প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৪, ০০:০০
পল্লী বিদ্যুতের লোক না হয়েও বিদ্যুতের সব কাজই করেন তিনি!
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান বা নিয়োগকৃত কেউ নন তিনি। অথচ এলাকায় ঘুরে ফিরে বিদ্যুতের সকল কাজ তিনিই করেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনো না কোনো দায়িত্বশীলের নীরব সম্মতিতে ও সহযোগিতায় দিনের পর দিন তিনি বিদ্যুতের পিলারে উঠে সংযোগ দেয়া, সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণসহ সকল কাজ করে চলছেন। তিনি হচ্ছেন সেলিম মিয়া। বাড়ি হাজীগঞ্জের বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে। তার কাজের ক্ষেত্র একই ইউনিয়নসহ তৎসংলগ্ন এলাকায়। এ নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ মতামত ব্যক্ত করেছেন। সেলিম মিয়া এ ইউনিয়নের রায়চোঁ বাজার সংলগ্ন সাবু বাড়ির বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, সেলিম মিয়া স্বেচ্ছায় অথবা নিজ ইচ্ছায়ই এই কাজগুলো করছেন না। তাকে কেউ ডেকে নিলে, কেউ খবর দিলে তবেই তিনি কাজগুলো করে থাকেন। তবে বিনামূল্যে নয়, টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করেন তিনি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরো বলেন, গত প্রায় ২০ বছর ধরে বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বড়কুল, রায়চোঁ ও এন্নাতলী এলাকায় ডিশ ও গত কয়েক বছর যাবৎ ওয়াইফাই (ইন্টারনেট) লাইনের কাজ করে আসছেন সেলিম। যেহেতু ডিশ ও ওয়াইফাই সংযোগের ক্যাবলগুলোর জন্যে বিদ্যুতের খুঁটি ব্যবহার করতে হয়, সে সুবাদে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর লাইনম্যানদের সাথে তার একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
এ সম্পর্কের জেরে সেলিম মিয়া এসব এলাকায় বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর, সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদ্যুৎ বিতরণ বন্ধ রাখা ও চালু করা, ঝড়-তুফানে ও দুর্ঘটনার পর বিদ্যুৎ লাইন চালু করা, গাছ কাটা, বিদ্যুতের নতুন সংযোগ স্থাপন, বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে অর্থাৎ তার সমাধান সংক্রান্ত কাজ করে থাকেন।
স্থানীয় একাধিক লোক অভিযোগ করে জানান, সেলিম মিয়া বিদ্যুতের যে সকল কাজ করেন তা থেকে উপকার পায় এলাকাবাসী। তবে মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায়, খুঁটিতে উঠে সংযোগ দেয়া, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো কাজগুলো সেলিম মিয়া কোন্ ক্ষমতা বলে করেন ?
সম্প্রতি সরজমিনে গেলে সেলিম মিয়ার বেশ কিছু কাজের প্রমাণও পাওয়া যায় এবং তার বাড়িতে গেলে একটি স্টিকও দেখা যায়। ওই স্টিক দিয়ে তিনি খুঁটির কাট-আউট ওঠানামা করেন। যা সম্পূর্ণ রিস্কি এবং পল্লী বিদ্যুতের লোকজন ছাড়া ওই স্টিক ব্যবহার অবৈধ।
সেলিম মিয়া অকপটে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি যেসব কাজ করি তা লাইনম্যানদের অনুমতি নিয়েই করি। তারা (লাইনম্যান) বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। এরপর আমি কাজ করি। কাজ শেষে আবার তারা বিদ্যুৎ লাইন চালু করে দেন। স্টিকের ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, এটি আমি বানিয়েছি ডিশ ও ওয়াইফাই লাইনের তার (ক্যাবল) ওঠানামা করার জন্যে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোঃ আতিকুজ্জামান চৌধুরী এ বিষয়ে জানান, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ চালু ও বন্ধ করার জন্যে ব্যক্তিগতভাবে স্টিক তৈরি ও এর ব্যবহার সম্পূর্ণ অবৈধ।