প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জেলা তথ্য অফিসের আলোচনা সভা
পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে এদেশের চিহ্নিত কিছু ব্যক্তি রাজাকারের ভূমিকায় কাজ করেছে : জেলা প্রশাসক
মহান বিজয় দিবস-২০২১ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
|আরো খবর
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সাথে শপথ করতে কাউকে বাধ্য করা হয়নি। যার যার ইচ্ছেমতো শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে। আবার অনেকে টেলিভিশনের মাধ্যমে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থেকে শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমরা আমাদের ইতিহাস নিয়ে বসলাম। এটা আমাদের অর্জন। এই অর্জনের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে নতুন প্রজন্মের কাছে। ইতিহাস বলতে গিয়ে আমি সত্যকে মিথ্যা বলবো না, মিথ্যাকে সত্য বলবো না। এটাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমার দুঃখ লাগে নতুন প্রজন্ম ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে এবং গালে পাকিস্তানের পতাকা অংকন করে এবং মুখে ‘আই লাভ ইউ পাকিস্তান’ বলে স্লোগান দেয়। যে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীদের গণহত্যা করে মেধাশূন্য করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে, যারা যুদ্ধের নামে নারীদের গণধর্ষণ করেছে, লক্ষ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করেছে, সে পাকিস্তানকে কীভাবে এই প্রজন্ম ভালোবাসে বলছে তা বোধগম্য নয়্য। তিনি বলেন, পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে এদেশের চিহ্নিত কিছু ব্যক্তি রাজাকারের ভূমিকায় কাজ করেছে। যারা অসংখ্য নারীকে তুলে দিয়েছিলো পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে। খেলার মাঠে যারা পাকিস্তানের পতাকা ওড়ায় তারা কি জানে সে ইতিহাস?
জেলা তথ্য অফিসার মোহাম্মদ মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমআর ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, দেশে অনেক মিডিয়া আছে যারা গঠনমূলক কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারে না। টকশো করে পরীমনিকে নিয়ে। অথচ আমাদের নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার অনেক ইতিহাস জানেন না। সে বিষয়ে ডকুমেন্টারী, কোনো সিনেমা বা নাটক গান পরিবেশন করতে পারে না। এমন কিছু নাটক গান পরিবেশন করে এতে করে নতুন প্রজন্ম খারাপের প্রতি আসক্ত হয়। তারা দেশীয় গান-বাজনা না শুনে বিদেশী গান চর্চা করে। বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশ চেয়েছেন যদি আমরা নতুন প্রজন্মকে সে শিক্ষা না দেই তাহলে দেশ থেকে একসময় বাংলা ভাষা হারিয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের কিছু লোক আছে হুজুগে বাঙালি। প্রশাসন যখন ভালো কাজ করে তখন তারা সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মাদক ব্যবসায়ী, নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী, সরকারের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে। আবার কেউ কেউ অবৈধ পণ্য তৈরির কারখানা করে। এসব বিষয়ে আমরা যখন অভিযান দেই তখন প্রতিকার চেয়ে অনেকে মানববন্ধন করেন। এসব বিষয়ে সবার সহযোগিতা থাকলে তাহলে বাংলাদেশ সুন্দর হবে।