প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
কক্সবাজারে লেখকদের আনন্দভ্রমণ
(গত সংখ্যার পর ॥ শেষ পর্ব)
তিনদিন সরকারি ছুটি হওয়ায় পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। আনন্দের মাত্রাও বেশি। প্রাণের উচ্ছ্বাস মেখে সাগরের বুকে নিজেদের বিলিয়ে দিই। সিনিয়র-জুনিয়র পেশাপার্থক্য কোনো বিষয়বস্তু মাথায় ছিল না। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের এটাই মোজেজা, সবাইকে একই কাতারে নিয়ে আসে। দুঃখ-গ্লানি-ক্লান্তি-অবসাদ ভুলিয়ে আনন্দণ্ডহিল্লোলে ভরপুর মাতিয়ে রাখে। হঠাৎ দেখি গায়ে জড়ানো ‘তোয়ালে’টা নেই। খুঁজতে থাকি। পাওয়া যাচ্ছে না। তখনই চেতনা আসে সাগরকন্যা আমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আমাকে জড়িয়ে থাকতে চায়। জনপ্রিয় ‘গাড়িয়াল’ ছায়াছবি গানের সুরে- ‘যদি বন্ধু যাবার চাও, ঘারের গামছা থুইয়া যাও রে, বন্ধু কাজল ভোমরা রে, কোন দিন আসিবেন বন্ধু, কইয়া যাও-কইয়া যাও রে’।
অসাধারণ সাগরের মায়াজাল। ছুটে আসতে ইচ্ছে হচ্ছে না।‘একবুক আনন্দসাগর’ জয় করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বীরদর্পে হেঁটে হেঁটে হোটেলে। ভ্রমণটি নিখাত সাহিত্য সরষে হওয়ার কথা ছিল। কক্সবাজারের স্থানীয় কবি-সাহিত্যিক-গুণীজনদের সাথে আলোচনা পর্ব ছিল। অজ্ঞাত কারণে হয়ে উঠে না। রুম নং ৭-এফে আমরা চারজন আনন্দে ঊর্ধ্বগতিতে ছিলাম একিভূত। এভাবে প্রাত্যহিক জীবনে মিলেমিশে থাকলে সুখ আপনাআপনি ধরা দেবে। হয়তো স্বার্থপরতায় ভুল বোঝাবুঝির অন্ধ মোহে স্বার্থের বেড়াজালে হয়ে উঠে না। সকালবেলা আমাদের নির্ধারিত রুমটি ছেড়ে দেওয়ায় এখন উদ্বাস্তু হয়ে ফরিদ হাসানের রুম নং সেভেনে ঠাঁই হয়। উদ্বাস্ত শিবিরে গানের মজমায় মেতে উঠি।
করিডোরে পাঁয়চারি অবস্থায় আমি ও শাদমান শরীফ হস্তশিল্পে ‘লাভ চিহ্ন ও সাপের ফনা’ তুলে ধরি। আমাদের জীবনে ‘শত্রু-মিত্র’ জড়িত। পাশে কোনো না কোনোভাবে নারীর ভূমিকা উঁকি দেয়। মনিরুজ্জামান বাবলুর সহধর্মিণী ইবা ভাবলুর সুশ্রী হাসিমাখা মুখমণ্ডল সংযোগে লাভ চিহ্নিত হস্তশিল্প প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। ফরিদ হাসান ক্যামেরাবন্দি করে শর্টকাট অনুভূতি নেওয়ায় সাময়িক সময়টি দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠে।
পড়ন্ত বিকেলে ‘ফিস ওয়ার্ল্ডে’ যাওয়ার পরিকল্পনা। জাহিদ নয়ন বললো, ‘হিলটপ সার্কিট হাউজ’ পরিদর্শন করে ওখানে যাওয়া যাবে। অগ্যতা সায় দিলাম। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি সার্কিট হাউজ আছে। ব্যতিক্রম কক্সবাজার জেলায় দুটি। সমতল ভূমিতে একটি। অনন্য দর্শনীয়টি হলো পাহাড়ের উঁচুতে ‘হিল টপ সার্কিট হাউস’। হোটেল থেকে অল্প সময়ে পৌঁছালাম। শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ। প্রবেশধারে দু পাশের তোড়ণে ছবি তোলা হলো। উপরে ঢেউ খেলানো বাঁকা রাস্তা চোখে পড়তে শরীর শিউড়ে উঠবে। পায়ে পায়ে উপরে উঠছি। ছায়াঘেরা নিরিবিলি একটি গাছে ‘কাঁঠবিড়ালি’ দেখে সবাই উৎসুক চোখে চোখে রাখি।
আমাদের উৎসাহ উপভোগ দেখে লজ্জায় পালিয়ে যায়। কাঁঠবিড়ালি কবিতাটি স্মরণে এসে ধরা দেয়। উঠতে কষ্ট অনুভব হলেও যত উপরে উঠবে তত বেশি ভালো লাগবে। প্রথমেই দক্ষিণ পাশে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস পূর্বাভাসের ‘রাডার স্টেশন’ দেখা যাবে। পাহাড়ের সর্ব উঁচুতে দেখতে পাওয়া যাবে রাখাইন সম্প্রদায়ের ‘প্যাগোডা’। এখানে দাঁড়িয়ে সমতলের ঘরবাড়ি-দালান-কোটা-পরিবেশ-প্রকৃতি বনায়ন অবলোকনে ‘এক নজরে কক্সবাজার’ দেখা হয়ে যাবে। সমতল থেকে পাহাড় চূড়ায় উঠার সব ক্লান্তি অবসান হয়ে যাবে মুহূর্তে নিরিবিলি সবুজ প্রকৃতিঘেরা প্রাশ্চাত্যের আদলে অপূর্ব কারুকাজে নির্মাণ-শৈলী দেশের অদ্বিতীয় ‘হিল টপ সার্কিট হাউস’ দেখে। বঙ্গবন্ধুর অঙ্কিত ছবি পাহাড়ের উঁচুতে সার্কিট হাউসের পরিবেশ উচ্চতায় অমলিন। স্মৃতিতে বেঁধে রাখবেন আনন্দচিত্তে।
পর্যটন দিবস উপলক্ষে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে ‘লাবণী বিচে’ সুরের মূর্ছনা ভেসে বেড়ায়। ফরিদ হাসান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগের ইচ্ছে পোষণ করায় সবাই সমতলে নেমে পড়লাম। সন্ধ্যা ঘনিয়ে। ‘ফিশ ওয়ার্ল্ডে’ যাওয়া হলো না। যেভাবে দেখা হয়ে উঠেনি ‘হিমছড়ি’র নৈসর্গিক দৃশ্য । দুইটি দর্শনীয় স্থান না দেখার অনুভূতি হলো, দর্শনীয় স্থান প্রথম দর্শনের পর দ্বিতীয় দর্শনে অনীহা ভ্রমণ সঙ্গীদের। এটাও স্বীকার্য যে, অনেক সময় পরিবেশ পরিস্থিতিতে সম্ভবপর হয়ে উঠে না।
লাবণী বিচে যাওয়ার জন্য প্রথম অটোতে ভ্রমণে বয়োজেষ্ঠ আবদুল্লাহহিল কাফী, তাঁর কন্যা তাশফিয়া কাফী ও নূরে আলম পাটোয়ারী। দ্বিতীয় অটোতে আমি, নূরুল ইসলাম ফরহাদ ও কাজী সাইফ। শাদমান শরীফ, ফরিদ হাসান ও জাহিদ নয়ন অটোর জন্য অপেক্ষমান।
