বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

আমাদের সাথে দেশের জনগণ রয়েছে, ফলে সরকারের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এদেশের জনগণের দল। এই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, গুম, খুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্যে আমরা এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে জনগণের স্বার্থে আন্দোলন করছি। যেহেতু জনগণ আমাদের সাথে রয়েছে, তাই আমরা শতভাগ আশাবাদী আমরা সফল হবোই। অবৈধ ফ্যাসিবাদ, রাতের আঁধারে ভোট ছিনতাইকারী ও ভোটারবিহীন সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের এ আন্দোলন। এখন এক দফার দাবিতে আন্দোলনটি পরিণত হয়েছে। আমাদের এ আন্দোলন এই সরকার রাষ্ট্রীয় যন্ত্র পুলিশ বাহিনী দিয়ে দমিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা আমাদের আন্দোলনকে ভয় পেয়ে রাষ্ট্রের যন্ত্রকে ব্যবহার করছে। কিন্তু আমাদের সাথে দেশের জনগণ রয়েছে, ফলে সরকারের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। নি¤েœ তার পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো :

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে কবে?

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : চলতি বছরের ২ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : এ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে কবে নাগাদ?

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : আমি চাঁদপুর সদর বিএনপির নেতৃত্বে দিচ্ছি। আমি জেলা বিএনপির অধীনস্থ একটি ইউনিটের দায়িত্ব পালন করছি। অতএব জেলা বিএনপির কমিটির বিষয়ে আমার কোনো এখতিয়ার নেই। আমার জানা মতে, জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজন জেলার সকল নেতাকে নিয়ে জেলার অধীনস্থ সকল ইউনিটের নেতৃবৃন্দ এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে বসে কিভাবে একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা যায় সে বিষয়ে মতামত নিয়ে একটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তরে জমা দিয়েছেন। চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে বা নানা প্রতিকূলতার কারণে হয়তো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিলম্ব করছেন, আশা করছি খুব সহসাই চাঁদপুর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : বিএনপির কোনো শাখার সম্মেলন সম্পন্ন হবার কতোদিন পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে হয়? আর প্রেরিত কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদন দিতে হয় কতো দিনে? এ বিষয়ে বিএনপির গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে কি?

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : আমার জানামতে বিএনপির গঠনতন্ত্রে এ ধরনের কোনো নিয়মণ্ডনীতি নেই বা গঠনতন্ত্রে কোনো নির্দেশনা দেয়া নেই। কিন্তু আমি যতটুকু জানি এবং আমার রাজনৈতিক জীবনে দেখেছি, সম্মেলন হওয়ার পরপরই যতো দ্রুত সম্ভব নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ফলে নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতৃবৃন্দ উজ্জীবিত হয়ে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করেন। আমরা চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত প্রতিটি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছি এবং অনেক কমিটি পুনগঠন করে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করছি। তবে গঠনতন্ত্র মোতাবেক কোনো নির্দেশনা দেয়া নেই।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনারা নানা ইস্যুতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না ঘোষণা দিয়ে কার্যত সরকার পতনের আন্দোলনই করছেন। আন্দোলনের সাফল্যের ব্যাপারে কতোটুকু আশাবাদী?

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এদেশের জনগণের দল। এই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, গুম, খুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্যে আমরা এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে জনগণের স্বার্থে আন্দোলন করছি। যেহেতু জনগণ আমাদের সাথে রয়েছে, তাই আমরা শতভাগ আশাবাদী আমরা সফল হবোই। অবৈধ ফ্যাসিবাদ, রাতের আঁধারে ভোট ছিনতাইকারী ও ভোটারবিহীন সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের এ আন্দোলন। এখন এক দফার দাবিতে আন্দোলনটি পরিণত হয়েছে। আমাদের এ আন্দোলন এই সরকার রাষ্ট্রীয় যন্ত্র পুলিশ বাহিনী দিয়ে দমিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা আমাদের আন্দোলনকে ভয় পেয়ে রাষ্ট্রের যন্ত্রকে ব্যবহার করছে। কিন্তু আমাদের সাথে দেশের জনগণ রয়েছে, ফলে সরকারের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে। আমরা বরাবরই বলছি, আমাদের মূল চালিকা শক্তি দেশের জনগণ। আমরা এই সরকারের অধীনে ও সরকারের আজ্ঞাবহ এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নিবো না। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি এদেশের জনগণকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে সফলতা নিয়ে অবশ্যই ঘরে ফিরবে। বিজয় আমাদের হবেই।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির মধ্যে কোনো গ্রুপিং আছে বলে মনে করেন? উপজেলা পর্যায়ের কী অবস্থা? সারাদেশের সর্বত্র গ্রুপিং না মিটিয়ে আপনাদের আন্দোলনের সাফল্য কি পুরোপুরি অর্জন করতে পারবেন?

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি শুধু এদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল নয়, এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল, দেশের প্রধান বিরোধী দল। এ বিশাল রাজনৈতিক দলে একটি পদে একাধিক ব্যক্তি যোগ্য। তাই যোগ্যতার ভিত্তিতে পদণ্ডপদবীর জন্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে বা থাকতে পারে। কিন্তু বৃহৎ স্বার্থে দলে চাঁদপুরে কোনো গ্রুপিং নেই। রয়েছে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা। আমরা সবাই খালেদা জিয়া এবং আগামীর রাষ্ট্র নায়ক তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এক ও ঐক্যবদ্ধ।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে আগের মতো রূঢ় নয় কেন?

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : আমি পূর্বেও বলেছি, বর্তমান রাষ্ট্রযন্ত্র পুলিশ বাহিনীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এখনো টিকে আছে। এই সরকারের পুলিশ বাহিনী আমাদের ওপর প্রতি মুহূর্তে অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন করছে, আমাদের সভাণ্ডসমাবেশ বন্ধ করে দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে এমন প্রশ্নের ভিত্তি নেই। তবে হ্যাঁ, বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাসী বিধায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পাল্টা আক্রমণ না করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে। সেজন্যে হয়তো আপনাদের এ ধারণা।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করুন।

অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান : বিএনপির আন্দোলন দেশ রক্ষার আন্দোলন। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা, দ্রব্য মূল্যের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্যে এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে চলছে পতন আন্দোলন। আমরা নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্যে যুদ্ধে অবতীর্ণ আছি। আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনায় এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমাদের আন্দোলন চলবে। শীঘ্রই আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। আমরা এ সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার এই যুদ্ধের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। অতএব এ যুদ্ধে বিজয় আমাদের অতি সন্নিকটে, বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য, অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খানের পিতা মরহুম মোহাম্মদ আলী খান চাঁদপুরের ডব্লিউ রহমান জুট মিলে চাকুরির সুবাদে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের রাজনীতি করতেন। পিতার রাজনৈতিক আদর্শকে লালন করে ১৯৮৭ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে ক্লাস কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল থেকে ভিপি পদে নির্বাচিত হন। তিনি পরপর দুবার চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্র রাজনীতি শেষে তিনি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়