মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

জাতীয় শোক দিবসে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে শিক্ষামন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ে-মননে আলোকবর্তিকা হয়ে আছেন

বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ে-মননে আলোকবর্তিকা হয়ে আছেন
স্টাফ রিপোর্টার ॥

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ে-মননে আলোকবর্তিকা হয়ে আছেন। তিনি আমাদের বাতিঘর। তিনি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। যার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ, লাল সবুজের পতাকা। দেশ স্বাধীনের পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বিশ্ব আজ শোষক, আর শোষিত এ দু’ভাগে বিভক্ত। আমি শোষিতের পক্ষে। তখনই তিনি সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তিরা নিজেদের স্বার্থে তখন বেশ ক’জন জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদী নেতাকে দেশীয় সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা ও ষড়যন্ত্রকারীদের মাধ্যমে হত্যা করে। এর ধারাবাহিকতায় একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র রাসেলও ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। তাঁর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। ডাঃ দীপু মনি বলেন, বিজয়ের আনন্দ খুব বেশি সময় থাকে না। কিন্তু পরাজয়ের গ্লানি কারো কারো চিরস্থায়ী থাকে। একাত্তরের পরাজিত শত্রু সেই পরাজয়ের গ্লানি থেকেই জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার নীল নকশা করে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্যে সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তি ও একাত্তরের সকল পরাজিত শক্তি মিলে আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা, পাটের গুদামে আগুন, ব্যাংক লুটসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। আমদানিকৃত খাদ্যের জাহাজ মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে দেশে কৃত্রিম খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের অবস্থা তৈরি করে। মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অযোগ্য শাসক হিসেবে ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে। পরে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। যেমনিভাবে বৃটিশরা দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী, সেনাপ্রধান ও মীরজাফররা চরিত্র হননসহ মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে দেশপ্রেমিক স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে অযোগ্য শাসক হিসেবে চিহ্নিত করেছিল ষড়যন্ত্রমূলক পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে নবাবকে পরাজিত করে। পরবর্তীতে বন্দী নবাবকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেনাপ্রধান মীর জাফরকে বৃটিশরা নবাব বানিয়ে ক্ষমতায় বসায়। তখন বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়।

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারই ঘনিষ্ঠ বাংলার মীর জাফর খন্দকার মোশতাককে সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি ও খুনিরা ক্ষমতায় বসায়। খন্দকার মোশতাকের সাথে তখন অন্যতম কুশীলব ছিলেন তৎকালীন উপ-সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে খুনিরা তার সাথে দেখা করে তাদের পরিকল্পনার কথা জানায়। জিয়াউর রহমান তখন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে সামরিক আইন জারি ও খন্দকার মোশতাককে সরিয়ে নিজে ক্ষমতা দখল করেন। খুনিদের পুরস্কৃত করেন। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় জিয়া ১৫ আগস্টের কুশীলবদের মধ্যে অন্যতম।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বহু বাধা বিপত্তি পেরিয়ে দীর্ঘদিন পর দেশে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার বিচার কাজ শুরু করেন। কজন খুনিকে আটক করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসলে বিচার কাজ বন্ধ থাকে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় বিচার কাজ শুরু হয়। খুনিদের ফাঁসির আদেশ হয়। কজন খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়। এখনো ক’জন বিদেশে পলাতক আছে। তাদের ধরে এনে রায় কার্যকর করা হবে।

তিনি গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথাগুলো বলেন।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান, সহকারী পরিচালক ডাঃ সাজেদা পলিন ও পিপি অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান ও পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সিনিয়র সদস্য প্রফেসর দেলোয়ার আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, এএইচএম আহসান উল্যাহ, মির্জা জাকির, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ, চঁাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, প্রেসক্লাবরে সিনিয়র সদস্য ফণী ভূষণ চন্দ্র, ফরিদগঞ্জ বিআরডিবির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম আজাদ জুয়েল, সদস্য মিজান লিটন, সদস্য ও বাংলাদেশে ফিসিং বোর্ট মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শাহআলম মল্লিক প্রমুখ।

আরো বক্তব্য রাখেন রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী ও আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমির প্রধান শিক্ষক গোফরান হোসেন, লেখক ও সাহিত্যিক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান।

আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মোঃ ইলিয়াছ ও গীতা পাঠ করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর।

অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়