প্রকাশ : ২০ জুন ২০২১, ১০:৪১
ফরিদগঞ্জে ড্রেন ও সড়ক নির্মাণে ধীরগতি ॥ জনদুর্ভোগ চরমে
ফরিদগঞ্জ শহরের কাঁচাবাজার সড়কের ড্রেন নির্মাণ এবং গুরুত্বপূর্ণ কালিরবাজার সড়কের নির্মাণ কাজ ও পানি সরবরাহ লাইন নির্মাণজনিত কারণে চরম দুরবস্থার শিকার ফরিদগঞ্জ পৌরবাসী ও ব্যবসায়ীরা। একে তো নির্মাণ কাজে ধীরগতি, অপরদিকে এর সাথে যোগ হয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে পুরো সড়ক ও বাজার এলাকা খানাখন্দকে একাকার হয়ে আছে। এ অবস্থায় মানুষকে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের অভিমত হচ্ছে নির্মাণ কাজগুলো বর্ষার পূর্বে সম্পন্ন করলে মানুষজনকে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। কাঁচাবাজার তথা উত্তরগলির ব্যবসায়ীরা গত ১৫/২০ দিন ধরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওই এলাকার অধিবাসীদের এখন সাঁকো দিয়ে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।
|আরো খবর
সরজমিনে দেখা গেছে, ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার সদর বাজারের উত্তর গলিতে কাঁচাবাজার, মাছ ও মাংস বাজার নিয়মিত বসে। এখানে স্থায়ী দোকানপাট রয়েছে। কিন্তু গত ৩ সপ্তাহ ধরে ড্রেনের নির্মাণ কাজের জন্যে কাঁচাবাজার সড়কটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে কাঁচাবাজারে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৫০ মিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঠিকাদার কাঁচাবাজার সড়কটি ভ্যাকু মেশিন দিয়ে মাটি উঠিয়ে কাজ শুরু করলেও এ সময় থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলে আসে। এমতাবস্থায় দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকায় বসবাসকারী লোকজন ও ব্যবসায়ীদের। ড্রেন নির্মাণে ভ্যাকু দিয়ে মাটি তোলার কারণে কিছু কিছু ঘর ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
স্থানীয় অধিবাসী সুবীর সাহা জানান, আমরা কী দুরবস্থার মধ্যে রয়েছি তা না দেখলে কেউ বুঝবে না। বৃষ্টি ও ঠিকাদারের কাজের ধীরগতির কারণে আমরা খুবই দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ব্যবসার বারোটা বেজেছে। কাঁচামালের ব্যবসা খুবই স্পর্শকাতর। কাঁচামাল আজ উঠালে কালকের মধ্যে তা বিক্রি করতে না পারলে তা নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার দুরবস্থার কারণে লোকজন বাজারমুখি হচ্ছে না।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস বলেন, ড্রেন নির্মাণের জন্য সড়ক কেটে ফেলায় আমাদের কাছে লোকজন আসতে চায় না। ফলে ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। আশা করছি ঠিকাদার দ্রুত তা শেষ করে আমাদের মুক্তি দিবেন।
এদিকে নির্মাণ কাজ ধীরগতির কারণে পৌর মেয়র ঠিাকাদারের লোকজনকে ঢেকে রাস্তা থেকে মাটি সরিয়ে তারপর নির্মাণ কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে গত তিনদিন ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
পৌর এলাকার আরেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থানার মোড় থেকে কালিরবাজার চৌরাস্তা পর্যন্ত ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮১০ মিটার সড়কটি এলজিইডির অধীনে প্রায় ১ বছর পূর্বে নির্মাণ কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দিলেও ঠিকাদার কাজটি শেষ সময়ে শুরু করেন। এরই মধ্যে পৌর এলাকার পানি সরবরাহ প্রকল্পের অধীনে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হওয়ায় সড়কের নির্মাণ কাজ থেমে রয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিও দুরবস্থায় পতিত হয়েছে। কাঁদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে সড়কটি। এই সড়কের দুপাশের কয়েকশ’ ব্যবসায়ীও বিপাকে পড়েছে। জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই এলাকাটি এখন মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, বর্ষার কারণে সড়কের নির্মাণ কাজে ব্যঘাত ঘটছে। অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, টানা বর্ষণের কারণে তাদের ড্রেন নির্মাণে ব্যঘাত ঘটছে।