প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ০০:০০
আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে অক্সিজেনের সঙ্কট যাচ্ছে। আইসোলেশন ইউনিটে রোগী বাড়তে থাকায় অক্সিজেনের এই সঙ্কট। আবুল খায়ের গ্রুপ থেকে অক্সিজেনের সাপোর্ট দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। এখন প্রতিদিন গড়ে একশ’ রোগী ভর্তি থাকছে। এদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রোগীকে অক্সিজেনের সাপোর্ট দিতে হয়। কখনো কখনো ৭০ ভাগ রোগীর অক্সিজেনের সাপোর্ট লাগে। এ অবস্থায় হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নবনির্মিত লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট চালুই হচ্ছে এর একমাত্র সমাধান। তবে কবে নাগাদ এটি চালু হবে তা সিভিল সার্জনসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছেন না। অথচ প্লান্টের কাজ শতভাগ শেষ। এখন শুধু অক্সিজেন সাপ্লাই কর্তৃপক্ষ লিকুইড অক্সিজেন এনে প্লান্টে সংযোগ করলেই এটি চালু করা যাবে। তখন পুরো হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করা যেতো। কিন্তু অক্সিজেন সাপ্লাই কর্তৃপক্ষ স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল এখানে মনে হচ্ছে কিছুটা ব্যর্থ। তার কারণ হিসেবে ধারণা করা যাচ্ছে, তাদেরও অক্সিজেন সঙ্কট চলছে। চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহর সাথে এ বিষয়ে কথা বলে অনেকটা এমনই বুঝা গেছে।
চাঁদপুর জেলায় এখন করোনার সংক্রমণ চরমভাবে ঊর্ধ্বগতি। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের হার হয়েছে ৫৫.৫৫ শতাংশ। প্রতিদিন ১শ’র উপরে শনাক্ত হচ্ছে। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকছে একশ’র মতো। সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সাথে তৃতীয় তলাকেও আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। তারপরও রোগীর চাপ সামাল দেয়া যাচ্ছে না। সিট পরিপূর্ণ থাকায় ফ্লোরে রোগী রাখা হচ্ছে। রোগীর চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে যায়।
এদিকে আবুল খায়ের গ্রুপ কয়েকদিন ধরে চাঁদপুরের এই হাসপাতালে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করে যাচ্ছে। তাদের ১০ লিটারের সিলিন্ডার দিয়ে হাসপাতালের দুই লিটার ধারণ ক্ষমতার সিলিন্ডার রিফিল করা হয়। এখন তাতে সামাল দেয়া যাচ্ছে না। আজকে সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় আবুল খায়ের গ্রুপের এখানকার অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের টেকনিশিয়ান শাহজালালের সাথে। তাঁর সাথে কথা বলেই জানা গেলো অক্সিজেনের ব্যাপক চাহিদার কথা। তারা হিমশিম খাচ্ছেন বলেও তিনি জানালেন। এ অবস্থায় অক্সিজেন প্লান্টটি যত দ্রুত চালু হবে ততই মঙ্গল হবে বলে তিনি মনে করেন।
নবনির্মিত লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট চালুর বিষয়ে কথা হয় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহর সাথে। তিনি জানান, তাঁদের ডিরেক্টর এবং ইউনিসেফের সাথে তাঁর আজও কথা হয়েছে। প্লান্টের সব কাজ শেষ। এখন স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিকুইড অক্সিজেন আনলেই প্লান্টটি চালু করা যাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে স্পেক্ট্রা সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ বলছে না। সম্ভবত তাদেরও সঙ্কট চলছে। সারাদেশেই তো আসলে অক্সিজেনের সঙ্কট চলছে। তবে আগামীকাল রোববার হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের সাথে এ বিষয়ে বসবেন এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন বলে সিভিল সার্জন জানান।