রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

বৃক্ষরোপণ : আনুষ্ঠানিকতা ও ব্যাপকতা প্রসঙ্গ
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের দেশে গত জুন থেকে শুরু হয়েছে বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়। চলতি আগস্টেই সেটা শেষ হয়ে যাবে। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে প্রতিবছর এই তিন মাস প্রকৃতিতে সজীবতা বিরাজ করে বলেই এ সময়টাকে বৃক্ষরোপণের যথার্থ মৌসুম হিসেবে মনে করা হয়। তবে জুনে বৃষ্টিপাত কম হলে বৃক্ষরোপণের মৌসুম শুরুতে বিলম্ব ঘটে এবং সেটি সেপ্টেম্বর তো বটেই, অক্টোবর পর্যন্তও চলে। বৃক্ষরোপণে সাফল্য আসে বলেই জুন থেকে কার্যত পাঁচ মাস চলে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা এবং ব্যাপকতাও। এ বছর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে বেশি অনুভূত হলেও এই প্রভাব থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হিসেবে এই বছর বৃক্ষরোপণের আনুষ্ঠানিকতা দেখা গেলেও ব্যাপকতা দেখা যাচ্ছে না।

চাঁদপুর কণ্ঠের আগস্ট মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত প্রকাশিত সংখ্যাগুলো পর্যবেক্ষণ করে বৃক্ষরোপণের ১০টি আনুষ্ঠানিকতার সংবাদ দেখা গেছে, যেটি প্রমাণ করে না ব্যাপকতা। সেজন্যে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। শাসকদলের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়া এবং লাগাতার চতুর্থবারের মতো আসার পরিকল্পনার ব্যস্ততায় পরিবেশের স্বার্থে তারা দলীয়ভাবে বৃক্ষরোপণসহ কিছু করার তাগিদে আছে বলে মনে হচ্ছে না। আর দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলগুলো তো মুখিয়ে আছে ক্ষমতায় আসীন হবার চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্যে, যাদের কাছে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচির মতো বিষয় এই সময়ে কেমন বিরেচিত হতে পারে সেটি আন্দাজ করা যায়, তবে মুখ ফুটে বলা যায় না।

ডেমোক্রেচি ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি সংগঠন গত ক’বছর ধরে কমন বা সাধারণ ইস্যুতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্যে ফেলোশিপ বা সৌহার্দ্য বৃদ্ধিমূলক মাল্টিপার্টি কার্যক্রম চালালেও সেটি এখনও চার দেয়াল ও মিডিয়ার মধ্যেই আছে। তবুও ভাল্লাগে, যখন ক্ষমতার প্রশ্নে চরম বৈরি মনোভাবাপন্ন মানুষ এক টেবিলে বসে মতবিনিময় ও যৌথ বিবৃতি প্রদান করতে দেখা যায়। আমরা আশাবাদী, একদিন সব নেতা বিরাট পরিসরে এক জায়গায় বসে বলবেন, “আমাদের পরস্পরবিরোধী কর্মসূচি যা-ই থাকুক না কেনো, আমরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে অমুক ইস্যুতে ঐকমত্য গড়েছি। প্রিয় দেশবাসী! আসুন, আমরা এই ইস্যুতে কাজ শুরু করে দেশের স্বার্থ রক্ষা করি এবং একই সাথে পরবর্তী শাসক নির্বাচনে বিবেক সম্মত ভূমিকা রাখি।”

আমাদের হার্দিক প্রত্যাশা, আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক নেতা একত্রে একদিন বসে যে কমন ইস্যুকে সবার আগে স্থান দিবে, সেটি হচ্ছে বৃক্ষরোপণ। তারা বলবেন, “শিল্পায়ন, অপরিকল্পিত নগরায়নসহ নানা কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কুপ্রভাবে আমরা পর্যুদস্ত। আসুন, সকল আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি আমরা সেই কুপ্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষায় গাছ লাগাই ও পরিচর্যা করি।” বর্তমানে এমন দৃশ্য কল্পনা মনে হলেও দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে এবং অস্তিত্ব বিপন্ন হলে একদিন বাস্তবতায় পর্যবসিত হতে পারে। এর পেছনে ডেমোক্রেচি ইন্টারন্যাশনালের কমন ইস্যুতে ঐকমত্য সৃষ্টির চলমান প্রয়াস কিংবা অন্য কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আমরা যেমন স্বপ্ন দেখি, আবার বিশ্বাসও করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়