প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর শিক্ষক মাহমুদ আলম লিটন গতকাল দুই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকতা করছেন। সকালে তার এমপিও পদের প্রতিষ্ঠান লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার রায়পুর কামিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন ও ক্লাস পরিচালনা করেন। এরপর দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে ৪টা পর্যন্ত বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস পরিচালনা করেন। জানা যায়, এদিন পূর্ব ঘোষিত ক্লাস রুটিন অনুযায়ী ১টা ৫০মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দ্বাদশ শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ‘খ’ শাখা ও ২টা ৩০ থেকে ৩টা ১০ পর্যন্ত ‘ক’ শাখার ক্লাস পরিচালনা করেন।
মাহমুদ আলম লিটনকে নিয়ে কথা হয় রায়পুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সাথে। তিনি জানান, লিটন তার মাদ্রাসার ইংরেজি শিক্ষক। তিনি প্রতিদিনের ন্যায় আজকেও ইংরেজি ক্লাস করেছেন। ২০১২ সালে ইংরেজি প্রভাষক পদে তিনি এ মাদ্রাসায় নিয়োগ লাভ করেন। তিনি বলেন, এই মাদ্রাসাটি পুরানো মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসায় তাকে প্রথম ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। এখন তার পাশাপাশি আরো দুজন পার্টটাইম ইংরেজি শিক্ষক আছেন। ‘মাহমুদ আলম লিটন বাবুরহাট স্কুল ও কলেজে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন এ বিষয়টি আপনি জানেন কি’ এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। তবে আজকে আমি কয়েকজনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি তিনি ওই স্কুল ও কলেজে শিক্ষকতা করেন। আমার এখানে তো তার ক্লাস সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত, তারপরও তিনি ওখানে কিভাবে ক্লাস করেন বিষয়টি আমি দেখবো এবং আমি তাকে বলে দিয়েছি, আমার মাদ্রাসায় নিয়মিত ক্লাসে থাকতে হবে।
চাঁদপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক বা প্রভাষক চলমান পদ ছাড়া অন্য কোনো লাভজনক পদে চাকুরি করতে পারবেন না।
মাহমুদ আলম লিটন গতকাল সোমবার বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে দুপুরে যোগদান ও ক্লাস পরিচালনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি অনেকটা দম্ভ করে গতকাল ক্লাস পরিচালনা করেছেন বলে জানা যায়। ক’জন স্কুল ও কলেজ শিক্ষকের শক্তিতে তিনি এ ধরনের নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
মাহমুদ আলম লিটনের বিষয়টি গতকাল বাবুরহাটসহ চাঁদপুর শহরে শিক্ষক-অভিভাবক সমাজে বেশ সমালোচিত হয়েছে এবং বিষয়টির দ্রুত সমাধানের জন্যে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
উল্লেখ্য, শিক্ষক মাহমুদ আলম লিটন সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে, সংশ্লিষ্ট সকলকে ম্যানেজ করে দীর্ঘ ৯ বছর দুই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করে বেতন ভোগ করছেন। রোববার ১৭ মাস পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও নিজের এমপিও পদে যোগদান না করে খণ্ডকালীন পদে যোগদান ও ক্লাস পরিচালনা করেন।
কীভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন? তিনি কি বৈধভাবে দু’টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন? চাঁদপুর কণ্ঠের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব প্রশ্নের উত্তর। এ বিষয়ে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল ১৩ সেপ্টেম্বর একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।