ফরিদগঞ্জে ৪৯তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টের ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণকারী শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের অন্তত ২১ জন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্থানীয় শোল্লা বাজারে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং শিক্ষক অংশ নেয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকার নির্ধারিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয় আমাদের স্কুল। আর এই অপরাধে আমাদের শিক্ষার্থীদের কুকুরের মতো পিটিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষরা। এই ঘটনার জন্যে আয়োজক, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, ভেন্যুর প্রধান শিক্ষক কেউই দায় এড়াতে পারে না। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে সরকারি কোনো কর্মসূচিতেই শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

তারা বলেন, স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের উপস্থিতিতে কীভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে? আয়োজকরা কেনো পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করলো না। ভেন্যু বিদ্যালয়ের প্রধান এবং বিজিত দলের প্রধান শিক্ষক একই ব্যক্তি। তিনি কীভাবে এ ঘটনার দায় এড়াবেন ? এভাবে কুকুরের মতো দফায় দফায় মারার ঘটনা কোনো সভ্য লোকের কাজ নয়। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নচেৎ বৃহত্তর আন্দোলন হবে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার বিষয়ে।

বক্তব্য রাখেন শোল্লা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আরিফুর রহমান, বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আবুল হাসনাত নয়ন, দাতা সদস্য আবু জাফর খসরু মোল্লা, শফিউল আজম শুক্কু, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক মোহন, ইউপি সদস্য সৈকত মোল্লা, দাতা সদস্য সবুজ পাটওয়ারী, অভিভাবক সদস্য আঃ কুদ্দুস পাটওয়ারী, যুবলীগ নেতা আরিফ চৌধুরী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ফরিদগঞ্জে ৪৯তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলায় ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মুখোমুখি হয় শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে খেলা শেষ হয়। পরে টাইব্রেকারে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীরা ৩-১ গোলে বিজয়ী হয়। এতে তারা আনন্দ-উল্লাস করছিলো। ওই সময়ে আনন্দ-উল্লাস বন্ধ করে দ্রুত গাড়িতে উঠে মাঠ ত্যাগ করার জন্যে কয়েকজন কিশোর ও তরুণ বিজয়ীদের নির্দেশ দেয় এবং বাগ্বিত-ায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে বেশ কিছু সংখ্যক ছেলে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে কয়েক দফায় বেদম মারধর করে। পরে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে এবং চিকিৎসার জন্যে আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় বুধবার ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে ২ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রশাসন। এর আগে মারধরের সঙ্গে উপজেলা সদরের ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিলো বলে শোল্লা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।