাশের সমস্যা নিয়ে ভাবি। শুধু ভাবিই না এইসব সমস্যার সমাধান সুষ্ঠুভাবে করতে পারি। আর তাই আমাদের গ্রামের ছেলে-মেয়েরাই শুধু আমার বন্ধু নয়, পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষী ছেলেমেয়েরা আমার অতি প্রিয় বন্ধু। আমি বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সময় একটির পর একটি মজাদার সব অ্যাডভেঞ্চারে জড়িয়ে পড়ি। আর তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তার গুণে সেইসব অ্যাডভেঞ্চার থেকে বেরিয়ে আসি বিভিন্ন সমস্যার চমৎকার সব সমাধানের মাধ্যমে।
তোমরা কি আমার চলার পথে সাথী হবে? আশা করছি হবে। যদি হও তাহলে সময়টা খুবই উপভোগ্য হিসেবে কাটবে। আমার মজাদার কাহিনীগুলো আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। আমি ছোট্ট মেয়ে হলেও আজ জানিয়ে দিতে চাই আমি কী কী কাজ করতে পারি? ওহ্! আমার জন্মদিনটি এতক্ষণ বলতে ভুলেই গেছি। আমার জন্মদিন ২৪শে সেপ্টেম্বর। শুনেছি লোকেরা বলে ‘মীনা দিবস’। মেয়েদের আর্থসামাজিক ভিত্তি সুদৃঢ়করণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার সুনিশ্চিত এবং আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করে সকল প্রকার বৈষম্য দূরীভূত করার সম্মিলিত প্রয়াস প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সার্ক ১৯৯০-এর দশকে কন্যা শিশু দশক হিসেবে ঘোষণা করে। কন্যা শিশু দশকের উদ্দেশ্যকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে ইউনিসেফ ও এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ব্যাপক প্রচার এবং গণযোগাযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে এই কর্মসূচি সৃজনশীল গণযোগাযোগ কার্যক্রমে পরিণত হয় এবং মেয়েদের বিষয়ে প্রাচীন ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে মেয়ে শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বৈষম্য দূর করে শিক্ষাসহ জীবনের সার্বিক ক্ষেত্রে মেয়ে শিশু ইস্যু আরো জোরদার করে তোলার প্রতীক হিসেবে সার্ক প্রতিবছর আমার জন্মদিনকে ‘মীনা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। কার্টুন, কমিকসের বই, শিক্ষা উপকরণ, নাটিকা ও অন্যান্য প্রচারের মাধ্যমে শিশুদের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা সর্বোপরি মেয়ে-ছেলে বৈষম্য বিলোপ করে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এই দিবসের উদ্দেশ্য।
একদিন চমৎকার একটি সকালে আমি আমার মায়ের কাছে জানতে চাইলাম রাজু, রাণী এবং আমি নিজে জন্মাবার আগে আমার মা কী কী খাবার খেয়েছিলেন। আমি যখন আমার মায়ের গর্ভে ছিলাম সে সময়টায় দাদী আর বাবা সবসময় খেয়াল রাখতেন মা যেন প্রচুর খাবার, হলুদ রঙের ফলমূল, রঙিন শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, আয়োডিনযুক্ত লবণ খান এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেন। প্রসবপূর্ব চেকআপের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাতয়াত করতেন এবং জন্মের সময় একজন দক্ষ ধাত্রী উপস্থিত ছিলেন। জন্মের কয়েক মিনিট পরেই আমাকে মায়ের প্রথম দুধ বা শালদুধ খাওয়ানো হয়েছিল, যা খেলে শিশুকালে সুস্থ থাকা এবং বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। শিশুর মুখে তেল বা মধু দেয়া