প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
হাজীগঞ্জে ইসলামিয়া মডার্ন হাসপাতালে সিজারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগের সপ্তাহ না পেরুতে এবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে আকলিমা আক্তার (২০) নামের এক প্রসূতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ উঠেছে হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারস্থ সেন্ট্রাল হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক ল্যাবের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী নারী হলেন হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের পশ্চিম হাটিলা গ্রামের সরানিয়া বাড়ির নবীর হোসেনের স্ত্রী আকলিমা আক্তার।
ভুক্তভোগী নারীর অভিভাবকদের সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর থেকে আকলিমার গর্ভজাত শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লায় নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে ৪ দিন থাকার পর শিশুটির মাকে ১৮ মার্চ রিলিজ দেয় সেন্ট্রাল হাসপাতাল। কিন্তু সিজারের স্থানে সেলাই না করেই হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রসূতির বাবা আব্দুল মান্নান। এতে করে কাটা স্থানে ইনফেকশন দেখা দেয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আকলিমা আক্তারকে কুমিল্লা নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন এবং কাটা স্থানে সেলাই করানো হয়েছে বলে আমাদেরকে জানান। যার ফলে আমরা আর খোঁজ-খবর নেইনি। সিজারের প্রায় একমাস পর (১৪ এপ্রিল) পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসে দাবি করেন, সিজারের পর কাটাস্থানে সেলাই করা হয়নি।
এদিকে গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রসূতির মা, বাবা ও নিকট আত্মীয়-স্বজনেরা হাসপাতালে এসে আকলিমা আক্তারের কাটা স্থানে সেলাই না করার কারণে তার অবস্থা মরণাপন্ন (সঙ্কটাপন্ন) বলে জানান। তবে তারা আকলিমা আক্তারকে নিয়ে আসেননি। তিনি শাহরাস্তির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান পরিবারের লোকজন। এ সময় আকলিমার মা ও বাবা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। টাকার অভাবে মেয়ের ভালো চিকিৎসা করাতে পারছি না। মেয়েটা ব্যথা ও অসহ্য যন্ত্রণায় সারাদিন কান্নাকাটি করে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ জহিরুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সিজারের ৫ম দিন আকলিমাকে রিলিজ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে থাকাবস্থায় সেলাইয়ের স্থানে ইনফেকশন দেখা দিলে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা কাটাস্থানে নিয়মিত ড্রেসিং করি। তিনি বলেন, কাটাস্থানের অবস্থার উন্নতি হলে পরবর্তী সময়ে আকলিমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলি। কিন্তু তারা আসেন নি। এমনকি আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, কুমিল্লা নিয়ে তার চিকিৎসা করানো হয়েছে। অথচ সিজারের প্রায় একমাস পরে এসে পরিবারের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। তিনি আরো বলেন, তারপরও আমরা বলেছি আকলিমা আক্তারকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন, আমরা তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো। কিন্তু পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে আনবেন না বলে আমাদেরকে সাফ জানিয়ে দেন।