প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
আইন মোতাবেক সদর উপজেলাতেই স্থাপিত হবে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
নানা অপপ্রচারে ক্ষোভ বাড়ছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বাধাগ্রস্ত করার জন্যে নানা চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন চাঁদপুরবাসী। বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর এমন অপচেষ্টায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে জেলার সচেতন মহল ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদনের পর প্রাথমিক স্থান নির্ধারণ করা হয়। এরপর খসড়া আইন পাস হয় মন্ত্রিসভায়। পরবর্তীতে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয় জাতীয় সংসদে। প্রকাশিত হয়েছে এ সংক্রান্ত সরকারি গেজেট।
|আরো খবর
আইন অনুযায়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে স্থান নির্ধারণ করা হয় চাঁদপুর সদর উপজেলায়। বিশ্ববিদ্যালয় ও মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক টিমের পর্যবেক্ষণ, মতামত এবং সুপারিশের ভিত্তিতে ভৌগোলিকসহ নানা কারণে ৩ জেলার সাথে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় সুবিধাজনক স্থান হিসেবে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে খাসজমিসহ ৬২ একর প্রায় খালি জায়গায় চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি অধিগ্রহণের নিয়মানুয়ায়ী ৫০ বিঘার বেশি জমি অধিগ্রহণ করতে হলে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবিত এলাকায় স্থাপনের জন্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্যে ফাইল অনুমোদন প্রদান করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর ভূমি মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ে জমি অধিগ্রহণের জন্যে নির্দেশনাও প্রদান করে।
এরই ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত স্থানে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ এবং স্থাপনা নির্মাণসহ অন্যান্য কার্যক্রম চূড়ান্তভাবে শুরু করার উদ্যোগ নেয়ার সময়ে শুরু হয়েছে নানা অপপ্রচার আর বাধাগ্রস্ত করার নানা চক্রান্ত। এ চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে জেলা সদর বাদ দিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার দাবি জানানো হয়। অথচ প্রস্তাবিত স্থানে প্রত্যাশী সংস্থার চাহিদার প্রেক্ষিতে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ভূমি মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন। কারণ, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০২০-এর বিধান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় হতে হবে চাঁদপুর সদর উপজেলার মধ্যে। আইনের ১৬নং ধারার ৩-এর ১ ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে : চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলায় চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Chandpur Science and Technology University) নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইবে।
২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্যে সংসদে বিল পাসের প্রস্তাব করেন চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর) আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। শিক্ষামন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সংসদে বিল পাস হয়। এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খসড়া আইনটি পাস হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে।
২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিধ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. নাছিম আখতারকে নিয়োগ দেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যখন একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার সময়, ঠিক সে সময়ে স্থান পরিবর্তনের দাবি তোলায় জেলার সচেতন মহল চরমভাবে ক্ষুব্ধ।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের গাছতলা এলাকায় চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্যে স্থান চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হলেও একটি কুচক্রী মহল চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের স্থান পরিবর্তন করার নানা দাবি তোলে। এসব অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রের কারণে গেলো ৪ বছরেও দৃশ্যমান হয়নি চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ। ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকা-।
অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের ন্যায় ‘লাল ফিতায়’ চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কেও বন্দী করার জন্যে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে তোয়াক্কা না করে, নানা অপপ্রচার ও চক্রান্ত শুরু করেছে এবং নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাশাপাশি বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।