ঠিক নয়। মা নিয়মমত সব কিছু করায় আমি সুস্থভাবে ও স্বাভাবিক ওজনে জন্মেছিলাম। তখন বাবা আমাকে আনন্দে কোলে তুলে নিয়েছিলেন। প্রত্যেক শিশুর মত প্রথম বছরে চার বার টিকা নিয়েছিলাম। ছয় মাস পর মায়ের দুধের পাশাপাশি সামান্য তেল, ডাল ও শাকসবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি চটকানো কলাও খেয়েছিলাম। একদিন আমি একটি লম্বা গাছে চড়ে একটা আম পাড়লাম, পরে আমটি মাকে দিলাম। যদিও আমটি আমি পেড়েছিলাম কিন্তু মা রাজুকে বড় অংশ খেতে দিলো। রাতের বেলা খাবার সময় মা রাজুকে একটি ডিম খেতে দিল। মিঠু ডিমটি দুইভাগ করে একভাগ আমার থালায় দিলো। মিঠুর সঠিক কাজটি তাদের ভাল লাগল না। মা পুনরায় ডিমটি রাজুকে দিতে বললেন। তখন দাদী বললেন, মেয়েদের এত খাই খাই স্বভাব কেন? বাবা বললেন, দুজনে বড় হচ্ছে দুজনের সমান খাবার দরকার। পরের দিন আমার কাজ রাজু আর রাজুর কাজ আমি করতে লাগলাম। আমি আরামে থাকলাম। কিন্তু রাজুর অবস্থা খারাপ হলো। স্কুলে যাওয়ার পথে একটি পাকা পেয়ারা পেড়ে দুজনই সমান ভাগ করে নিলাম। রাজু তখন বললো, তোমার কাজগুলো আসলেই কঠিন। আমি ছাগলছানা মুনমুনকে কাকের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মিঠু ও মুনমুনকে একসাথে সাহস করে মোকাবেলা করতে বললাম। স্কুলে যাওয়ার সময় রীতাকে উত্ত্যক্ত করা দুষ্ট ছেলেদের হাত থেকে ফাঁদ পেতে উদ্ধার করলাম। গ্রীষ্মের এক গরমে বিকেলে দাদীর পাশে রাণীকে শুইয়ে দিয়ে মা, আমি এবং রাজু শহরে গেলাম। শহরে কিভাবে রাস্তা পার হতে হয় তা আমরা শিখলাম। এদিকে ঘুমিয়ে থাকা রাণী ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে হাঁটতে অল্পের জন্য পুকুরে পড়ে যায়নি। মা পরবর্তীতে রাণীর পায়ে ঘুঙুর বেঁধে দিল। যাতে বোঝা যায় সে কোন্ দিকে যাচ্ছে। বাবা ধানের পোকা মারার বিষ ফেলে রেখেছিল। ভাগ্য ভালো যে রাণী তা ভুল করে মুখে দেয় নি। বাড়ির সবাই মিলে শিশুদের কীভাবে নিরাপদ রাখা যায় এর জন্য কাজ করা শুরু করলেন।
আমার বন্ধু চম্পা কাগজ দিয়ে পাখি, নৌকা ও উড়োজাহাজ বানাতে পারে। তা দেখে সবাই আনন্দে নাচতে ও গাইতে শুরু করলাম। এক ছুটির দিনে আমি ও রাজু বাড়ির কাছে বনে ঘুরতে গেলাম এবং দেখলাম বাগানের মধ্যে গাছের ডালে একটি পাখির বাসা। মা পাখিটা ডিমে তা দিচ্ছিল। কয়েকদিন পর সকালে গিয়ে দেখি পাখিটার বাসায় দুটো বাচ্চা। রাজু বললো, বল তো কোন্টা পোলা আর কোন্টা মাইয়া? আামি বললাম, সেটা বড় কথা নয়, দেখবে কয়দিন পরে ওরা দুজনে আকাশে উড়বে। একদিন দেখলাম একটা ছেলে খোলা জায়গায় বহমান নদীর পাশে পায়খানা করে পানি দূষিত করছে। তার বাবা রিকশাওয়ালা, তাকে রাতে বয়স্ক স্কুলে পড়তে যাওয়ার অনুরোধ করি এবং তার মাকে আত্মকর্মসংস্থানের পথ দেখিয়ে দেই। তার পাঁচ ছেলে দুই মেয়ে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় আর কোনো সন্তান নেবে না। গ্রামের সবাই আমাকে ভালোবাসে। তাই মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি লেখাপড়া শিখে মানুষের উপকার করবো। সেজন্য প্রতিদিন সুমধুর আযানের সাথে সাথে মায়ের সঙ্গে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির কাজে মাকে সাহায্য করি এবং আমার ইচ্ছা, স্কুলে আপার মত আমিও মাস্টার হবো। একদিন নদীতে ডুবে যাওয়া একটি ছেলেকে সাঁতার কেটে বাঁচিয়েছিলাম। সেজন্য ওই ছেলেটির মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করলো। গ্রামের মানুষের ভালবাসা আমার সম্পদ।
