প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী ডামাডোল। আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মাঝি হতে প্রস্তুত একঝাঁক প্রার্থী। উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নেও প্রার্থী তালিকা লম্বা কম নয়। কিন্তু তালিকা দেখে নয় বরং নিজের যোগ্যতা, দলের মধ্যে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ও সর্বোপরি মরহুম পিতার রাজনৈতিক এবং এলাকার মানুষের জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়ার ঐতিহ্যকে সাথে নিয়ে নৌকার মাঝি হতে চান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ এ.কে.এম. ইস্কান্দার আলীর পুত্র শাহ আলম শেখ।
বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শকে ভালোবেসে ছাত্রজীবন থেকেই শাহ আলম শেখ ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সম্মানিত সদস্য। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্বপালন করে আসছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রয়াত সদস্যদের সম্মানে গঠিত ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী গুণীজন স্মৃতি সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি ইউনিয়নে সমাজসেবী হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে তার। দলের নির্দেশনা মেনে সময়ে-অসময়ে রাজপথে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইউনিয়নের অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের কাছে রয়েছেন সবসময়।
ছাত্রজীবন থেকেই শাহ আলম শেখের রাজনীতির হাতেখড়ি। ১৯৭৯ সালে ধানুয়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্বে আসেন। পরে ১৯৮৪ সালে পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য, ১৯৮৭ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথের লড়াকু সৈনিক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
একই সাথে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত বিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে ২০০২ সালে গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব লাভ করে আওয়ামী লীগের মূল রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে চাঁদপুরস্থ ফরিদগঞ্জ ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য, জামেয়া আহম্মাদিয়া মুজাদ্দেদীয়া সাইফিয়া দারুস সুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা চান্দ্রা দরবার শরীফের কার্যকরী সদস্য, দিঘলদী জামে মসজিদের সভাপতি, ডাঃ ইস্কান্দার আলী স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক, সাইফিয়া আঞ্চলিক কমিটি চান্দ্রা দরবার শরীফের সভাপতি এবং নিরাপদ সড়ক চাই ফরিদগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
কোভিড-১৯ মহামারীকালীন সময়ে গরিব অসহায়দের মাঝে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ এবং মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান বিতরণ ছাড়াও মহামারীর দ্বিতীয় পর্যায়ে এলাকার জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সচেতনতামূলক সভা করেছেন। শীতের সময় দুঃস্থদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেছেন। মাদকবিরোধী অভিযানে প্রশাসনের সাথে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
শাহ আলম শেখের পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ এ.কে.এম ইস্কান্দার আলী ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি নিজ ইউনিয়ন তথা গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ধানুয়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন। পরে তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনও করেন। তিনি ধানুয়া মা ও শিশু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিকল্পনাকারী। এছাড়া মসজিদ, সামাজিক সংগঠনসহ নানা কাজে সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন।
পিতার কথা বলতে গিয়ে শাহ আলম শেখ বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বারবারই স্বৈরাচার সরকারের রোষানলে পড়ে আমার বাবা আমাদের পরিবারের প্রতি যতœবান হতে পারেননি। এমনকি আমাদের ভরণ-পোষণ এবং লেখাপড়ার খরচও চালাতে পারেন নি। স্বৈরাচার সরকারের বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাবও আদর্শের কারণে প্রত্যাখ্যান করেন। দল ক্ষমতায় আসার পরও তিনি দল থেকে কোন প্রকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন নি। সমগ্র রাজনৈতিক জীবনেই তিনি দল ও মানুষের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন। কিন্তু আমরা তার উত্তরসূরি হিসেবে দলের প্রতি তার একনিষ্ঠতা দেখে সকল কিছুই সহ্য করে গিয়েছি।
নির্বাচন ও নিজের বিষয়ে শাহ আলম শেখ জানান, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শকে ভালবেসে ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ি। আমার বাবার মতো দলের নির্দেশনা মেনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও আমার বাবার আদর্শ নিয়েই জনগণের পাশে থাকতে চাই। আমার নেত্রী সর্বদাই যোগ্য ও ত্যাগীদের মূল্যায়ন করেছেন। আশা করছি সেই হিসেব করলে নৌকার মাঝি হতে আমি পারবো। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌকার প্রতি দুর্বল। তিনি নৌকা যাকে দিবেন, তার সাথেই থাকবো। আমি সব সময় নৌকার পক্ষে ছিলাম-আছি-থাকবো।