মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ৩৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুরের ২২তম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
চাঁদপুরের ২২তম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

চাঁদপুরের ২২তম জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তাঁকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব পদে দায়িত্বপালনকালীন অবস্থায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তিনি চাঁদপুরের ২১তম জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হলে প্রথম জেলা প্রশাসকের দায়িত্বগ্রহণ করেন আলহাজ্ব জানিবুল হক। ৭ মাস ২৭ দিনের মাথায় ১৯৮৫ সালের ১২ অক্টোবর দ্বিতীয় জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম শামসুল আলম। তিনি তিন বছর ৮ মাস দায়িত্বে থেকে স্মরণীয় কিছু কীর্তি সম্পাদন করেন। যেমন-রেলওয়ে লেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য 'অঙ্গীকার' নির্মাণ ও সাহিত্য একাডেমি, চাঁদপুর প্রতিষ্ঠা। তৃতীয় জেলা প্রশাসক হিসেবে ১৯৮৯ সালের ৪ জুলাই যোগদান করেন লস্কর আবুল কালাম। প্রায় ছয় মাস দায়িত্বপালনকালে একদিন মাছ শিকার শেষে তাঁর বাংলোয় ফিরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের পূর্বেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাঁর শূন্যস্থানে চতুর্থ জেলা প্রশাসক হিসেবে ১৯৯০ সালের ৭ জানুয়ারি যোগদান করেন এককালের সাংবাদিক মুহম্মদ আবুল কাশেম। তাঁর দায়িত্বপালনের সময়কাল এক বছর ৮ মাস ১দিন। পঞ্চম জেলা প্রশাসক মোঃ ইয়াকুব আলী যোগদান করেন ১৯৯১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। তিনি চাঁদপুরে তাঁর পদে ছিলেন এক বছর ১১ মাস ২১ দিন। ষষ্ঠ জেলা প্রশাসক মোঃ গোলাম কিবরিয়া যোগদান করেন ১৯৯৩ সালের ২৯ আগস্ট। তিনি দায়িত্ব পালন করেন ২ বছর ৭ মাস ২৬ দিন। ৭ম জেলা প্রশাসক হিসেবে ১৯৯৬ সালের ২৪ এপ্রিল যোগদান করেন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ খালিদ আনোয়ার। তিনি তাঁর পদে অধিষ্ঠিত থাকেন ২ বছর তিন মাস ৮ দিন। ১৯৯৮ সালের ২ আগস্ট অষ্টম জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেজাউল করিম। তাঁর সময়ে জেলা প্রশাসকের একতলা টিনশেড বাংলোটি ভেঙ্গে বর্তমান দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। তিনি কিছুটা কষ্টকরভাবেই দায়িত্বপালন করেন ২ বছর ৭ মাস ২৬ দিন। ২০০১ সালের ২৮ মার্চ নবম জেলা প্রশাসক হিসেবে মোঃ রেজাউল করিমের স্থলাভিষিক্ত হন আবু মোঃ মনিরুজ্জামান খান। তিনি তাঁর এক বছর ৮ মাস ১১ দিনের কর্মকালে একুশের সুবর্ণজয়ন্তি উদযাপনে একটি প্রামাণ্য সুদৃশ্য স্মরণিকা প্রকাশ করেন। ২০০২ সালের ৯ ডিসেম্বর দশম জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন মোঃ আবদুর রব হাওলাদার। তাঁর কর্মকাল ছিলো এক বছর ৭ মাস ১০ দিন। তারপর একাদশ জেলা প্রশাসক হিসেবে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা সংলগ্ন স্থানের বাসিন্দা মোঃ তাহেরুল ইসলাম ২০০৪ সালের ১৯ জুলাই যোগদান করেন এবং ২ বছর একমাস ৩দিন দায়িত্বপালন করেন। দ্বাদশ জেলা প্রশাসক এমএ খালেক ২০০৬ সালের ২২ আগস্ট যোগদান করলেও ২ মাস ২৮ দিনের মাথায় ওয়ান ইলেভেনের পট পরিবর্তনে বদলি হন এবং একই বছরের ২০ নভেম্বর এসএম মনিরুল ইসলাম ত্রয়োদশ জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর কর্মকাল ছিলো এক বছর নয় মাস ৮ দিন। চতুর্দশ জেলা প্রশাসক আ. ক. ম. শাহীদুর রহমান ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট যোগদান করে ৭ মাস ২২দিন দায়িত্ব পালন করেন। তারপর যিনি পঞ্চদশ জেলা প্রশাসক হন, তিনিও ছিলেন স্বল্প সময়ের। তাঁর নাম বিশ্বাস মুহম্মদ আজিম উদ্দিন। তিনি ছিলেন ১১ মাস ৪ দিন। ষষ্ঠদশ জেলা প্রশাসক হিসেবে ২০১০ সালের ২৪ মার্চ যোগদান করেন প্রিয়তোষ সাহা, যিনি চাঁদপুর বড়ো স্টেশন মোলহেডে 'রক্তধারা' নামে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণ এবং 'চাঁদপুর পরিক্রমা' নামে চাঁদপুর জেলার ইতিহাস গ্রন্থ প্রকাশ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর কর্মকাল আড়াই বছর। চাঁদপুরের সপ্তদশ জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন। তিনি ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর যোগদান করে ২ বছর ৮ মাস ২৮ দিন দায়িত্বপালন করেন, তবে কোনো বিদায় সংবর্ধনা নেননি। তিনি খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ও খাদ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। তিনি অষ্টাদশ জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডলের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন ২০১৫ সালের ২ জুলাই। তিনি তাঁর ২ বছর ৮ মাস ২ দিনের কর্মকালে চাঁদপুরকে ' ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর ' নামে দেশের প্রথম ব্র্যান্ডিং জেলার স্বীকৃতি আদায় করেন সরকার থেকে এবং রাজধানীতে ব্র্যান্ডিং ফেস্টিভ্যাল ও ব্র্যান্ডিং প্রকাশনা করে জনপ্রশাসন পদক পেয়ে ও সেরা জেলা প্রশাসক হিসেবে পুরস্কৃত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ১৯ তম জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান যোগদান করেন ২০১৮ সালের ৫ মার্চ। তিনি হঠাৎ বদলি হলেও সেটা ঠেকিয়ে পুরো আড়াই বছর ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ২০ তম জেলা প্রশাসক হিসেবে, তবে চাঁদপুরের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে অঞ্জনা খান মজলিশ ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি যোগদান করে মাত্র সোয়া একবছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা অধিগ্রহণের অনিয়ম নিয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈরিতায় লিপ্ত হয়ে দেশব্যাপী আলোচিত হন এবং অকাল বদলির শিকার হয়ে নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসক পদে যোগদান করেন। তিনি ২০২২ সালের ৩১ মে চাঁদপুর থেকে বিদায় নেন, আর ২১তম জেলা প্রশাসক হিসেবে কামরুল হাসান যোগদান করেন ১জুন ২০২২। তিনি দায়িত্ব পালন করেন সোয়া দুবছর। তারপর বদলির আদেশ প্রাপ্ত হয়ে ২২ তম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে যাচ্ছেন।

গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চাঁদপুরের নূতন (২২তম) জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য জেলার জেলা প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে গত ২০ আগস্ট চাঁদপুর জেলার ডিসি কামরুল হাসানকে প্রত্যাহার করে রেলপথ মন্ত্রণালয় বদলি করা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার চাঁদপুরসহ ২৫ জেলা থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। সেই জেলাগুলোয় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় উপ-সচিব হোসনা আফরোজার সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

জেলাগুলো হলো : কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার,ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, খুলনা ও গোপালগঞ্জ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব তানভীর আহমেদকে ঢাকা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সংযুক্ত উপ-সচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লাকে ফরিদপুর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পি কে এম এনামুল কবিরকে সিলেট, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মো. ফরিদুর রহমানকে হবিগঞ্জ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টার একান্ত সচিব মুফিদুল আলমকে ময়মনসিংহ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব তরফদার মাহমুদুর রহমানকে শেরপুর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ফারহানা ইসলামকে কুষ্টিয়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আওয়ালকে ঝিনাইদহ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ-সচিব মো. অহিদুল ইসলামকে মাগুরার ডিসি করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালকে রংপুর, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত উপ-সচিব চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদকে গাইবান্ধা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামকে পাবনা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হোসনা আফরোজাকে বগুড়া, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সাইদুজ্জামানকে জয়পুরহাটের ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে কক্সবাজার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপ-সচিব ফরিদা খানমকে চট্টগ্রাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত উপ-সচিব ইশতিয়াক আহমেদকে নোয়াখালী, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনকে চাঁদপুর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাসিমা আরেফিনকে গাজীপুর, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ আমিরুল কায়সারকে কুমিল্লায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেনকে মৌলভীবাজার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে খুলনা এবং ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামানকে গোপালগঞ্জের ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তর্র্বতী সরকার গঠন হলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার শুরু হয়। গত ২০ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে ২৫ জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ওই দিন আরেক আদেশে ঢাকা, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পৃথক আদেশে ফরিদপুর, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়