প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২২, ০০:০০
মঙ্গলবার দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত একটি সংবাদ বহু পাঠকের নজর কেড়েছে এবং সংবেদনশীল মানুষ মাত্রকেই বিক্ষুব্ধ করেছে। সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে, ‘স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নৈশ প্রহরী সুমন খান হত্যা : প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা’। এ সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর শহরের ৫নং ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নৈশ প্রহরী সুমন খানকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনার পর প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি পুলিশ। এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে একজন আটক হলেও অন্য ৭ জন আসামীর একজনও আটক হয়নি। ১নং আসামী হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসে অন্যান্য আসামীসহ এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ এদেরকে আটক করছে না। পুলিশের চোখে এরা নাকি পলাতক, যারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ এবং সুমনের স্ত্রী-পুত্রসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
জানা যায়, স্থানীয় কতিপয় যুবকের সাথে সুমন খানের টাকা লেনদেন নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এতে ওই সকল যুবক ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সুমন খানকে বেধড়ক পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ এপ্রিল সকাল ৭টায় তার মৃত্যু ঘটে। এতে ওইদিন তার বড় ভাই আব্দুর রব খান বাদী হয়ে ৮ জনকে নামীয় আসামী এবং ক’জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তিন মাস পর ৩নং আসামী তামিম গাজীকে পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আর ১নং আসামী নাজমুল গাজী হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে নি¤œ আদালতে আর হাজির হয় নি। সেজন্যে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ারা জারি করে। মামলাটি ঘটনার ক’মাস পর চাঁদপুর মডেল থানা থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ স্থানান্তর হয়েছে। কিন্তু তদন্তে আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি বলে এলাকাবাসীর ধারণা। যদিও পিবিআই বলছে, অপেক্ষা করুন, আশা করছি ভালো ফলাফল পাবেন।
সুমন খানের হত্যায় এলাকার নিরীহ সাধারণ মানুষ স্তম্ভিত ও বিক্ষুব্ধ। মামলায় অগ্রগতি না দেখে এলাকাবাসী সুমন খানের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং পাঁচজন আসামীর ছবি দিয়ে পোস্টার সাঁটিয়েছে, লিফলেট বিতরণ করেছে ও মানববন্ধন করেছে। রঘুনাথপুর গ্রামের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী, ভাষা সৈনিক হাজী এ করিম খান (বর্তমানে মরহুম) নিজ গ্রামে উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ বহুবিধ সামাজিক কাজ করে গেছেন। তাঁর বাড়ির মরহুম মোঃ আব্দুল কাদির খানের পুত্র হচ্ছেন নির্মম হত্যাকা-ের শিকার মোঃ সুমন খান। এতো বড় বিখ্যাত ব্যক্তির আত্মীয় হয়েও সুমন খানের হত্যাকা-ের পর তদন্তে ধীরগতি এবং আসামী ধরার ক্ষেত্রে পুলিশের গড়িমসিকে এলাকাবাসী দুঃখজনক বিষয় বলে মনে করছেন। আমরা দ্রুত আসামী ধরা ও তদন্তে গতিশীলতার প্রয়োজনে পুলিশের সক্রিয়তা প্রত্যাশা করছি। সেজন্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছি।