শুক্রবার, ০৬ জুন, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫, ২৩:০৩

ঈদকে ঘিরে টুংটাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছে কামার পাড়া

বিশেষ প্রতিনিধি
ঈদকে ঘিরে টুংটাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছে  কামার পাড়া

পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ব্যস্ত হয়ে পড়ছে দেশের প্রাচীন একটি পেশাজীবী শ্রেণি 'কামার সম্প্রদায়'। কামারপাড়ায় দিনরাত যেনো এক হয়ে গেছে। ধুপধাপ আর টুংটাং হাতুড়ির শব্দ, লোহা পেটানোর ঝনঝনানি আর আগুনের আঁচে গলে যাওয়া লোহার তাপ যেন জানান দেয় ঈদুল আযহা আসছে।

চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজার, নতুন বাজার, আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়কের তালতলা, হাজীগঞ্জ, মতলব, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এমন বহু কামারপাড়া রয়েছে, যেখানে এখন চলছে চরম ব্যস্ততা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কামাররা দা, ছুরি, চাপাতি, বটি, ছেনি তৈরি কিংবা শান দেয়ার কাজ করছেন। এসব কামারপাড়ায় ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। অনেকেই অগ্রিম অর্ডার দিয়ে দিয়েছেন।

৪ জুন ২০২৫ (বুধবার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর শহর এবং শহরের বাইরের বিভিন্ন স্থানের কামারপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ধুপধাপ পেটাচ্ছেন লোহা, কেউ কয়লার চুল্লিতে গরম করছেন অস্ত্র, কেউ আবার রোদে বসে পুরানো দা-ছুরি শান দিচ্ছেন। চারপাশে ছড়িয়ে আছে টুংটাং শব্দ, আগুনের তাপ আর ঘামের গন্ধে মিশে থাকা পরিশ্রমী কামার।

দীপক কর্মকার নামে এক কামার বলেন, সারাবছর কাজ কম থাকে। কিন্তু কোরবানির ঈদে যেন পুরো বছরের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার সময় আসে। এখন কাজের চাপ এতো বেশি যে, খাবার খাওয়ার সময়ও ঠিকমতো পাই না। তার ছেলে জানান, বাবার সঙ্গে আমিও এসব তৈরিতে হাত লাগাই। দিনে অন্তত ৫০-৬০টা ছুরি-বটি তৈরি করি। গরমের মধ্যে কাজ করাটা কষ্টকর হলেও ঈদ আমাদের কাছে একটা আশীর্বাদ।

ক্রেতাদের মধ্যেও দেখা গেছে ভিন্ন রকম উন্মাদনা। অনেকে নতুন ছুরি-বটি কিনতে, আবার কেউ পুরোনো জিনিস শান দিতে আসছেন। আবার কেউ কেউ নিজেদের লোহা দিয়ে দা, ছেনি, ছুরি বানানোর জন্যে অর্ডার দিচ্ছেন।

তবে আগের তুলনায় এবার দামও কিছুটা বেড়েছে । গুণগত মান ও শান দেখে দরদাম চূড়ান্ত করেন অনেকে।

চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার এলাকার এক ক্রেতা নাজমুল হাসান বলেন, কামারদের তৈরি দা-ছুরি টেকসই হয়। দাম কিছুটা বেশি হলেও কাজে সেরা। তাই প্রতিবছর এখান থেকেই নিয়ে যাই।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও কোরবানির ঈদের আগেই ছুরি-বটি নিতে এসেছি। কামারপাড়ার জিনিস ভালো হয়। দাম একটু বেশি হলেও মানে গুণে বুঝে নেয়া যায়।

কামাররা জানান, কোরবানির ঈদের ১০/১২ দিন আগেই তাদের মূল সময়। এ সময়েই তারা এসব তৈরি এবং মেরামত করে মূল আয় করে থাকেন।

আসছে পবিত্র ঈদুল আজহাকে ঘিরে প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রেখে কামারপাড়ার মানুষগুলো আগুনে লোহা ও হাত পুড়িয়ে তৈরি করছেন কোরবানির ঈদের অপরিহার্য বিভিন্ন লোহার সরঞ্জাম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়