লাবণী পয়েন্টে লোকে লোকারণ্য। অর্থাৎ পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। সন্ধ্যা প্রার্থনায় কনসার্ট বিরতি। আর কয়েক ঘণ্টা পরই আমাদের ফিরতে হবে ইলিশের বাড়ি। কেনাকাটায় মনোযোগী হলাম। নূরে আলম পাটোয়ারী ও কাজী সাইফ দুই ভাইরা ভাই তাদের মত করে বেরিয়ে যায়। আমি ও নূরুল ইসলাম ফরহাদ এটা ওটা দেখছি। নূরুল ইসলাম ফরহাদের ফোনে তার এক নিকটতম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ হয়ে গেল বিচে। আগুন্তুক কোরাল মাছের বারবিকিউ অর্ডার দিয়ে বসলো। দ্রুততায় বারবিকিউ সাবার করে শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করে চলে আসি সুগন্ধা বিচে। এখানে এসে নূরে আলম পাটোয়ারী ও কাজী সাইফকে সামনে পেলাম। আমাদের চারজনের পুরো ট্যুরে ছিল সোহার্দ্যরে সমন্বয়। আমরা ছিলাম সুখী পরিবারের প্রতীক। খাওয়া দাওয়া ঘুম প্রার্থনা ঘোরাঘুরি সবকিছুতেই মিলেমিশে। যা ভ্রমণে ইতিবাচক। টিমে সমন্বয় থাকলে ভ্রমণ আনন্দদায়ক ও হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠে। ছন্দপতন ঘটে প্রথম দিনে আসার লগ্নে। হোটেল ‘রুমে’র বেড়াজালে মান-অভিমানে ভাগ হয়ে যায়। যা আবদ্ধ থাকে ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতায়।
কাদের পলাশ ও কন্যা কিমিয়া বাবা মেয়ের ভুবনে একান্তই নিজেদের মতো করে সময় অতিবাহিত করে। এইচএম জাকির ও তার স্ত্রী নেহলিন সাবা খান অহনা এবং শাশুড়ি নাজমা নূর, একমাত্র সন্তান আয়াজের দেখা মেলা ছিল অমাবশ্যার চাঁদ।
রাকিবুল হাসান সবার শেষে ফেনী হতে বাসে উঠে সবার আগে প্রস্থান। আমার সাথে হয়েছে একবার কর্মদন। দেওয়ান মাসুদুর রহমান তার সহধর্মিণী সালমা রহমান, সন্তান আব্দুল্লাহ মুসা (৮) দিহান (৪), আরিফুল ইসলাম স্বজন পূর্ণতা হাসান শিউলি, সাবিহা (৮), আসিফ ও নীরা (৩)রা ছিল নিজেদের ইচ্ছায় ঘুড়ি নিজেদের ইচ্ছায় ফিরি। একদিন আগেই ট্রেনে ফিরছে বাড়ি। তবে ভ্রমণকালীন দেওয়ান মাসুদুর রহমানের লুঙ্গি পরে মুখে আগুনের পুলকিতে হাঁটার স্টাইল দৃষ্টিতে পড়ে। আরিফ রাসেল ও তাঁর সহধর্মিণী দন্ত চিকিৎসক ডাঃ নাজমুন নাহার মমিকে শেষদিনে লিফটের করিডোরে দেখে মনে হচ্ছে ‘মেঘের কোলে-রোদ হেসেছে’। মাঈনুল ইসলাম মানিকের স্ত্রী নার্গিস তন্বীর ভূমিকা ছিল নিরবতার রমণি। আছেন আরো ট্যুর পার্টনার, ভ্রমণ কাগুজে তাদের জানি। (আমি চেষ্টা করেছি ভ্রমণের সবাইকে স্মৃতিতে জাগরিত রাখতে)।
উদার মন-মানসিকতা, বাক্যের মাধুর্যতা, বিচক্ষণতা, ভ্রমণের পরতে পরতে ধরা দেয়। বয়সের ‘ওজন’গুণে দিতে হয় বিশেষ ছাড়। অস্বস্তিকর বাক্য এড়িয়ে কর্ম সম্পাদনে ভ্রমণে আনন্দ জরিয়ে দেয় ‘টিম ম্যানেজমেন্ট’। এই বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়ে আগামী দিনের দলগত ভ্রমণের স্বপ্ন দেখতে হবে।
সমুদ্র সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্য গুণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল দীর্ঘ কিলোমিটার সাগর পাড়ি দিলেও- পায়ে কাদা মাটি লাগে না!
নেতৃত্বের পরিক্রমায় অবিচল থাকলে, স্বার্থপরতা ও দাম্ভিকতাশূন্য থাকলে কাণ্ডারীদের গায়ে কাদামাটি ছুঁড়তে পারবে না।
একা একা ভ্রমণে নিরানন্দ তৃপ্তি। দলগত ভ্রমণের মজাই আলাদা। যা আমরা উপভোগ করলাম। সাগরকন্যা এটাও আমাদের জানান দিলেন ব্যক্তিগত জীবনে একা একা আর্থিক স্বচ্ছলতায় মগ্ন থাকা আবশ্যক। কিন্তু উপভোগ করতে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে হয়। সুস্থ আনন্দ বিনোদনে সমমনাদের সাথে মিলেমিশে থাকা বুদ্ধিদীপ্ত সময়ের উপযোগিতা।
গ্রুপ মেসেঞ্জারে তারা দিচ্ছে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ার। যে, যেখানেই ছিলাম সবাই বাসে উঠে বসি। সময় রাত ১০.৩০ মিনিট। যাত্রাপথের তুলনায় ফিরতি বাসটি পরিপাটি। সবাই কিছুটা স্বস্তি বোধ করলাম। যার যার সিটে বসে গল্পে মেতে উঠার প্রারম্ভিকেই কাজী সাইফ বলল মোবাইল পাওয়া যাচ্ছে না। এমন খারাপ সংবাদে সবাই মর্মাহত। বাসে উঠার আগেই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটেছে। সহযাত্রীর শেষলগ্নে এমন ঘটনায় ব্যথিত। আগেই বলেছি, বাসে উঠলে নিস্তেজ হয়ে যাই। ব্যতিক্রম হলো না। প্রাকৃতিক বাতাসে স্বস্তি বোধ করায় আমাকে চলে আসতে হলো ড্রাইভারের সন্নিকটে। বিদায় কক্সবাজার।
আমাদের গাড়ি ছুটছে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে। বাসের ভিতরে সবাই ফিরতি আনন্দে। আমি একাকিত্বে। শাদমান শরীফ আমাকে কিছু ঔষধ দিলেন। সাময়িক স্বস্তি বোধ করছি। অনাহুত কারণে; আকর্ষণীয় মুহূর্ত র্যাফেল ড্র হচ্ছে চলন্ত বাসে। শাদমান শরীফ হাতে কিছু একটা দিলে বুঝতে পারলাম আমার পুরস্কার। সাদ আল আমীন ও তার বন্ধু ভ্রমণে পরে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রথম পুরস্কার পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা। রাতের আলোকিত বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে করতে পৌঁছালাম প্রাণের শহর চাঁদপুর। যার যার নিবাসে।
শেষ ভালো তো সব ভালো। আমাদের ভ্রমণও প্রশান্তির পাদপীঠে। পাঁচ অক্টোবর চাঁদপুর রিসোর্ট সেন্টারে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও ক্লোজিং মিটিং। স্বচ্ছতায় আয় ব্যয়ের ফর্দ তুলে ধরা হয়। উৎসাহমূলক প্রণোদনার জন্য চাঁদপুর পৌরসভা, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। শেষ পর্বে ছিলেন আবদুল্লাহিল কাফী ও তার স্ত্রী কন্যা ও ম. নূরে আলম পাটোয়ারী, মাইনুল ইসলাম মানিক, ফরিদ হাসান, আরিফ রাসেল, কাদের পলাশ, রাকিবুল হাসান, মনিরুজ্জামান বাবলু ও আমি মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া। সবার আনন্দঘন অনুভূতি প্রকাশ শেষে চাঁদপুর রিসোর্ট সেন্টারে আপ্যায়িত হই। ফরিদ হাসানের সমাপ্তি প্রশ্নে ভ্রমণসঙ্গী বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতানা আক্তারের অনুভূতি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ‘অভিমিশ্রণ’।
রবিঠাকুরের ভাষায়, অনেক তিয়াষে করেছি ভ্রমণ, জীবন কেবলি খোঁজা। অনেক বচন করেছি রচন, জমেছে অনেক বোঝা। যা পাইনি তারে লইয়া সাধনা, যাব কি সাগরপার। যা পাইনি তারি বহিয়া বেদনা, ছিঁড়িবে বীনার তার?
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধিষ্ঠিত কক্সবাজার। এখানকার মার্কেটগুলো বিদেশে পণ্যে সয়লাব। বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা করে আনন্দ পাওয়া যায়। বিশেষ করে, চাকমা সুন্দরী রমণীরা সুমিষ্টি হাসি ও অমায়িক ব্যবহার দিয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করে কাঙ্ক্ষিত পণ্য হাতে তুলে দিবে।
স্বাস্থ্য সুখের মূল। ভ্রমণে স্বাস্থ্যের সুস্থতা অত্যাবশ্যকীয়। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য প্রিয় স্বদেশের অন্যতম সুস্বাস্থ্যকর জেলা কক্সবাজার। সুস্থ মন ও সুস্থ দেহের জন্য ঘুরে আসুন সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার।