প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নে বইছে ব্যাপক নির্বাচনী হাওয়া। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫জন প্রার্থীর মধ্যে তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লালের নৌকা মার্কার সমর্থকরা মাঠ গরম রেখেছে। তাঁর পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো ইউনিয়ন।
অন্য প্রার্থীদের পোস্টার নজরে পড়লেও তাদের নির্বাচনী গণসংযোগ বা প্রচার-প্রচারণা করতে তেমন একটা দেখা যায়নি। যুবদল নেতা স্বতন্ত্র পরিচয়ে চশমা মার্কার প্রার্থী মোঃ বরকত উল্লাহ খান গত ২/৩ দিন মাঠে নামলেও জোরালোভাবে মাঠ গরম করতে পারেন নি। একমাত্র নৌকা মার্কার প্রার্থী বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল গণসংযোগ, সভা ও মিটিং করে যাচ্ছেন। চায়ের দোকানগুলোতে নৌকা মার্কার আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্য প্রার্থীদের আলোচনা তেমন একটা নেই। সকলেই এক বাক্যে বলছেন, নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লালকে আবারো তারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন। তাতে পুরো ইউনিয়নে উন্নয়নের জোয়ার আবারো বইবে।
এই ইউনিয়নটি পীর অলিদের ইউনিয়ন। ইউনিয়নে ৮/৯ জন হক্কানী পীর চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে যারা প্রার্থী হয়েছেন : আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল (নৌকা), বরকত উল্লাহ খান (চশমা), মানিক মিয়া (আনারস), মোঃ মুনসুর বেপারী (গোলাপ ফুল) ও হাফেজ মোঃ নেয়ামত উল্লাহ গাজী (হাত পাখা)।
নৌকা প্রতীকের মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল ছাড়া অন্য প্রার্থীদের সাথে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের মধ্যে সেই আগ্রহ দেখা যায় নি। এর মধ্যে মোঃ বরকত উল্লাহ খান কিছুটা আগ্রহ নিয়ে কথা বলেন প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে।
প্রার্থী বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আমি করোনাকালীন সময় করোনাকে ভয় করিনি। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সত্য ও ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে এবং পরিষদকে একটি মডেল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার জন্যে আগামী দিনগুলোতে কাজ করতে চাই। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আগামী ১১ নভেম্বর নির্বাচিত হলে পরিষদের সেবার মানের দিকে আমার বেশি লক্ষ্য থাকবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে অসহায় হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্যে শিক্ষা সহায়তা প্রকল্প গঠন করবো। এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত, শিক্ষিত ও বেকার যুবকদের জন্যে প্রশিক্ষণ ও কর্মমুখী কার্যক্রম গড়ে তোলা ও হতদরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলবো।
তিনি বলেন, আমি তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আমার সাধ্যমতো আপ্রাণ চেষ্টা করে ইউনিয়নের অনেক কাজ করেছি। গরিব দুঃখী মানুষের পাশে ছিলাম এবং থাকবো। এমনকি সকল শ্রেণির মানুষের পাশে সবসময় ছিলাম, এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। আমার ইউনিয়নের সকল জনগণকে আমি এক দৃষ্টিতে দেখি। যারা মাদকের সঙ্গে যুক্ত তারা সমাজের শত্রু আমারও শত্রু। মাদকের সঙ্গে কোনো আপস নেই। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে রূপান্তরিত করবো।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ বরকত উল্লাহ খান বলেন, আমি জনগণের সেবা করার জন্যে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি। সরকারের দেয়া উন্নয়নমূলক যত কাজ আছে সকল কাজ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
চেয়ারম্যান প্রার্থী মানিক মিয়া বলেন, আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে মাদক, বাল্যবিয়ে ও দারিদ্র্যমুক্ত ইউনিয়ন গড়ে তুলবো।
মুনসুর বেপারী বলেন, দলের সিদ্ধান্তের উপর প্রার্থী হয়েছি। দল যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটাই পালন করবো। আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমি নির্বাচিত হলে মাদক, বাল্যবিয়ে, দারিদ্র্যমুক্ত আধুনিক ইউনিয়ন গড়বো।
ইসলামী আন্দোলনের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফেজ মোঃ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত ডিজিটাল ইউনিয়ন গড়ার মাধ্যমে জনগণের সেবায় আমি নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে হাত পাখার বিজয় নিশ্চিত।
নির্বাচন নিয়ে কথা হয় ইউনিয়নের ভোটারদের সাথে। আলহাজ্ব আবদুল বারেক গাজী বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমাদের ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লালের নাম সর্বত্র শোনা যাচ্ছে। এবারও নৌকা মার্কার প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন ইনশাআল্লাহ। সকলেই নৌকা মার্কার প্রার্থীর কথা বলছেন। ইউনিয়ন জুড়ে উন্নয়ন, সকল শ্রেণির মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে ছিলেন চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বিল্লাল। তিনি পুরো ইউনিয়নে জনসংযোগ, সভা, মিটিং করে যাচ্ছেন। অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তেমন কোনো প্রচারণা নেই বললেই চলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কজন মুরুব্বি বলেন, আমাদের ইউনিয়নে এবারও নৌকা মার্কার জোয়ার বইছে। নৌকা মার্কার প্রার্থী বিজয় লাভ করবে। আমরা নৌকা মার্কায় ভোট দিবো।
সরজমিনে বাগাদী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ইউনিয়ন জুড়ে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। রাস্তা-ঘাট, দোকান ও বাজার জুড়ে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। চায়ের দোকানগুলোতে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা চলছে।