প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে আজ ২০ অক্টোবর শুক্রবার থেকে শুরু হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের। চাঁদপুরের প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপে ইতিমধ্যে সাজসজ্জার ব্যাপক কর্মযজ্ঞসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করে এনেছে পূজা কমিটিগুলো।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনে তৎপর রয়েছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এবার চাঁদপুর জেলায় ২২৪টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪০টি, হাইমচর উপজেলায় ৬টি, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২৯টি, কচুয়া উপজেলায় ৪০টি, শাহরাস্তি উপজেলায় ১৮টি, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২০টি, মতলব উত্তর উপজেলায় ৩৪টি ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ৩৬টি মণ্ডপ রয়েছে। চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ১৪ অক্টোবর পবিত্র মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা একটি ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় আয়োজন হলেও ঐতিহ্যগতভাবেই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ অনুষ্ঠান এখন সর্বজনীনতা লাভ করেছে। শারদীয় দুর্গাপূজার শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী এবং অসুর শক্তির বিরুদ্ধে সুরশক্তির বিজয়ের চেতনা বিশ্বজনীন। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এই চেতনাকে ধারণ করেই বিকশিত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শারদীয় দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে একটি ঐক্য ও সমন্বয়ের ধারা প্রতিষ্ঠার সূচনা করতে পেরেছে বলে তারা মনে করেন। যার মূল সুর ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’।
চাঁদপুর জেলা উপজেলা ও পৌর উদযাপন পরিষদ এবং সার্বজনীন পূজা কমিটির পক্ষ থেকে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে সাত্ত্বিকভাবে মায়ের অর্চনা করা সহ বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতিমা তৈরি থেকে পূজা সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি পূজা মণ্ডপে স্ব উদ্যোগে নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে সংশ্লিষ্ট মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। পূজা মন্দির-মণ্ডপে নারী ও পুরুষের পৃথক যাতায়াত ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং শৃংখলা রক্ষার জন্য নিজস্ব নারী-পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের নামের তালিকা (মোবাইল নম্বরসহ) জেলা ও কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। সন্দেহভাজন দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা এবং নারী স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে নারী দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা রাখতে হবে। উচ্চ শব্দের কারণে বিরক্তি উদ্রেককারী মাইক-পিএসেট ও আতশবাজি-পটকার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। ভক্তিমূলক সংগীত ব্যতীত অন্য কোন গান বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এরূপ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার কথাও নির্দেশনায় বলা হয়। দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্মণ্ডবর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিককে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।