বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের অবহেলায় বন্ধ হওয়ার পথে বিদ্যালয়টি

কচুয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্পত্তিতে চেয়ারম্যানের পারিবারিক বাগান ॥ প্রধান শিক্ষকসহ ৫ জনকে শোকজ

কচুয়া প্রতিনিধি ॥
পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের অবহেলায় বন্ধ হওয়ার পথে বিদ্যালয়টি

কচুয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে পারিবারিক বাগান করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সওদাগর। তিনি কচুয়া উপজেলার ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় মাঠের উত্তর পাশেই একটি বাগানে সাঁটানো রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নাম ও ছবি সম্বলিত একটি সাইনবোর্ড। তিনি তার দখলীয় বলে নিজের নাম, পদবী ও ছবি দিয়ে দখলীয় সত্বেও সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে রেখেছেন এমনটাই বহিঃপ্রকাশ। পাঠদান চলাকালীন বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণিতে ৭জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ৮জন ও তৃতীয় শ্রেণিতে ৩জন শিক্ষার্থী উপস্থিত দেখতে পাওয়া যায়।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখলের সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার বলেন, উপজেলার ১৫১নং লুন্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৩ শতক সম্পত্তির মধ্যে ২৪ শতক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দখলে রয়েছে। বাকী ৯ শতক সম্পত্তিতে ওই এলাকার বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সভাপতি আব্দুস সালাম সওদাগরের পারিবারিক বাগান তৈরি করে দখলে রেখেছেন।

স্থানীয়রা জানান, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ভাতিজা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পারিবারিকভাবে ও প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তারের যোগসাজশে সম্পত্তি দখল করে রেখেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। পরিচালনা পর্ষদের অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে। এখানে শিক্ষার কোনো পরিবেশ নেই। শিক্ষকদের সঠিক তদারকির অভাব ও শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে মনোযোগী না হওয়ার কারণে ক্রমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে ৩০-৩২ সংখ্যায় এসে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক পারভীন আক্তার নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। মাঝেমধ্যে আসলেও স্বল্পসময় অবস্থান করে উপজেলার মিটিং আছে বলে স্বাক্ষর দিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, পাশর্^বর্তী গ্রামে প্রধান শিক্ষকের বাড়ি। তিনি সবসময় দাপট খাটিয়ে চলেন। তার ভয়ে আমরা মুখ খুলতে পারি না। এছাড়া তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। তার অবহেলার কারণেই বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্পত্তিতে পারিবারিক বাগান তৈরির সত্যতা স্বীকার করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সওদাগর এই প্রতিবেদককে জানান, আমি পরিত্যক্ত জায়গায় ফলফলাদি গাছের বাগান করেছি। আপনারা বললে আমি গাছ কেটে ফেলবো। স্কুলের কোনো জায়গা আমি দখল করিনি।

বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেদখল ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা সুভাশ চন্দ্র জানান, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেদখলে থাকার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক কিংবা অন্য কেউ আমাদের অবহিত করেন নি। এইমাত্র আপনাদের মাধ্যমে জানতে পাররলাম। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকদের বারংবার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ ৫ সহকারী শিক্ষককে বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত না থাকার কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হাসান বলেন, সার্ভেয়ার নিয়োগ করে অচিরেই বিদ্যালয়ের সম্পত্তি নির্ধারণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়