প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহাবুবুর রহমান বলেছেন, লেখাপড়ার বাইরেও যে আরেকটি জগৎ আছে, সে সম্পর্কে জানা এবং সে জগতের সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে বিতর্কে। প্রতিভাকে বিকশিত করার অন্যতম মাধ্যম বিতর্ক। বিতর্ক একজন শিক্ষার্থীকে আত্মপ্রত্যয়ী হতে শেখায়। শিক্ষার্থীকে স্মার্ট নাগরিক হতে সহায়তা করে। প্রথম ও দ্বিতীয় হওয়ার চেয়ে সৃজনশীল হওয়া আবশ্যক।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে রেজাল্ট খারাপ হয় না। বরং পরিপূর্ণ মানুষ হওয়া যায়। বোকা ব্যতীত সকলেই যুক্তিকে সম্মান করে। বিতর্ক ও তর্কের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যারা বিতর্কে অংশগ্রহণ করে তারা অনেক সাহসী। কারণ এতো ছোট বয়সে আমি নিজেও বিতর্কে অংশগ্রহণ করিনি।
‘বিতর্কে আজ নতুন জোয়ার, যুক্তিতে যুগ খুললো দুয়ার’ স্লোগানে মতলব দক্ষিণে দ্বাদশ পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার জমজমাট প্রান্তিক পর্ব গতকাল ২৮ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় মতলব দক্ষিণ উপজেলার কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ মাহাবুবুর রহমান এসব কথা বলেন।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ২টি কলেজ এ প্রতিযোগিতার প্রান্তিক পর্বে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন দ্বাদশ পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক ও চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমির অধ্যক্ষ ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।
প্রতিযোগিতার সমাপনী পর্বে চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন মতলব দক্ষিণ উপজেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক আইনুন্নাহার কাদরীর সভাপ্রধানে এবং সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর কণ্ঠের মতলব ব্যুরো ইনচার্জ রেদওয়ান আহমেদ জাকিরের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মতলব সূর্যমুখী কচি-কাঁচার মেলার সভাপতি মাকসুদুল হক বাবলু, রয়মনেন নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অরুণ চন্দ্র সরকার, কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাদল, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের মতলব দক্ষিণ প্রতিনিধি ও নারায়ণপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ প্রমুখ।
বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও চাঁদপুর ডিবেট মুভমেন্ট (সিডিএম)-এর সাবেক সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান পাটোয়ারী, বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন (সিকেডিএফ) সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ মাসুদুর রহমান ও চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক একাডেমির সমন্বয়কারী মোঃ আবু হানিফ। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন সিকেডিএফ চাঁদপুর সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু সালেহ ও সিকেডিএফ মতলব উত্তর উপজেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক মোঃ রোবেল হোসেন।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড ট্যালেন্ট একাডেমি বিজয়ী হয়। তার প্রতিপক্ষ ছিলো ১৫৫নং নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বক্তা গোপাল ঘোষ। প্রতিযোগিতায় ১৪৪নং নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। তার প্রতিপক্ষ ছিলো কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুল। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় ১৪৪নং নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দলনেতা আরিয়ান আল-আরাফ।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে লিটল স্কলার্স একাডেমি বিজয়ী হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তা হয় দলপ্রধান ফাহিমা ইসলাম নোভা। তাদের প্রতিপক্ষ ছিলো বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিযোগিতায় মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দলপ্রধান উম্মে হানি কণা। তাদের প্রতিপক্ষ ছিলো দগরপুর আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিযোগিতায় আশ্বিনপুর উচ্চ বিদ্যালয় জয়লাভ করে। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় দলের দ্বিতীয় বক্তা সাহান ইসলাম। প্রতিযোগিতায় নারায়ণপুর পপুলার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় জয়লাভ করে। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় দ্বিতীয় বক্তা আয়েশা আক্তার মহিমা। তাদের প্রতিপক্ষ ছিলো নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মতলব সরকারি কলেজ বিজয়ী হয়। তাদের প্রতিপক্ষ ছিলো রয়মনেন নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজ। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় রয়মনেন নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বক্তা শারমিন আক্তার।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বিশিষ্টজনকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর কণ্ঠের মুন্সিরহাট প্রতিনিধি জিএম আব্দুল কাদের, ফ্রেন্ডস্ ’৯৯ সামাজিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোতালেব হোসেন রাজু, লিটল স্কলার্স একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম প্রধানীয়া, সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌসী, স্ট্যান্ডার্ড ট্যালেন্ট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল জাহান শাওলিন ও অধ্যক্ষ রাধেশ্যাম মণ্ডল।
অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মতলব সরকারি কলেজের প্রভাষক রবিউল ইসলাম, রয়মনেন নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক শাহজাদী, লিটল স্কলার্স একাডেমির সহকারী শিক্ষক আলআমিন ভূঁইয়া, নারায়ণপুর পপুলার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাইনুল ইসলাম টিপু, মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শহিদুল্লাহ প্রধান, আশ্বিনপুর উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক কেএম ফয়জুল ইসলাম, নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমান, দগরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল কাদের, বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিলয়, ১৪৪নং নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আনিসুর রহমান, কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারী শিক্ষক রিনা বণিক, স্ট্যান্ডার্ড ট্যালেন্ট একাডেমীর সহকারী শিক্ষক ফরহাদ হোসেন, ১৫৫নং নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।