রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা!

অনলাইন ডেস্ক
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা!

আমাদের দেশের উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতাল তথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোর অধিকাংশতে কাঙ্ক্ষিত মানের চিকিৎসাসেবা পাওয়া বিরলই বটে। এক্স-রে মেশিন থাকলেও রহস্যজনক কারণে নষ্ট থাকে। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও জনবল সঙ্কটসহ বহুবিধ কারণে অপারেশন হয় না। দাঁতের চিকিৎসা পাওয়া গেলেও চক্ষু চিকিৎসা তো কল্পনার বিষয়। অবশেষে সরকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণ মানের নয়, আধুনিক মানের চক্ষু চিকিৎসা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। অবশ্য সেটা আপাতত পরীক্ষামূলক তথা পাইলটিং পর্যায়ে রয়েছে। চাঁদপুর জেলার দুটি উপজেলায় হচ্ছে এ পাইলটিং। উপজেলা দুটি হচ্ছে : হাজীগঞ্জ ও কচুয়া। এ ব্যাপারে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের হাজীগঞ্জ ব্যুরো ইনচার্জ কামরুজ্জামান টুটুল পরিবেশন করেছেন সচিত্র প্রতিবেদন, যাতে তিনি লিখেছেন, সরকারি স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কম্পিউটার পদ্ধতিতে পুরোপুরি নতুনভাবে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসাসেবা ও ঔষধ প্রদান কার্যক্রম চালু করেছে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অনলাইন পদ্ধতিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের একদল চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মাসে প্রায় ৫শ’ রোগী তাদের চোখের চিকিৎসা করাতে পারছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে। জেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।

জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা চক্ষু রোগীদের জন্যে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসাসেবা এক নূতন চমক। ৫ টাকার টিকিট কেটে রোগীরা সিরিয়ালে দাঁড়ালেই এই সেবা মিলে। সেবা নিতে আসা রোগীরা তাদের সমস্যা বলার পর তার নোট নেন ২ জন চক্ষু চিকিৎসক। তারা বিষয়টি নোট নিয়ে অনলাইনে যুক্ত হন এবং রোগীকে যুক্ত করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে। সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনলাইনে নিজে বা হাজীগঞ্জের সেই চক্ষু চিকিৎসকের মাধ্যমে রোগীর সকল কিছু চেকআপ করে রোগীকে যাবতীয় পরিমর্শ দেন। তারপরেই অনলাইনে ব্যবস্থাপত্র দিলে হাজীগঞ্জের সেই চক্ষু চিকিৎসক তা রোগীকে প্রিন্ট করে দিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে দেন। গত মাসে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আড়াইশ’ রোগী চোখের চিকিৎসাসেবা পেয়েছে। চলতি মাসে এই সংখ্যা ৫ শতাধিক ছাড়িয়ে যাবে। সম্প্রতি হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চক্ষু ওয়ার্ডের সামনে গেলে ক’জন রোগী জানান, আমরা এখানে এসে ডাক্তারদের চিকিৎসাসেবা ও ব্যবহারে পুরোপুরি সন্তুষ্ট। এছাড়া যা যা ঔষধ লাগবে তা এখান থেকে আমাদেরকে আজকে দিয়েছে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মাওলা জানান, আমরা চোখের জটিল রোগী পেলে তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে রেফার করি। মাত্র ৫ টাকার টিকিটে রোগীরা সর্বোচ্চ চক্ষু চিকিৎসাসেবা পেতে শুরু করেছে। চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন জানান, সরকার দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবায় যে কতোটা আন্তরিক, সেটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসাসেবা সংযোজনের প্রয়াসেই প্রমাণ মিলে। ব্যবস্থাপত্র, ঔষধ, এমনকি বিনামূল্যে চশমাও দেয়া হচ্ছে।

আমাদের দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক চিকিৎসা সুলভ হলেও চক্ষু চিকিৎসা এখনও দুর্লভই রয়ে গেছে। দেশে এখনও এমন কিছু জেলা রয়েছে, যেখানে চক্ষু চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থাই নেই। যে কারণে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক সংগঠন/বেসরকারি চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ চক্ষু চিকিৎসা/ চক্ষু শিবিরের ব্যবস্থা করে থাকে। এমন বাস্তবতায় উপজেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে চক্ষু চিকিৎসার ব্যবস্থা করা (যেমনটি হাজীগঞ্জ ও কচুয়া সহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় করা হয়েছে) নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা এই পদক্ষেপের সর্বাত্মক সফলতা কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়