একরাতে দাদী আমাদের কাছে আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের গল্প শোনালেন। অনেক রাতে সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছি। স্বপ্নের মধ্যে দেখি আলাদীনের সেই আশ্চর্য প্রদীপ এখন আমার হয়ে গেছে (সাথে জাদুর মাদুরটিও)। রাজু ও মিঠুকে নিয়ে বাতাসে ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশের সুন্দর গ্রামগুলো দেখতে দেখতে বড়লোকের ছেলেদের মত প্লেনে চড়ে উড়ে চলছি। জাদুর মাদুর নির্দেশমত নিচে নেমে প্রদীপটি ঘষা মাত্রই প্রথমে ধোঁয়ার মত অতঃপর এক বিরাট দৈত্য রেরিয়ে এলো। দৈত্য বললো, আমার সাধ্যের মধ্যে আছে তিনটি ইচ্ছা পূরণ করার ক্ষমতা। আমার প্রথম ইচ্ছা হলো ‘এই গ্রামে যত খোলা পায়খানা আছে এবং যাদের বাড়িতে পায়খানা নেই তাদের সবার বাড়িতে পায়খানার ব্যবস্থা করে দেওয়া।’ দৈত্য চোখের পলকে তা করে দিলো। আমার দ্বিতীয় ইচ্ছা হলো ‘মানুষ অজ্ঞতার কারণে খাবার আগে, পায়খানার পরে এমনকি কোনো কাজ করার পরে হাতে সাবান দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করা।’ দৈত্য বাতাসে ভর করে গ্রামে গ্রামে পায়খানায় সাবান ও ছাই রেখে এলো এবং বুঝিয়ে এলো এর উপকারিতা ও অপকারিতা।
এবার আমার শেষ এবং তৃতীয় ইচ্ছা দৈত্যকে বললাম ‘প্রত্যেক গ্রামে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করে তোমাকে দিতে হবে।’ দৈত্য কথামত প্রত্যেক বাড়ির পাশে বিশুদ্ধ পানির জন্যে একটি করে টিউবওয়েল বসিয়ে দিয়ে সেটিকে ব্যবহার করতে বললো। আমাকে দৈত্য বিভিন্ন খাবারের লোভ, সিনেমায় নায়িকা হওয়ার সুযোগ বা ধনী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ‘লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু’।
স্কুলে গিয়ে আমি আপামণিকে স্বপ্নের কথাগুলো বললাম। তারা সবাই মিলে তা বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা করলো অর্থাৎ আমার ইচ্ছেগুলো পূরণ হলো। আজ পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে সমঅধিকার বা ন্যায্য অধিকার রয়েছে। ছেলে ও মেয়ে একই মাতৃজঠরে বা মাতৃক্রোড়ে এবং স্তনে লালিত। ক্ষুধার যন্ত্রণা, আনন্দ, দুঃখ, ব্যথা, বেদনা, অনুভূতি সবই সমানভাবে উপলব্ধি করে। সুতরাং আর এবহফবৎ ফরংপৎরসরহধঃরড়হ নয়। এবহফবৎ পরিবর্তন করা যায় অর্থাৎ এবহফবৎ হলো সমাজ কর্তৃক সৃষ্ট নারী ও পুরুষের বৈষম্যমূলক ভূমিকা, অবস্থা ও অবস্থান কিন্তু ঝবী (সধষব বা ভবসধষব) শরীরের গঠন, কণ্ঠ ও ঙৎমধহ (যেটি জন্ম দিনে নির্ধারিত) মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক নির্ধারিত, যা পরিবর্তন করা যায় না। পরিশেষে এদেশের এক প্রান্ত হতে পৃথিবীর সব শিশুকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই, যারা আমার নীতি, আদর্শ, চেতনা ও সামাজিক বিপ্লবে বিশ্বাস করে। সমাজে প্রভাবশালী, ক্ষমতাবান, ধনী ও সরকারের কাছে আমার একান্ত বিনীত অনুরোধ, অসহায় অবহেলিত ও গরীব মানুষদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে যেন তারা সচেষ্ট থাকে।
লেখক : শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট, শধরংধৎফরহধলঢ়ঁৎ@ুধযড়ড়.পড়স