প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ০২:০৭
শেখ রেহানার স্বামী-ছেলের গাজীপুরের জমি জব্দের আদেশ
দুদকের আবেদনে আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রায় ১.৯৫ কোটি টাকার জমি ‘ক্রোক’ আদেশে জব্দ

গাজীপুরে শেখ রেহানার স্বামী ড. সফিক আহমেদ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)-এর নামে থাকা ৩.৫৪ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
|আরো খবর
এই আদেশ দিয়েছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোঃ জাকির হোসেন গালিব।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম এই জমি জব্দের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, সম্পত্তি হস্তান্তর বা বিক্রয়ের চেষ্টা চলছিল, যা তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
আদালত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭ হাজার টাকা মূল্যের জমি 'ক্রোক' করে রাখার আদেশ দেন।
এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া, যাতে ওই সম্পত্তি আর স্থানান্তর বা বিক্রি করা না যায়।
দুদক জানায়, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তদন্ত চলমান। এই জমিগুলোর মালিকানা প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানার স্বামী ও ছেলে—এমন তথ্য অনুসন্ধানে এসেছে।
সম্পদ জব্দের বিষয়টি রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিসরে নানা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিচ্ছে।
বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দের প্রেক্ষাপট আলোচনার কেন্দ্রে।
জানা গেছে, শুধু এই জমিই নয়, এর আগেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে থাকা সম্পদ—ব্যাংক হিসাব, ফ্ল্যাট, বাড়ি—জব্দের আদেশ হয়েছে।
এগুলো সবই জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের অংশ।
এই আদেশের মাধ্যমে সরকারি তদন্তের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বজায় রাখতে চেয়েছে আদালত।
এর মাধ্যমে প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা হ্রাস পাবে বলে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থা।
এই ঘটনাটি শুধু একটি আইনগত প্রক্রিয়া নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর এক গভীর ছায়া ফেলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, তদন্তের অগ্রগতি সাপেক্ষে আরও জমি বা স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ আসতে পারে।
দুদকের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শেখ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হওয়া নানা আইনি পদক্ষেপ দেশের জনগণের মাঝে “আইনের শাসন” প্রশ্নে একটি মিশ্র বার্তা তৈরি করছে।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে মামলার বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
দুদকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা চাইনি তারা জমি হস্তান্তর করে ফেলুক। তাই আমরা আদালতের কাছে জব্দ আদেশ চেয়েছি এবং তা পেয়েছি।”
এই রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে আদালতের নথি, দুদকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ করে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