রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

সাবেক মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির গ্রেফতারের খবরে চাঁদপুরে মিষ্টি বিতরণ

ভাই-বোনের কাছে চরমভাবে নির্যাতিত চাঁদপুরের মানুষ সুবিচার চায়

---------অ্যাডঃ সলিম উল্লাহ সেলিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভাই-বোনের কাছে চরমভাবে নির্যাতিত চাঁদপুরের মানুষ সুবিচার চায়

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে গ্রেপ্তারের পর চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা থেকে ডাঃ দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

চাঁদপুর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও একাধিকবারের মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ঢাকায় আটক হয়েছেন এমন খবর তার নির্বাচনী এলাকা চাঁদপুরে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এ খবরে চাঁদপুরে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। রাতেই নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেন এবং গতকাল মঙ্গলবার শহরের পুরাণবাজারসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ হয়।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় চাঁদপুর জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ জানান, গত ১৬ বছর দীপু মনির প্রত্যক্ষ মদদে শত শত মামলা হামলাসহ নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তারা। এছাড়া সর্বশেষ তার নির্মমতার ঘটনা ঘটে গত ১৮ জুলাই ও ৪ আগস্ট। দু দফা জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মদদ দেন তিনি। তার বড়ভাই ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপুও বোনের মন্ত্রিত্ব ও এমপির প্রভাব খাটিয়ে আলাদা সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন এবং ভূমিদস্যুতা, নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনসহ নানা অপকর্ম করেছেন।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিমুল্লাহ সেলিম বলেন, বিএনপি সব সময় ন্যায় বিচারের পক্ষে। কিন্তু গত ১৬ বছর শত শত মামলা হামলা নির্যাতন করে আমাদেরকে মজলুম হিসেবে দমিয়ে রেখেছে। তার নির্দেশে চাঁদপুরের মানুষ চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছে। তাদের ভাই-বোনের কারণে বহু অপকর্ম নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন, ভূমিদস্যুতা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দীপু মনি চাঁদপুরে তেমন কোন উন্নয়ন করে নাই। বরং চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সমূলে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। অথচ তার কারণে কোন অবকাঠামো আজ পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও তাই। এখানেও স্থায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ অবকাঠামো নির্মিত হয়নি। তার কাছে চাঁদপুরবাসী ছিল জিম্মি। দীপু মনির গ্রেপ্তারে শুধু বিএনপি নয় চাঁদপুরের জনগণ খুশি। মানুষ শেখ হাসিনা ও দীপু মনির হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে।

অ্যাডঃ সেলিম বলেন, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনিসহ সকল অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা চাঁদপুর জেলা বিএনপির।

চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, উনি যে অন্যায় করেছেন তার সাজা পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ডাঃ দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। চাঁদপুরের এমপি থাকা অবস্থায় আমাদের মাঝে রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকার পরেও যে সামাজিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল সেই সামাজিক সম্পর্কও ধ্বংস করে দিয়েছেন। চাঁদপুরে কিশোরগ্যাং সৃষ্টি করেছেন। এ সমস্ত কারণে তার বিচার হওয়া দরকার। আমরা তার বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ আঃ কাদির বেপারী বলেন, আমরা চাই দীপু মনির যে অপরাধ করেছে আইনের বিধান অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। আমরা গত ১৭ বছর নির্যাতন সহ্য করেছি, জেল খেটেছি। মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করেছে। আমাদের জেলা বিএনপির সভাপতিসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীর নামে অসংখ্য মিথ্যা মামলা হয়েছে। তার নির্দেশে এসব মামলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরের ইতিহাসে রাজনৈতিক ন্যাক্কারজনক কোনো ঘটনা অতীতে ঘটেনি। অথচ তার মদদে তার নির্দেশে আমাদের দলের জেলা সভাপতির বাসভবনে দুই দফা হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করে প্রায় ১০-১২ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন দীপু মনি। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী এবং তার আগের মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

গত ১৮ জুলাই চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ও তার বড় ভাই ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপুকে আসামি করা হয়।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ জুলাই রাত ৮টায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ও তার বড় ভাই ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপুর প্রত্যক্ষ নির্দেশে জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের জেএম সেনগুপ্ত রোডের মনিরা ভবন নামে বাড়িতে ১০০০ থেকে ১২০০ লোক দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাঙচুর করে। পরে তারা ওই ভবনে আগুন দিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

ঢাকায় ডিবির কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা থেকে সাবেক মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে আটক করেছে ডিবি গুলশান বিভাগের একটি দল। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর এবং ঢাকায় মামলা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়