প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, আমরা মুক্তিযাদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা শাখা ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি চাঁদপুরের পরিচিত মুখ অ্যাডঃ জাফর ইকবাল মুন্না। একাত্তরের রণাঙ্গনের বীরযোদ্ধা মরহুম সুবেদার (অবঃ) আঃ রবের ছেলে বিশিষ্ট যুবনেতা জাফর ইকবাল মুন্না দলের মনোনয়ন পেলে চাঁদপুর জেলা পরিষদে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলে আমি চেয়ারম্যান পদে জেলা পরিষদ নির্বাচন করতে চাই। তবে দলের বাইরে গিয়ে কখনোই নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছে বা আগ্রহ আমার নেই। চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আগ্রহ বিষয়ে তাঁর সাথে কথা হলে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাডঃ জাফর ইকবাল মুন্না চাঁদপুরের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে বেশ পরিচিত মুখ। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে চাঁদপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনে দক্ষতার সাথে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চাঁদপুরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তিনি সম্মুখ সারির নেতা ছিলেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগেও তিনি নেতৃত্বে ছিলেন। দলের প্রতি তাঁর এই শ্রম-ঘামের স্বীকৃতিস্বরূপ এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে তাকে দলীয় মনোনয়ন দিবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।
পারিবারিক পরিচয় : অ্যাডঃ জাফর ইকবাল মুন্নার পিতা হচ্ছেন সুবেদার (অবঃ) আবদুর রব (আর্টিলারী বিভাগ)। মুক্তিযুদ্ধকালে ‘রব বাহিনী’ পাক সেনাদের আতঙ্ক ছিলো। এই রব বাহিনী যার নামে তিনিই হচ্ছেন মুন্নার বাবা সুবেদার আঃ রব। তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে পাকিস্তান থেকে চাঁদপুর চলে আসেন এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে চাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিংয়ের দায়িত্ব নেন। তিনি চাঁদপুর মহিলা কলেজ মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং শুরু করান এবং চাঁদপুর জেলাসহ লাকসাম ও রায়পুর উপজেলার দায়িত্ব নেন।
এছাড়া লাকসাম এবং রায়পুরে সকল যুদ্ধে তিনি নেতৃত্ব দেন। তার বাবা রব বাহিনীর নাম শুনলে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতো। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সম্মুখযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী যে ক’জন ছিলেন তার মধ্যে সুবেদার আঃ রব অন্যতম।
মুন্না জানান, যুদ্ধের শেষ সময়ে চাঁদপুরের ৭টি ব্যাংকের চাবি তার বাবার কাছে ছিলো। পরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারের কাছে তিনি তা জমা দেন।
সুবেদার আঃ রব চাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডার ছিলেন (১৯৭২-৭৬)। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের পর তিনি মুক্তিযাদ্ধা সংসদের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। সারাজীবন সততার সাথে জীবনযাপন করে গেছেন। ২০০৮ সালে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মুন্নার রাজনৈতিক পরিচিতি : অ্যাডঃ জাফর ইকবাল মুন্নার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পদণ্ডপদবি : ১৯৮৭ সালে সভাপতি ঢাকা কটন মিলস হাই স্কুল। ১৯৯০ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে নব্বই’র এরশাদণ্ডবিরোধী আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে কমনরুম সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন। ওই সময় তিনি চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। এরপর ১৯৯৫ সালে চাঁদপুর জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ১৯৯৮ সালে চাঁদপুর শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হন। ২০০০ সালে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের লেয়াকত-বাবু কমিটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৫ সালে ও ২০০৬ সালে রাজনৈতিক মামলায় দুবার কারাগারে যান তিনি। ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোটের ১১ মামলার আসামি হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। বর্তমানে সভাপতি : আমরা মুক্তিযাদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা শাখা, সভাপতি : বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, চাঁদপুর জেলা শাখা, কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এবং শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সাথে রাজনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত আছেন।
জাফর ইকবাল মুন্না ১৯৯১ সাল তেকে অদ্যাবধি চাঁদপুরের সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের সকল স্তরের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় চাঁদপুর জেলা পরিষদে দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।