বুধবার, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ ও অশ্লীল ভিডিও তৈরি: নারী সদস্য গ্রেফতার
  •   বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাড়িবহরে হামলা, আহত ২০
  •   তারেক রহমানের ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা নতুন উদ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে একযোগে কাজ করার আহ্বান
  •   নববর্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আতশবাজি ও পটকার শব্দে কম্পিত রাজধানী
  •   চাঁদপুর শহরে গ্যাস লাইনে ফাটল: বিপদজনক পরিস্থিতি, রাস্তায় আতঙ্কিত জনতা

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

ওরা ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশকে ভয় পায়, করোনাকে নয়
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিজিবি কিংবা পুলিশ দেখামাত্র সবাই ধাম ধাম করে দোকানের সার্টার নামিয়ে দেয়। দোকানের সামনে সারাক্ষণ পাহারাদার বসিয়ে ১/২ সার্টার অর্ধেক নামিয়ে ধুমছে বিকিকিনি করে, মাস্কহীনরা পকেট থেকে ত্বরিতগতিতে মুখে মাস্ক লাগিয়ে নেয় কিংবা যাদের থুতনির নিচে মাস্ক নামানো থাকে তারা দ্রুত মাস্ক তুলে মুখ ঢেকে নেয়। পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে ৯০ ভাগ মানুষ এমন করে। এ যেনো ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশকে ভয় পাওয়া, করোনাকে নয়। এমন চিত্র লকডাউন সময়কার নিত্যদিনের।

করোনা ভাইরাস সংত্রমণ থেকে জাতিকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে চলমান লকডাউন আরও ৫ দিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। যতোই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততোই সাধারণ মানুষ কিংবা ব্যবসায়ীদের করোনা উপেক্ষা করার প্রবণতা প্রবল হয়ে উঠছে। কিছুতেই কাউকে মানিয়ে রাখা যাচ্ছে না। যেনো করোনা সরকারের চাপিয়ে দেয়া কোনো একটা কিছু।

লকডাউন চলাকালীন সরজমিনে ঘুরে হাজীগঞ্জ বাজার, আঞ্চলিক মহাসড়ক কিংবা ছোট বাজারগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা পুলিশের উপস্থিতি দেখামাত্র মুহূর্তের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করাসহ সবাই সট্কে পড়তে দেখা গেছে। বাজার থেকে ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ চলে গেলে আবারো জমে উঠে জনসাধারণের হাঁটা-চলাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অবস্থা দেখে মনে হয় ৯০ ভাগ মানুষ করোনাকে ভয় পায় না, ভয় পায় পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটকে। যেনো করোনাকে ঠেকিয়ে রাখার দায় শুধু একা সরকারের, জনগণের কোনো দায়িত্ব নেই।

গত বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ বাজারে এমন বাস্তবচিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশাসন অনেকটাই অসহায়ের মতো। তারা যেনো দিশেহারা। এদিন চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রচুর সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। যেখানে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। তবে চালকরা বাধাপ্রাপ্ত হলেও যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছা কিন্তু থেমে থাকেনি। এক পরিবহন থেকে নেমে কিছু দূর হেঁটে আবার আরেক পরিবহন পেয়ে যাওয়ার কারণে মানুষজন অন্য স্বাভাবিক সময়ের মতো রাস্তায় বেরিয়ে আসছে।

হাজীগঞ্জ বাজারের প্রবেশপথে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট রয়েছে। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের হাজীগঞ্জের পশ্চিম মাথা তথা পৌর বাস টার্মিনাল ও পূর্ব মাথা তথা পৌর ভবনের সামনে চেকপোস্ট রয়েছে। এছাড়া হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ পাড়ে রান্ধুনীমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়রের সামনে আরেকটি চেকপোস্ট রয়েছে। এসব এলাকায় দেখা গেছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এই সকল চেকপোস্টে আসলে পুলিশ যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। আর যাত্রীরা নেমে কিছু পথ হেঁটে ফের ব্যাটারিচালিত বাইক কিংবা রিকশায় করে বাজারের ভেতরে চলে আসে। বাজারে কাজ সেরে একই পন্থায় পুনরায় গন্তব্যে পৌঁছে। ভয় শুধু পুলিশকে। কেনো, কী কারণে চেকপোস্ট বসানো হলো সে চিন্তা মোটেই কারো নেই। চেকপোস্ট পার হতে পারলেই চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠতে দেখা গেছে। এদিন পুলিশ বাধ্য হয়ে বেশ কিছু ব্যাটারি চালিত অটোবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা টোরাগড় এলাকা থেকে আটক করে।

সরজমিনে একই দিন আরও দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজারের ভেতরে ৮০ ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা। বাজারের ভেতরে সড়কের উভয় পাশে তরকারি ও ফলের দোকানগুলোতে মাস্কবিহীন অধিকাংশ ক্রেতার সমাগম। বাজারের সকল মার্কেটের দোকান খোলা থাকাসহ কম-বেশি ক্রেতা দেখা গেছে। তবে পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কখন এসে পড়ে এমন একটা আতঙ্ক দেখা যায় ব্যবসায়ীদের মাঝে। অবস্থাটা যেনো এমন পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেটকে ভয় পায়, করোনাকে নয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, আমরা প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আসছি। করোনা থেকে সতর্ক থাকতে বারবার ব্যবসায়ীদের বলে আসছি। আমরা যতোক্ষণ বাজারে থাকি ততোক্ষণ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়