শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ অমর হোক

মোঃ নূর ইসলাম খান অসি
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ অমর হোক

সংবাদপত্রকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলে অভিহিত করা হয়। একটি সংবাদপত্রে দেশ ও জাতির সকল বিষয়ের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। কম-বেশি সংবাদপত্র প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা, সংবাদপত্র বিষয়ক পড়াশুনা/কোর্স চালু, মুদ্রণশিল্পের অভাবনীয় উন্নতি, উপকরণসমূহের সহজলভ্যতাসহ বিবিধ কারণে দেশে সংবাদপত্রের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটেছে।

রাষ্ট্রের সুপরিচালন ও সুনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সংবাদপত্রের গুরুত্ব ও দায়িত্ব অপরিসীম। রাষ্ট্রের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ওপর সংবাদপত্রের প্রত্যক্ষ হাত নেই বটে, কিন্তু যাঁরা রাষ্ট্রের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত, সংবাদপত্র যুক্তিসহ সুপরামর্শ দিয়ে তাঁদের কাজকে প্রভাবিত করতে পারে । এই জায়গায় সংবাদপত্রের দায়িত্বের কথা উঠে। সংবাদপত্র যদি তার এ দায়িত্ব সুবিবেচনা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে পালন করতে পারে, তবে যারা রাষ্ট্রের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ কাজে প্রত্যক্ষভাবে নিযুক্ত, তারা উপকৃত হতে পারেন। শুধু তাই নয়, সংবাদপত্রের পরামর্শ গ্রহণ করে নিজেদের ভুল-ভ্রান্তিও সংশোধন করতে পারেন। কাজেই, প্রত্যক্ষভাবে না হলেও রাষ্ট্রের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে পরোক্ষভাবে যে সংবাদপত্রের প্রভাব অনেকখানি তা অনস্বীকার্য। তবে রাষ্ট্র ও জাতির কল্যাণই সংবাদপত্রের অন্যতম লক্ষ্য--সেদিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।

আমি ১৯৮৯ সালে গোপালগঞ্জ হতে বদলি হয়ে সপরিবারে চাঁদপুর জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটে যোগদান করি। গোপালগঞ্জ জেলায় তখন হাতেগোণা ২/৩টি সাপ্তাহিক পত্রিকা নিয়মিত/অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো। কিন্তু চাঁদপুর জেলার এসে দেখি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে চাঁদপুর জেলা অনেক এগিয়ে। ঐ সময়ে চাঁদপুর জেলা হতে নিয়মিত ৫-৭টি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে, প্রায় ১০-১৫টি নাট্য ও সঙ্গীত সংগঠন নিয়মিত চর্চা ও অনুষ্ঠান মঞ্চায়ন করছে। আমি ছোটবেলা থেকেই একটু-আধটু লেখালেখি করতাম। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে স্কুল-কলেজে দেয়ালিকা ও ম্যাগাজিন প্রকাশের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। অবশ্য তারপর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও নাট্য আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ি। চাঁদপুর জেলায় এসে আমি লেখালেখি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও নাট্যচর্চার পুনরায় সুযোগ খুঁজে পেলাম। এ কাজে যারা আমাকে তখন আন্তরিক সহযোগিতা করেছিলেন তাদের মধ্যে অ্যাডঃ হরিপদ চন্দ্র বুধা দা, শীতল ঘোষাল, গোলাম কিবরিয়া জীবন, অজিত কুমার মুকুল, শহীদ পাটোয়ারী, কাজী শাহাদাত প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ একটি আঞ্চলিক পত্রিকা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক সংবাদ প্রকাশ করে। পত্রিকাটি যখন প্রকাশিত হয়, তখন এর প্রাণপুরুষ দুজনই ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের খুবই বড়ো মাপের সংগঠক ও নেতা। ভেবেছিলাম এটা শেষ পর্যন্ত দৈনিক বাংলার বাণী, দিনকাল বা জনতাই হবে। এটি একটি আঞ্চলিক দলীয় পত্রিকা হবে। আমার সে ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন অত্যন্ত পরিশ্রমী, মেধাবী ও অকুতোভয় নির্ভীক সাংবাদিক জনাব কাজী শাহাদাত। চাঁদপুর কণ্ঠ হাঁটি হাঁটি পা পা করে রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও গুয়াখোলার অফিস, রেড ক্রিসেন্ট ভবন হয়ে এখন চাঁদপুরের প্রখ্যাত চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডাঃ এমএ গফুর স্যারের ভবনে। সগৌরবে মাথা উঁচু করে টিকে আছে ৩০ বছর। এটি সম্ভব হয়েছে অমানুষিক পরিশ্রম, অধ্যবসায়, নিরপেক্ষতা, সততা, নির্ভীকতা ও মানবিকতার জন্যে। চাঁদপুর কণ্ঠ প্রথম থেকেই চাঁদপুর জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সাহিত্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ইত্যাদি প্রতিটি বিষয়ে বর্তমান, অতীত, সমস্যা, সম্ভাবনা অতি যত্ন সহকারে সততার সাথে সচিত্র আকারে দেশবাসীর নিকট উপস্থাপন করে আসছে, যা অত্যন্ত কষ্টকর, তবে গৌরবেরও। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকায় এ যাবৎ আমার বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ৪০-৫০টি প্রবন্ধ ও ৪-৫টি কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। আমাকে মনে রাখার জন্যে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ ৩০ বছরপূর্তি উপলক্ষে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করতে যাচ্ছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত। আমি এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এজন্যে সম্পাদক, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকল শ্রেণীর কলাকুশলীকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা, অভিনন্দন, শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা।

লেখক : সাবেক পরিচালক (অপারেশন), সিপিপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ঢাকা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়