প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
সৌভাগ্য রাণী সাহা, শুধুমাত্র একটি নামই নয়, একটি সংগ্রামের নামও। নিজের সাথে সমাজের সাথে কীভাবে লড়াই করে বিজয়ী হতে হয় তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৌভাগ্য রাণী। নামের যৌক্তিকতা দেখালেন কর্মের গুণে। ত্যাগ, শ্রম আর প্রতিজ্ঞা যে মানুষের জীবনে সৌভাগ্য এনে দিতে পারে তিনি তার প্রমাণ। জীবনের গোধূলী লগ্নে এসে আজ তিনি তার রাজ্যেরও রাণী। হয়ে গেলেন সৌভাগ্যের রাণী। বলছিলাম আনসার ভিডিপির প্রশিক্ষক সৌভাগ্য রাণীর কথা।
১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১ নভেম্বর আনসার ভিডিপির চাকরিতে যোগদান করেন। কর্ম দিবসের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তিনি সততা আর নিষ্ঠার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সমাজের প্রয়োজনে কখনো কখনো অফিস সময়ের বাইরেও কাজ করেছেন। যে সময়টা পরিবারকে দেওয়ার কথা, সে সময়টা দিয়েছেন সমাজ এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে। প্রকৃতিও তাকে দিয়েছে দুহাত ভরে।
সৌভাগ্য রাণী, সৌভাগ্য নিয়ে জন্মাননি। দরিদ্র পরিবারে জন্ম তার। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রূপসা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহা, মাতা-সাধনা সাহা। পিতার আর্থিক সংকটের কারণে অনেক চাহিদাই অপূর্ণ থেকে গেছে। তাইতো সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। স্বামী শেখর মজুমদার মারা যান ২০১৫ সালে। তাদের একমাত্র সন্তান রিপা মজুমদার। সে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত আছেন।
সৌভাগ্য রাণী সাহা ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর হইতে ২০২২ সালের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত উপজেলার আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও জেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগীদের সাথে নিয়ে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি করোনাকালীন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। ডেঙ্গুর সময়ে র্যালি করিয়েছেন, লিফলেট বিতরণ করেছেন। চলতি অর্থ বছরে তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার বন বিভাগ থেকে ফলদ, বনজ ও ঔষধিসহ মোট পাঁচ সহস্রাধিক গাছের চারা নিয়ে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাঝে বিতরণ করেন। গাব্দেরগাঁও আনসার ও ভিডিপি ক্লাবের জমি মাপ ও সীমানা নির্ধারণ করে কাঁটা তারের বেড়ার কাজে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করেন।
বর্তমান অর্থ বছরে তিনি আনাসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার পরামর্শক্রমে সেলাই ও ফ্যাশন ডিজাইন প্রশিক্ষণে ১জন, মোটর ড্রাইভিং ও মেকানিক্স প্রশিক্ষণে ২জন, বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণে ৪ জন, ফ্রিজ ও এয়ারকন্ডিশনার মেরামত প্রশিক্ষণে ১জন এবং অস্ত্রসহ ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণে ৬৫ জন সদস্য প্রেরণ করেন। চলতি অর্থ বছরে শারদীয় দূর্গা পূজার ২০টি পূজা মণ্ডপের জন্যে ১৩৬ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়নের কাজে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তাকে সাহায্য করেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৩ উপলক্ষে ১১৮ টি ভোট কেন্দ্রের জন্যে ২৩৬ জন পিসি ও এপিসির নামের তালিকা প্রস্তুত করার কাজে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকার্তাকে সাহায্য করেন। আনসার ভিডিপিতে বিশেষ অবদান রাখায় চাঁদপুর রোটারী ক্লাব তাকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেন। অনেকটা নীরবে করে যাওয়া তার প্রশংসনীয় কাজে মুগ্ধ উপজেলাবাসী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর।