শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ
  •   চাঁদপুর সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের মান্দারি লোহাগড় গ্রামে দুটি পুকুরে বিষ দিয়ে ১৫ লাখ টাকার মাছ নিধন
  •   গৃহবধূ আসমার খুনিদের বিচারের দাবিতে ফরিদগঞ্জে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
  •   কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ
  •   হাজীগঞ্জের সন্তান অতিরিক্ত ডিআইজি জোবায়েদুর রহমানের ইন্তেকাল

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

চিকিৎসা-অবহেলায় দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ॥ পরিচালক আটক
স্টাফ রিপোর্টার ॥

চাঁদপুর শহরের তালতলায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চিকিৎসা-অবহেলার কারণে দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক মোরশেদ আলমকে নবজাতকদের স্বজনরা মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

৮ মার্চ বুধবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে দুই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্য পরিচালকরা পালিয়েছে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

রাত ৮টার দিকে সিজারের পর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারস্থ বাকালী পট্টির ভ্যান চালক শাহজাহান মিয়ার দুদিন বয়সী নবজাতক চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করে। আর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিনিয়র নার্স আকলিমা ও ওটি ইনচার্জ মোরশেদ আলমের মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারির সময় স্থানীয় বকাউল বাড়ি রোডের সন্তু বেপারীর নবজাতকের মৃত্যু হয়।

ভ্যান চালক শাহজাহান বলেন, ৬ মার্চ সোমবার রাত ৮টায় এই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের কন্যা শিশুর জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে শিশুটি সুস্থই ছিল। আজকে দুপুরে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। তারা চিকিৎসক দেখিয়ে বলেছে, পেটে গ্যাস জমেছে। ওষুধ দেয়ার পরও সুস্থ হয়নি। পরে রাতে মারা যায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুধুমাত্র আমার শিশুরই মৃত্যু হয়নি। আমার স্ত্রীর অবস্থাও খারাপ। তার ব্যথার যন্ত্রণায় চিৎকার দিলেও নার্সদেরকে পাওয়া যায়নি। তাদের ফার্মেসি বন্ধ থাকে, কোনো ওষুধ পাওয়া যায় না।

শাহজাহানের আত্মীয় জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সুফিয়ার প্রথম সন্তানের পর দুটি সন্তান জন্মের পর মারা যায়। এটি চতুর্থ সন্তান। অসহায় ও গরিব হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে সিজার করে। কিন্তু তাদের অবহেলার কারণে বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। তারা হাসপাতাল নয় কসাইখান খুলে বসেছে। কোনো চিকিৎসক নেই, নার্স নেই। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অপর নবজাতকের পিতা সন্তু বেপারী বলেন, আজকে দুপুরে আমার স্ত্রী হীরা আক্তারকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আমার সন্তানকে তারা ইচ্ছা করে মেরে ফেলেছে। আমি তাদেরকে বলেছি, নরমাল ডেলিভারিতে সমস্যা হলে সিজার করেন। তাদের হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক নেই, তারা কোনো চিকিৎসক ডেকেও আনে না। হাসপাতালে থাকা আমার স্বজনরা বলেছে, পেটের মধ্যে চেপে ধরে আমার সন্তানকে তারা হত্যা করেছে।

হীরা আক্তারের বোন-জামাই সফিকুর রহমান বলেন, বিয়ের ১১ বছর পর এই প্রথম সন্তান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সঠিক সেবা দিতে না পারায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। মা হীরা এখনো জানেন না তার সন্তান মৃত। তাকে জানানো হয়নি। খুবই কষ্ট ও বেদনাদায়ক ঘটনা।

হাসপাতালের পরিচালক ও ওটি ইনচার্জ মোরশেদ আলম স্বীকার করেন, তিনি ও নার্স আকলিমা হীরার নরমাল ডেলিভারি করেছেন। শিশুটির কীভাবে মৃত্যু হয়েছে এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাননি।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মোস্তফা জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শিশুদের অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে ঘটনা জানিয়েছে। পরিচালক মোরশেদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, ঘটনাটি আমি জানতে পেরেছি। অভিভাবকদের সাথে কথা বলা হবে এবং আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়