প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ইউএনওর কাছে জীবনের নিরাপত্তা চাইলেন নায়েরগাঁও উবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। গত ৮ ফেব্রুয়ারি নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন এ আবেদন করেন।
আবেদন সূত্রে ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদন দেয়। সে অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের সার্বিক কাজ তদারকি এবং বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনকে সহযোগিতা করে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে চলতি বছরের গত ২৮ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এদিন যথারীতি সকল শিক্ষক বিদ্যালয়ের অফিসে অবস্থান করছিল। এমতাবস্থায় সকাল সাড়ে দশটার দিকে নায়েরগাঁও এলাকার মোঃ রিপন মিয়া, শফিকুল ইসলাম মিয়াজী এবং মালেক সওদাগরের নেতৃত্বে ১২/১৩ জন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি আবু জাফর, মোঃ রাকিব উদ্দিন খান এবং বিথীকা রাণী মণ্ডলকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি, হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি এবং হাত পা ভেঙ্গে দিবে বলে শাসিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এ সময় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিথীকা রাণী মণ্ডলের হাতে ধরে টানাটানি করে তারা। পরে ইজ্জতের ভয়ে বিথীকা মণ্ডল স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয় এবং সেই সাথে আবু জাফরও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু অপর শিক্ষক মোঃ রাকিব উদ্দিন খান স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দীপঙ্কর ঘোষ নামে এক যুবক মোঃ রাকিব উদ্দিন খানকে মারার জন্য এবং তাদের দলে নেতৃত্ব দেয়া শফিকুল ইসলাম মিয়াজী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারার জন্য তেড়ে আসেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক কীভাবে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে তা দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় রিপন ও শফিকুল ইসলামসহ তাদের সহযোগিরা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রিপন মিয়া, শফিকুল ইসলাম মিয়াজী এবং মালেক সওদাগরসহ তাদের দলবল বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে যাদের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছে সেগুলো আমাকে গ্রহণ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তখন আমি অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমাকে হুমকি-ধমকি এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে মারার জন্য তেড়ে আসে। আমি তখন তাদের এ ধরনের আচরণে মনক্ষুণ্ণ হয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিষয়টি অবহিত করি। তখন বিদ্যালয় পরিদর্শক আমাকে জানান ম্যানেজিং কমিটির কোনো সদস্য পদত্যাগ করলে সভাপতির নিকট পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। বিষয়টি আমি তাদেরকে জানালে তারা ওইদিন চলে যায়। পরবর্তীতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিদ্যালয়ের পূর্বদিকের প্রবেশ গেটে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু জাফর স্যারের সাথে তাদের দেখা হওয়ার পর আবু জাফর স্যারের সাথে তারা খারাপ আচরণ করে এবং তাকে শাসিয়ে ভয় দেখিয়ে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আমি জানতে পারি। তখন আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং ওসি মহোদয়কে অবহিত করি। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের পরিবার পরিজনও শঙ্কায় আছেন।
এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা সুলতানা বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। অভিযোগটি থানায় মার্ক করে দিয়েছি।