প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আন্দোলন-সংগ্রাম করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে ক’টি মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তন্মধ্যে একটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি। যে রাষ্ট্রে ধর্মীয় বিবেচনায়, পেশার বিবেচনায়, শ্রেণির বিবেচনায়, বংশ কিংবা বস্তুর বিবেচনায় মানুষে মানুষে কোনো বিভেদ থাকবে না, কোনো বৈষম্য থাকবে না। এরকম একটি রাষ্ট্র হচ্ছে বাঙালির রাষ্ট্র। সারা দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র বাঙালি একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পেয়েছে। যে রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ। এ রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
তিনি আরো বলেন, ২০০১ সালে পহেলা অক্টোবরের যে নির্বাচন সে নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জয়লাভের পর কচুয়াসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ব্যাপক হামলা, মামলা ও নির্যাতন করে এবং অমানবিক অত্যাচার করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাংচুর করে বাড়িঘরের মধ্যে আগুন লাগানোর মতো তাণ্ডব চালায় স্বাধীনতা বিরোধী সেই দলের নেতা-কর্মীরা। তার কারণ হিন্দু সম্প্রদায় হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রকৃত বন্ধু। যে কোনো সংকটে যে কোনো সমস্যায় আওয়ামী লীগ হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিলো। আবার হিন্দু জনগোষ্ঠীও আওয়ামী লীগের পাশে ছিলো। ১৯৯৬ সালে যখন এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায়সহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ভোট দিতে পেরেছিল, তখন আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে এবং সরকার গঠন করে। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীদের ঘরে থাকতে দেয়নি। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওউপর অত্যাচার-নিপীড়ন করে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জেলে বন্দী করে জোর করে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে। আবার ২০০৮ সালে যখন এদেশের জনগণ ভোট দিতে পেরেছে তখন আওয়ামী লীগ তিন চতুর্থাংশ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। এবং বিএনপির আমলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন হতো তা বন্ধ করেছে শেখ হাসিনা সরকার। তাছাড়া হিন্দুদের অর্পিত সম্পত্তির যে কালো আইন ছিলো তা বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। তাই আপনারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগের পাশে থেকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি গত সোমবার রাতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিয়নের চাঙ্গিনী দুর্গাবাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন।
এ সময় শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম আতিকুর রহমান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী পাটওয়ারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সম্রাট শাহজাহান, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা, কচুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রিয়তুষ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক জিসান আহমেদ নান্নু, ইউপি চেয়ারম্যান আখতার হোসাইন, হাবিব মজুমদার জয়, মনির হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান হাতেম, এনামুল হক শামীম, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাসুদুর রহমান বাবুল, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সরকারসহ দলীয় নেতা-কর্মী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
একইদিনে ড. সেলিম মাহমুদ উপজেলার চাঙ্গীনি দুর্গা বাড়ি সার্বজনীন মন্দির, দোয়াটি নিশি হাওলাদার বাড়ি দুর্গা মন্দির, তিলকিয়াভিটি দুর্গা মন্দির, জলা তেতৈয়া দুর্গা মন্দির, পালাখাল সাহা বাড়ি দুর্গা মন্দির, আলিয়ারা ব্যাজ বাড়ী দুর্গা মন্দির, উত্তর শিবপুর দুর্গা বাড়ি মন্দির, মাঝিগাছা দুর্গা মন্দির, বিতারা পাল বাড়ি দুর্গা মন্দির, সাচার জগন্নাথ ধাম দুর্গা মন্দির, ঘোষ বাড়ি দুর্গা মন্দির, মধ্য পাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, দাসপাড়া দুর্গা বাড়ি মন্দির, বায়েক সরকার বাড়ি দুর্গা মন্দির, বায়েক কালী বাড়ি বাড়ি দুর্গা মন্দির ও শুয়ারুল কালি বাড়ি দুর্গা মন্দির পরিদর্শন করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্দিরে উপহার হিসেবে নগদ দশ হাজার টাকা করে প্রদান করেন।