বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ২২:০৮

জেলা পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা

সচেতন না হলে আমরা খাদ্যের বদলে বিষ খাবো --যুগ্ম সচিব আনম নাজিম উদ্দীন

মো. মিজানুর রহমান
সচেতন না হলে আমরা খাদ্যের বদলে বিষ খাবো --যুগ্ম সচিব আনম নাজিম উদ্দীন

চাঁদপুরে

জেলা পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ কর্মশালার আয়োজন করে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম সচিব) আনম নাজিম উদ্দীন। এ সময় তিনি নিরাপদ খাদ্যের বিভিন্ন দিক এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গৃহীত জনসচেনতার পরিকল্পনা ও কার্যক্রম তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, পিপিএম।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ চাঁদপুর জেলা অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম।

এরপর নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরেন

নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. আইয়ুব হোসেন।

বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু তাহের, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. জুবায়ের হোসেন, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশা, জেলা মৎস্য দপ্তরের প্রিয়াঙ্কা সাহা প্রমুখ।

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রভাতী কাগজের সম্পাদক আব্দুল আউয়াল রুবেল, ক্যাব সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান, বিপ্লব সরকার, চাঁদপুর লেডি প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাম্মাৎ মোরশেদা ইয়াসমিন, হাজীগঞ্জের বালাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ হাই স্কুল এন্ড কারিগরি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খোদেজা বেগম, মতলব দক্ষিণের হযরত শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন,

চাঁদপুর জেলা বেকারি মালিক সমিতির সভাপতি এসএম জয়নাল আবেদীন ও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আখন্দ।

কর্মশালায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী, খাদ্য ব্যবসায়ী সমিতি ও এনজিও প্রতিনিধি, শিক্ষক, গণমাধ্যম কর্মী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম সচিব) আনম নাজিম উদ্দীন বলেন, মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেজাল এবং দূষণমুক্ত নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি সাংবিধানিক অধিকার। তা নিশ্চিতকরণে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ করা হয়। এছাড়া ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী নিরাপদ খাদ্য, ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতকরণে প্রশিক্ষণ, জনসচেনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে অন্যান্য কাজ করছে।

যুগ্ম সচিব বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে অবশ্যই ভালো ও উন্নতমানের বীজ তৈরি করতে হবে। কৃষি বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে খাদ্য ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে নিয়ম কানুন বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে। কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশকের প্রয়োগ কমাতে হবে। জৈব সারের প্রয়োগ বাড়াতে হবে। ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমনে কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে পোকা দমন ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। প্রতিনিয়ত মনিটরিং এবং হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক কর্মচারীদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে যে আইন আছে তা প্রয়োগ করতে হবে এবং শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা যদি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে না পারি, খাদ্যের বদলে বিষ খাবো, নিরাপদ খাদ্য পাবো না। এক্ষেত্রে আগে নিজ পরিবার থেকে শুরু করে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সভাপ্রধানের বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, খাদ্য যদি নিরাপদ না হয় তাহলে তা খাদ্য নয়। খাদ্যকে নিরাপদ হওয়া উচিত সবার আগে। কারণ খাদ্য থেকে বিরত থাকার কোনো উপায় নেই। তবে খাদ্য নিয়ে আমাদের মাঝে অসচেতনতা আছে। জনসচেতনতাই পারে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে। অনিরাপদ খাদ্যের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমরা চাই প্রতিটি মানুষ নিরাপদ খাদ্য পাক। এটাই আমরা চেষ্টা করবো। এ ব্যাপারে আমাদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন কাজ করছে। তিনি বলেন, সুস্থ থাকতে চাইলে নিরাপদ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণের বিকল্প নেই। নিরাপদ খাদ্যের জন্যে খাদ্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী যারা আছেন তাদের এবং ভেজাল খাদ্যে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিষয়ে সিভিল সার্জনের বড়ো ভূমিকা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়