প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০০৭ সালে স্কুল ছাত্র রমজান আলী (৮)কে হত্যার দায়ে আজহারুল ইসলাম রিপন ও আইয়ুব আলী নামের দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন কুমিল্লার আদালত। ১৩ আগস্ট রোববার বিকেলে কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কুমিল্লা নগরীর বিষ্ণুপুর ভূঁইয়া বাড়ির মোঃ বিল্লাল হোসেনের ছেলে মোঃ আজহারুল ইসলাম রিপন (পলাতক) এবং একই জেলার বুড়িচং উপজেলার নারায়ণগসার গাজী বাড়ির মৃত সৈয়দ আব্বাসের ছেলে আইয়ুব আলী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০০৭ সালের ১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে ভিকটিম রমজান আলী খেলাধুলা করতে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়িতে ফিরে না আসায় পরদিন ২ জুলাই বুড়িচং থানায় জিডি এবং এলাকায় মাইকিং করা হয়। ৩ জুলাই অজ্ঞাত ব্যক্তি (আসামী আজহারুল ইসলাম রিপন) মোবাইল করে জানায়, বাদীর ছেলে রমজান আলী ও ভাতিজা সোহাগ ও মাহাবুবদেরকে খুন করার জন্য তিন লাখ টাকা জমি বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু তারা রাজি না হওয়ায় আসামী আইয়ুব আলী গং ভিকটিম রমজাম আলীকে ক্যান্টনমেন্টের দিকে নিয়ে হত্যা করে এবং বলে যে, সেখানে রমজান আলীর লাশ পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে আসামী আজহারুল ইসলাম রিপনের দেখানো মতে রমজান আলীর লাশ উদ্ধার করে বুড়িচং থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে ২০০৭ সালের ৩ জুলাই নিহতের পিতা বুড়িচং উপজেলার নারায়ণগসার গাজী বাড়ির মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে মোঃ হাবিল মিয়া বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত সৈয়দ আব্বাসের ছেলে আইয়ুব আলী ও সোলাইমানের ছেলে মাসুমকে আসামী করে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সদীপ কুমার দাস ও আইয়ুব খান ২০০৭ সালের ১২ আগস্ট আসামি আজহারুল ইসলাম রিপনকে আটক করে ঘটনার তদন্তপূর্বক নগরীর বিষ্ণুপুর ভূইয়া বাড়ির মোঃ বিল্লাল হোসেনের ছেলে আজহারুল ইসলাম রিপন এবং একই জেলার বুড়িচং উপজেলার নারায়ণগসার গাজী বাড়ীর মৃত সৈয়দ আব্বাসের ছেলে আইয়ুব আলী ও সোলাইমানের ছেলে মাসুম ও আবুল হাসেমের ছেলে রনি শরিফুল ইসলাম (২০)-এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী দঃবিঃ ৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন, যার অভিযোগপত্র নং- ২৯। তৎপর মামলাটি বিচারে আসলে ২০০৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আসামীগণের বিরুদ্ধে দণ্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় চার্জগঠন শেষে রাষ্ট্র পক্ষের ২২জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামী আজহারুল ইসলাম রিপনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামী আজহারুল ইসলাম রিপন ও আসামী আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যককে বিশ হাজার টাকা অর্থ দণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী এপিপি মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমরা (বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ) আশা করছি, উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রেখে শীঘ্রই বাস্তবায়ন করবেন। এর ফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোঃ মফিজুল ইসলাম।