প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুর সদরের ১৬ জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে ॥ ১ জনের মৃত্যু
চাঁদপুর জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন পরিষদসহ ১৬ জনপ্রতিনিধি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম খান ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় গণপিটুনিতে নিহত হন। এসব জনপ্রতিনিধির বিষয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও তাদের দপ্তরে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তাদের অনুপস্থিতিতে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় কথা হয় চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন রাসেলের সাথে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত অফিসে আসছি। চেয়ারম্যান কবে আসবেন তা বলতে পারবো না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও নিয়মিত অফিস করছেন।
গত দুদিন ধরে সদর উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সদরের বেশ ক’টি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানদের কক্ষ তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে আছেন স্বীকার না করলেও নিরাপদ অবস্থানে আছেন বলে জানান।
গত ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে আছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির সুমন ও পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মধ্যে বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দিন খান, আশিকাটি ইউপি চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারী, কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি, শাহমাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান নান্টু, রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল-মামুন পাটওয়ারী, মৈশাদী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী, তরপুরচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হাসান রাসেল, বাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন, বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটওয়ারী, ইব্রাহীমপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবুল কাশেম খান, চান্দ্রা ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী, হানারচর ইউপি চেয়ারম্যান ছাত্তার রাঢ়ী ও রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ামর্যান হাজী হজরত আলী বেপারী।
বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার বলেন, ৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। আমরা সেবামূলক কাজ প্রস্তুত করে রেখেছি। কিন্তু তার স্বাক্ষর ছাড়া দিতে পারছি না।
আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু বকর মানিক বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর আমাদের পরিষদে ভাংচুর হয়েছে। এরপর থেকে চেয়ারম্যান আত্মগোপনে আছেন। পরিষদে আসেন না।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সেবা প্রত্যাশীরা কোনো দুর্ভোগে যাতে না পড়েন সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেসব জনপ্রতিনিধি উপস্থিত নেই, তাদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।
এদিকে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ৫ আগস্টের আগ থেকেই নিরাপদ অবস্থানে ছিলেন এবং তার বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। তারপর থেকে তার অবস্থান জানা যায়নি। মেয়রের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে পৌরসভার জরুরি সেবামূলক কার্যক্রম চলমান আছে।