প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৭
এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসাব্যঞ্জক
চাঁদপুরে ৪০০ নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হবার ঘটনাটি চাঁদপুরবাসীকে বেশ আন্দোলিত করেছে। এ ব্যাপারে চাঁদপুর কণ্ঠের ক্রীড়া প্রতিবেদক চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম লিখেছেন, ‘সুস্থ দেহ সুস্থ মন, হাঁটবো আমি যতক্ষণ’ এই স্লোগানে চাঁদপুরে এই প্রথম ৪০০ নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে হাঁটা ম্যারাথন (ওয়াকথন) প্রতিযোগিতা। শনিবার (২৩ নভেম্বর ২০২৪) সকাল সাড়ে ৬টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিযোগিতার আয়োজন করে শহরের ক্রীড়া ও সামাজিক সংগঠন একটি উদ্যোগের ‘চলেন হাঁটি’। খুবই মনোরম পরিবেশে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন ও পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুর রকিব, পিপিএম। প্রতিযোগিতায় বয়সভিত্তিক অংশগ্রহণকারী নারী ও পুরুষের ৪টি দল অংশগ্রহণ করে। ১৫-৪৫ এবং ৪৬ থেকে ৭৫ বছর বয়সী পুরুষের দুটি দল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শহরের বিভিন্ন সড়কে ৬ কিলোমিটার হাঁটেন। একই বয়সী নারীদের দুটি দল শহরের ৩ কিলোমিটার সড়ক হেঁটে কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শেষ করেন। হাঁটা শেষে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সদস্যসহ অন্যান্যের জন্যে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের চিকিৎসকরা। এ সময় বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়।
|আরো খবর
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আলম পলাশের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সুস্থ থাকার জন্যে হাঁটা যেমন প্রয়োজন, তেমনি মনকে ভাল রাখার জন্যে ভাল পরিবেশে আসতে হবে। নানা কাজ শেষে সকালে যখন হাঁটবেন এবং সবার সাথে দেখা হবে, তখন নিজের নানা বিষয়ে কথা হলে মন হালকা হবে এবং ধীরে ধীরে মন সুস্থ হতে থাকবে। হাঁটার জন্যে যখন সকলে একত্রিত হবেন তখন নিজেদের মধ্যে একটি সামাজিক বন্ধন তৈরি হবে। এটিও আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুর রকিব, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত ও চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ৪টি দলের ৩জন করে ১২জন বিজয়ীকে সনদ, মেডেল ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষকতা করেন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক এন এম খান মুরাদ।
নিতান্তই ব্যক্তি উদ্যোগে চাঁদপুর শহরে সব বয়সী মানুষকে নিয়ে অনেক অর্থ ব্যয় করে শনিবার যে ম্যারাথন প্রতিযোগিতাটি হয়ে গেলো, সেটি নিতান্তই প্রশংসাব্যঞ্জক। যেখানে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা অনেক স্থাপনা, সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও রুটিন কর্মসূচির বাইরে কিছু করতে পারে না, সেখানে 'চলেন হাঁটি' নামের একটি অর্ধ বছর বয়সী সংগঠন বিদগ্ধ সাংবাদিক আলম পলাশের নেতৃত্বে যা করে দেখালো, সেটিকে তাক লাগানো কিছু বললেও কম হবে। চাঁদপুর সরকারি কলেজের মনোরম পরিবেশে নিরাপদে হাঁটার যে সুযোগ কলেজ কর্তৃপক্ষ 'চলেন হাঁটি'র মাধ্যমে শহরবাসীর জন্যে করে দিলো, সেটি অনেক বড়ো কিছুই বটে। এজন্যে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নাগরিকবান্ধব, স্বাস্থ্যবান্ধব ইত্যাদি অভিধায় আখ্যায়িত করলে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। নিজেদের পরিপাটি আঙ্গিনাকে শিক্ষার্থীদের বাইরে শহরের সাধারণ নাগরিকদের প্রতিদিন ব্যবহার করতে দেয়ার এমন ঔদার্য কতোটি প্রতিষ্ঠানের আছে!?