সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি জনসচেতনতা : সবই চলছে স্বাভাবিক
বিমল চৌধুরী ॥

বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কোভিড-১৯)-এর নূতন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের চলছে ভয়াবহতা। বিশে^র বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু বাড়েনি জনসচেতনতা। সরকারি স্বাস্থ্য বিধি-নিষেধ অগ্রাহ্য করেই চলছে জীবনযাত্রা। ভাবখানা এমন যে, তোমার কথা তুমি বল, শোনা না শোনা আমার ব্যাপার। অবশ্য এমন খামখেয়ালী চলাফেরা প্রতিরোধে প্রশাসনিক ছিটেফোঁটা উদ্যোগ দেখা গেলেও কোনো স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য সচেতনতা রক্ষায় কেউ মাস্ক পরছে, আবার কেউ মাস্ক পরছে না। তবে মাস্ক না পরার সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ বলেই মনে হয়। মাস্ক ব্যবহার না করার পোছনে তাদের যুক্তিও অনেক রয়েছে। তাদের কারো কারো মতে, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় প্রশাসনকেই অধিকতর অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে এবং সর্বক্ষেত্রেই তা কার্যকর করতে হবে। প্রশাসনিক ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না, একদিকে নির্বাচন, মিটিং-মিছিল, ভোটদান, অন্যদিকে চলাচলের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ, হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিধি-নিষেধ, বিদ্যালয়ে বিধি-নিষেধ তা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত তাও বিবেচনায় রাখতে হবে। তবে মাস্ক ব্যবহার না করাসহ স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের নানা যুক্তি থাকলেও হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট সকল ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করেই স্বাভাবিক চলাচলে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।

গত ১৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানিকগঞ্জে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট ও সিটি স্ক্যান মেশিনের কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও লকডাউন দিলে দেশের ক্ষতি হবে বিধায় এখনই লকডাউন দিচ্ছেন না বলে জানান। কিন্তু সরকারের দেয়া ১১দফা বিধি-নিষেধ না মানলে দেশের অবস্থা ভয়াবহ হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করলেও জনমনে বা চলাচলের ক্ষেত্রে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। সকলেই রাস্তাঘাট, হোটেল-রেস্তোরাঁয়, হাট-বাজারে এমনভাবে চলাচল অব্যাহত রেখেছে, যেন করোনা বা ওমিক্রন নামক শব্দটি আমাদের দেশে নেই। অথচ গত একবছর পূর্বেও যখন করোনার ভয়াবহতায় পর্যুদস্ত দেশ তখন আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মানুষ দোয়া চেয়েছেন এর ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেতে। প্রশাসন শক্ত হাতে বাধ্য করেছেন সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে। অথচ বিধি-নিষেধ বা স্বাস্থ্য সচেতনতা রক্ষায় এখন পর্যন্ত সেরকম জোরালো ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। এখন করোনা বা ওমিক্রনের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন, তবে তা মুখে নয় তা ব্যবহৃত হচ্ছে পকেটে। অথচ ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী একটি মাস্ক করোনা বা ওমিক্রন প্রতিরোধে ৯০ ভাগ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেকেই মাস্ক ব্যবহার না করে নিজের পাশাপাশি অন্যজনের স্বাস্থ্য ঝুুঁকির কারণ হয়ে উঠছেন, তা প্রতিরোধে প্রশাসনের কঠোর কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সচেতন মানুষ মনে করেন।

গত ক’দিনে চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েই চলছে। গত ২০ জানুয়ারি জেলার ২৯৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হলে ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ, বর্তমান সময়ে যা খুবই উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বর্তমান সময় প্রায় বাড়ি-ঘরেই হাঁচি-কাশি, জ্বর, মাথাব্যথা দেখা দিলেও অনেকেই স্বাস্থ্যসেবা নিতে হাসপাতালে আসছেন না বিভিন্ন কারণে। যদি করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তাহলে আক্রান্তের সংখ্যাও অনেক গুণে বেড়ে যাবে নিঃসন্দেহে। আবার কেউ কেউ করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ গ্রহণ করে নিশ্চিত হয়েছেন বা তাদের বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। তাদের এই ভুল সিদ্ধান্ত থেকেও অনেকের মনে স্বাস্থ্য বিধি না মানার প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়