রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ওদের পুঁজি সংকট নিরসন করা হোক

অনলাইন ডেস্ক
ওদের পুঁজি সংকট নিরসন করা হোক

‘পুঁজি সংকটে বন্ধ চাঁদপুরের ৯৮৩ খামার’ শিরোনামে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদটি পড়ে কম-বেশি উদ্বেগ অনুভব করেছে সচেতন মহল। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, অস্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা, পোলট্রি ও পশুখাদ্য এবং ওষুধের দাম বাড়ার কারণে সংকট দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের পোলট্রি ও দুগ্ধ খামারে। পুঁজি সংকটে বিভিন্ন সময় বন্ধ হয়ে গেছে ৯৮৩টি খামার। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন এ শিল্পের অনেক শ্রমিক। খামারিদের দাবি, অধিকাংশ খামারি লোকসান দিয়ে যাচ্ছেন। পুঁজি হারিয়ে এখন তারা খণগ্রস্ত। খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার আট উপজেলায় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, কবুতর ও কোয়েল পাখিসহ ৯ হাজার ৫১৫টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে ২৭৫টি পোলট্রি ও ৭০৮টি ডেইরিসহ ৯৮৩টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাঁদপুরে একসময় ৯১৮টি ব্রয়লার মুরগির খামার ছিল। যার ৩০ শতাংশই বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত বৈশ্বিক মন্দার কারণে পোলট্রি ও পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হওয়া খামার পুনরায় চালু করতে খামারিদের আর্থিক সহায়তা দরকার। এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে আবার চালু করা সম্ভব হবে।’

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জেলায় ৪৬৭টি পোলট্রি ও ডেইরি খামারের নিবন্ধন আছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় পোলট্রি ৪৮টি ও ডেইরি ৫৬টি, কচুয়ায় পোলট্রি ৩২টি ও ডেইরি ৬০টি, হাইমচরে পোলট্রি ১৯টি ও ডেইরি ২৫টি, মতলব উত্তর ও দক্ষিণে পোলট্রি ৫১টি ও ডেইরি ৫০টি, শাহরাস্তিতে পোলট্রি ২৫টি ও ডেইরি ১৭টি, ফরিদগঞ্জে পোলট্রি ২৭টি ও ডেইরি ২৯টি এবং হাজীগঞ্জে পোলট্রি ১৫টি ও ডেইরি ১৩টি নিবন্ধনকৃত খামার রয়েছ।

উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুর্বৃত্তায়ন, পোলট্রি খাদ্যের দাম বাড়াসহ অনুকূল পরিবেশ না থাকায় প্রতি মাসে লোকসান দিয়ে যাচ্ছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে আমি খামারটি আরো এগিয়ে নিতে পারবো। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (পুষ্টি) মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, খামারগুলোয় আমরা চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সেবা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। খামারগুলোয় সরকারিভাবে প্রণোদনা বা সাহায্য আমাদের হাত দিয়েই দেয়া হয়। বর্তমানে কোনো প্রণোদনা চালু নেই। বন্ধ হওয়া খামারের বিষয়ে জানান, পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেকের ঋণ আছে। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরেও অনেকে নিরূপায় হয়ে খামার বন্ধ করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।

সংবাদটি পড়ে আমাদের দেশের আলোকে বাস্তবতা উপলব্ধ হলো। পোল্ট্রি ও ডেইরি ফার্মের জন্যে ঋণ এনে কেউ সেটা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে না পেরে এবং নানা বিপর্যয়ে পড়ে ঋণখেলাপী হয়ে তথা ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে খামার বন্ধ করে অন্য পেশায় চলে গেছে বা যাচ্ছে। অপরদিকে কেউ কেউ পুঁজির অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বন্ধ খামার চালু করতে পারছে না। আবার শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কেউ কেউ খামার টিকিয়ে রাখার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, প্রোটিনের জোগান দিচ্ছেন। এমন সব খামারির প্রকৃত তালিকা করে তাদের পুঁজির সঙ্কট নিরসনে প্রণোদনামূলকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে, আর ব্যাংকের পক্ষ থেকে খুবই সহজ শর্তে বা নামমাত্র সুদে ঋণ দেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়