রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৩, ০০:০০

উদ্যোগটি মহৎ ও সময়োপযোগী

উদ্যোগটি মহৎ ও সময়োপযোগী
অনলাইন ডেস্ক

সংগঠনবোদ্ধাদের মাঝে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, সমবয়সী, সহপাঠী ও একই পেশার লোকজনদের নিয়ে গঠিত সংগঠন সাধারণত টেকসই হয় না। এর পেছনে মান্যগণ্যতার প্রশ্ন ও ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একই বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তথা ইয়ারমেটদের সংগঠন টেকসই হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলছে। যেমন : ’৮৬ ব্যাচ, ’৮৮ ব্যাচ, ’৯০ ব্যাচ, ’৯২ ব্যাচ, ২০০০ ব্যাচ ইত্যাদি। এসব ব্যাচের সংগঠনগুলোর বিভিন্ন নাম হলেও ডাকনাম সেই ব্যাচকেন্দ্রিকই। নাম যা-ই হোক, কাম কিন্তু তারা ভালোই করে চলছে। এরা পুনর্মিলনী, আনন্দভ্রমণ সহ বিভিন্ন ধরনের কল্যাণমূলক কাজও করে চলছে। গত শনিবার চাঁদপুরে সম্পাদিত হয়েছে এমন একটি কল্যাণমূলক কাজ। ‘অসহায় আটাশিয়ান পরিবারের পাশে বাংলাদেশ ৮৮ চাঁদপুর জেলা প্যানেল’ শিরোনামে চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, এক অসহায় হতদরিদ্র আটাশিয়ান পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ '৮৮ চাঁদপুর জেলা প্যানেল। এই প্যানেলের সদস্য কচুয়ার আমিনুল হক মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী-সন্তান অসহায় হয়ে পড়েন। এই পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ’৮৮ কেন্দ্রীয় প্যানেল এবং চাঁদপুর জেলা প্যানেল। মৃত আমিনুলের স্ত্রীকে একটি সেলাই মেশিনসহ আরো কিছু উপকরণ দেয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে চাঁদপুর জেলা প্যানেলের নেতৃবৃন্দ আমিনুলের স্ত্রীর হাতে এসব তুলে দেন।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৯৮৮ সালে পাস করা শিক্ষার্থীদের বন্ধু সংগঠন বাংলাদেশ ’৮৮। এই বন্ধু সংগঠনটি শুধু নিজেদের মধ্যে হাসি-আনন্দ, আন্তঃসম্পর্কের উন্নয়ন বা বন্ধুত্বের মেলবন্ধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে না, অসহায়, অসুস্থ বন্ধুদের পাশেও দাঁড়ায়। সংগঠনের চ্যারিটি ফোরামের উদ্যোগে এই কার্যক্রমটি হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় কচুয়ার আটাশিয়ান বন্ধু মরহুম আমিনুল হকের পরিবারের পাশে যৌথভাবে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ৮৮ কেন্দ্রীয় এবং চাঁদপুর জেলা প্যানেল। যৌথ উদ্যোগে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে মরহুম আমিনুল হকের স্ত্রীকে একটি সেলাই মেশিন, একটি গাভী গরুর বাছুর এবং হাঁস মুরগির জন্যে নগদ টাকা দেয়া হয়। শনিবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে আমিনুলের স্ত্রী রাজিয়া বেগমের হাতে এসব উপকরণ তুলে দেন বাংলাদেশ ’৮৮ চাঁদপুর জেলা প্যানেলের উপদেষ্টা হাজী মোশাররফ হোসেন, কো-অর্ডিনেটর এএইচএম আহসান উল্লাহ, সিনিয়র সহকারী কো-অর্ডিনেটর এসএম মুজিবুল হক রাসেল, সহকারী কো-অর্ডিনেটর খলিলুর রহমান পোকন, নার্গিস স্বপ্না, মুক্তা রহমান, লিপি আহমেদ ও ইয়াসমিন পারুসহ আরো ক'জন বন্ধু। প্রয়াত বন্ধু আমিনুলের স্ত্রী রাজিয়া বেগম তার স্বামীর বন্ধুদের কাছ থেকে এমন সহযোগিতা পেয়ে খুবই আনন্দ এবং সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তার স্বামীর বন্ধুরা এভাবে এগিয়ে আসায় মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে তিনি শোকরিয়া আদায় করেন এবং স্বামীর বন্ধুদের জন্যে প্রাণ খুলে দোয়া করেন।

আমাদের দেশে সরকারি-আধা সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ কিছু সুপ্রতিষ্ঠিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকুরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে এমন একটা অংকের টাকা পায়, যেটা দিয়ে তার শোকাহত পরিবার মোটামুটি জীবনের পথচলাকে স্বাভাবিক রাখতে পারে। এছাড়া প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীসহ সঞ্চয়ী মানসিকতার যে কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারের সদস্যরা ব্যক্তির অভাববোধ ছাড়া অর্থাভাবে ভোগে না। এর বাইরে যারা বিভিন্ন ছোটখাট চাকুরি, ছোটখাট ব্যবসাসহ দৈনিক পারিশ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকে, তাদের মৃত্যু হলে তাদের পরিবার যেন অনিশ্চয়তার অন্ধকারে নিপতিত হয়। কচুয়ার '৮৮ ব্যাচের আমিনুল হক নিশ্চয় এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন, যিনি পরিবারের জন্যে তেমন কিছু রেখে যেতে পারেন নি। এ বিষয়টি তার শিক্ষা জীবনের স্থানীয় সহপাঠীসহ সারাদেশের ইয়ারমেটরা জানতে পেরে তার পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়ে সামর্থ্যানুযায়ী যা করেছে, সেটি সরলার্থে অনেক বড়ো মহৎ কাজ এবং অন্য ব্যাচের জন্যে অনুকরণীয়। বন্ধু, সহপাঠী ও ইয়ারমেটরা যদি সম্মিলিতভাবে কোনো কল্যাণকর কাজের উদ্যোগ নেয়, তাহলে সেটি কারো জন্যে বেঁচে থাকার স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ কিংবা আশা জাগানিয়া অবলম্বন হতে পারে। আমরা '৮৮ ব্যাচসহ যে কোনো ব্যাচের মাধ্যমে ইতঃমধ্যে সম্পাদিত ও ভবিষ্যতে সম্পাদনযোগ্য কল্যাণকর সকল কাজের জন্যে নিরন্তর সাধুবাদ জানাতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়